
তবে মনজুরুলের মতো উদ্যমী তরুণ একটিমাত্র ক্যাফে করে থেমে যাবেন, এটি তো হয় না। দেশের অন্য অনেক শহরের মতো একসময় চট্টগ্রামের স্ট্রিট ফুড কালচারও ছিল সমৃদ্ধ। কিন্তু নজর না থাকায় সেগুলোর মান ক্রমাগত নিম্নমুখী হয়ে যায়। মনজুরুল ভাবলেন, স্ট্রিট ফুডই করবেন, কিন্তু স্বাস্থ্যকরভাবে, পরিচ্ছন্নভাবে। চীন থেকে কারিগর নিয়ে এসে বানালেন ফুচকা বানানোর যন্ত্র। ব্যস, হাতের ছোঁয়া থেকে মুক্তি। ২০১৫ সালে শুরু করেন বারগুইচ ফিউশন ক্যাফে। চটপটি, ফুচকাসহ নানান স্বাস্থ্যকর এবং সাশ্রয়ী নানান ধরনের স্ট্রিট ফুডের সমাহার ঘটান খোলামেলা পরিবেশের ক্যাফেতে। খুব দ্রুতই ছুটির দিনগুলোতে চট্টগ্রামের অনেকেরই সন্ধ্যাকালীন গন্তব্য হয়ে ওঠে এই ক্যাফে; যা চট্টগ্রামের তরুণ প্রজন্মের প্রিয় আড্ডাস্থলও হয়ে উঠতে সময় নেয়নি।
তবে দুটি বিশেষ উদ্ভাবনের জন্য মনজুরুলকে মনে রাখতে হবে আমাদের। চট্টগ্রামের ঐতিহ্য মেজবানির খাবার নিয়ে সারা দেশে প্রচুর আগ্রহ। চট্টগ্রামের অনেক মেহমান মেজবানি খেতে আগ্রহ প্রকাশ করলেই বিপদে পড়েন। কারণ, বিশেষ বিশেষ অনুষ্ঠান ছাড়া মেজবানি কোথায় পাবেন? মেজবানি অনুষ্ঠানে তো রবাহূত নিয়ে যাওয়া যায় না। কাজেই ২০১৬ সালে চালু হয়ে গেল ‘মেজ্জান হাইলে আইয়্যুন (মেজবান খেতে আসুন) ’। দুপুরে-রাতে যেকোনো সময় চাইলেই মেজবান খেতে পারবেন।
মনজুরুলের এরপরের কাজটি আরও চমকপ্রদ। অনেকেরই মাঝেমধ্যে বিয়েবাড়ির মজার খাবার খেতে ইচ্ছে করে, কিন্তু বিয়ের কোনো দাওয়াত না থাকলে সেটা সম্ভব হয় না। চট্টগ্রাম অঞ্চলের গতানুগতিক ধাঁচের গ্রামের বাড়ির আদলে মনজুরুল হক বিয়েবাড়ির খাবার মেনু নিয়ে ২০১৭ সালে চালু করলেন ‘বীর চট্টলা’। এ পর্যন্ত ঢাকার বনানীসহ বারকোড নামে রয়েছে ১২টি রেস্তোরাঁ। মাসখানেকের মধ্যে চট্টগ্রাম সেনানিবাসে বারকোড গ্রুপের নতুন আরও একটি রেস্তোরাঁ হবে বলে জানালেন মনজুরুল হক। তাঁর সাফল্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে চট্টগ্রামের তরুণেরা কয়েক বছরে সাত শতাধিক আধুনিক রেস্তোরাঁ গড়ে তুলেছেন। তরুণ উদ্যোক্তাদের প্ল্যাটফর্ম ‘চাকরি খুঁজব না, চাকরি দেব’ তাঁকে সম্মানিত করেছে ইউসুফ চৌধুরী সম্মাননা ২০১৭-এ। সূত্র: প্রথম আলো
No comments:
Post a Comment