Sunday, October 27, 2019

নিয়ন্ত্রণহীন পিয়াজের বাজার দেখবে কে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার: নিয়ন্ত্রণহীন দেশের পিয়াজের বাজার। এই মহুর্তে আন্তর্জাতিক বাজারেও পিয়াজের দাম বেশ কম। আবার যেসব পিয়াজ দেশে আমদানি হচ্ছে সেগুলোর আমদানিমূল্যও কম। ভারত সরকারের পক্ষ থেকে শিগগিরই রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হবে বলে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। কিন্তু দেশের বাজারে পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামেই। প্রায় এক মাস ধরে পিয়াজের দাম ১০০ টাকায় ঘোরাফেরা করছে। আর মাঝখানে সরবরাহের ঘাটতিকে অজুহাত হিসেবে অপব্যবহার করছেন সুযোগসন্ধানী কিছু ব্যবসায়ী। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারের ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

এদিকে বাজারে কার্যকর নজরদারি নেই। খোলাবাজারে পিয়াজ বিক্রি করেও দাম কমাতে পারছে না সরকারি সংস্থা টিসিবি। অবশ্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দাবি, পিয়াজের বাড়তি দাম ঠেকাতে বেশ কিছু অভিযান পরিচালনা করেছে। অন্তত দুই হাজার বিক্রেতাকে শাস্তি দিয়েছে তারা। কিন্তু এর পরও মিলছে না সুফল। অতিরিক্ত দামে পিয়াজ কিনতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে ভোক্তাসাধারণ।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, ভারত রপ্তানি বন্ধ করার পর পিয়াজের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। এরপর সরকারের তৎপরতায় মিয়ানমার থেকে পিয়াজ আমদানি করা হচ্ছে। এতে বাজারে সরবরাহ বেড়েছে। এ পরিস্থিতিতে নতুন করে দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। তা হলে বোঝা যাচ্ছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীই ইচ্ছা করে দাম বাড়াচ্ছেন। সরকারকে সেই জায়গায় নজরদারি করতে হবে। তারা মনে করেন, আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের কারসাজির কারণে বাজারে এমন অযৌক্তিক মূল্য অব্যাহত রয়েছে।

বাজারে দেখা গেছে, ভারত রপ্তানি বন্ধ করলেও মিয়ানমার ও মিসর থেকে আসছে পিয়াজ। এরপরও দাম কমছে না। উল্টো দফায় দফায় বাড়ছে। বৃষ্টির অজুহাতে শুক্র ও শনিবার দুই দফায় পিয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ৩০ টাকা পর্যন্ত। গতকাল পাইকারি বাজারে দেশী পিয়াজের প্রতিকেজি ১১০ থেকে ১২০ টাকা বিক্রি হতে দেখা গেছে। খুচরা বিক্রেতাদের অভিযোগ, শ্যামবাজারের পাইকারি ব্যবসায়ীদের কারসাজির কারণে পিয়াজের দাম বাড়ছে।

এদিকে গতকাল চট্টগ্রামে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, আমি আশাবাদী এক সপ্তাহের মধ্যে মিশরের পিয়াজ চলে আসবে। যদি আসে তা হলে হয়তো আমরা ৮০ টাকার মধ্যে পিয়াজ সরবরাহ করতে পারবো। তবে কষ্টটা বোধ হয় আমাদের আরো একটা মাস করতে হবে। কারণ আমাদের নিজেদের (পর্যাপ্ত পিয়াজ মজুদ) নেই।

রাজধানীর কাওরান বাজারসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কেজিপ্রতি পিয়াজের জন্য গুনতে হচ্ছে ১২০ টাকা পর্যন্ত, যা এক দিন আগেও ছিল ১১০ টাকা। অর্থাৎ এক দিনের ব্যবধানে কেজিতে পিয়াজের দাম বেড়েছে ১০ টাকা। দেশী বা আমদানি সব ধরনের পিয়াজের দামেই ঊর্ধ্বগতি। গত এক মাসের মধ্যে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার ১২০ টাকায় উঠল পিয়াজের দাম।

ঢাকার বড় পাইকারি বাজার শ্যামবাজারে মিসর থেকে আসা পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০-৯৫ টাকা, যা শুক্রবার ছিল ৮০-৯০ টাকার মধ্যে। শুক্রবারের আগে ছিল ৬০-৭০ টাকা কেজি। মিসরের পিয়াজের পাশাপাশি বেড়েছে দেশি ও ভারতীয় পিয়াজের দাম। দেশি পিয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১৫-১২০ টাকা, যা শুক্রবার ছিল ১০০-১১০ টাকা। শুক্রবারের আগে ছিল ৭৫-৮০ টাকা। শুক্রবারের আগে ৬০-৬৫ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া ভারতীয় পিয়াজের দাম বেড়ে হয়েছে ৮০-৮৫ টাকা।

পিয়াজের আমদানিকারক ও শ্যামবাজার পিয়াজ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজি মো. মাজেদ বলেন, আমরা যত কথাই বলি, ভারতের পিয়াজ আমদানি শুরু না হলে দাম কমবে না। কারণ আমরা অন্যান্য দেশ থেকে পর্যাপ্ত পিয়াজ পাচ্ছি না। আবার আমদানিও করতে হচ্ছে চড়া দামে।

তবে  আরেক আমদানিকারক বলেন, বাজারে কিছু সমস্যা হচ্ছে। যেমন, মিসরের পিয়াজ আমদানিকারকরা ৮০-৮২ টাকার মধ্যে বিক্রি করছেন। সেটা খুচরা বাজারে ৯০ টাকা থাকার কথা। তবে এ পিয়াজও ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মিয়ানমারের পিয়াজ ৯০-৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে আড়তে। সেটা খুচরায় ১০০-১০৫ টাকার বেশি হওয়ার কথা নয়। কিন্তু এটিও ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অস্থিরতার বাজারে এ সুবিধা বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা নিচ্ছেন বলে মনে করেন তিনি। তার মতে, আগে দিনে ভারত থেকে সাড়ে ছয় হাজার টন পিয়াজ আসত। এখন সেখানে মিয়ানমার থেকে দিনে ২৫০-৩০০ টন পিয়াজ আসছে। অন্যান্য দেশ থেকে আরো কিছু পিয়াজ আসছে। তবে সেটা পর্যাপ্ত নয়।

রাজধানীর কাওরান বাজারের পাইকারি আড়ত ঘুরে দেখা গেছে, দেশি, ভারতীয়, মিসর ও মিয়ানমার থেকে আমদানি করা পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে। মেসার্স মাতৃভা-ার ৫৬ নম্বর আড়তের মূল্যতালিকায় দেখা গেল, দেশি পিয়াজ ১১৫ থেকে ১২০ টাকা, ভারতীয় পিয়াজ ১১৫ টাকা, মিসরের পিয়াজ ৯০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

পিয়াজের দাম কেন কমছে না জানতে চাইলে আড়তের বিক্রেতা লোকমান হোসেন বলেন, পিয়াজ আমদানি কমে গেছে। দেশি পিয়াজের মজুদও কম। সব মিলিয়ে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম। যে কারণে দাম বাড়তি। আরেক আড়তদার বলেন, বাজারে যারা প্রভাব বিস্তার করছেন, তারা অনেক বড় ব্যবসায়ী। তাদের ধরা উচিত।

এদিকে খুচরা বাজারে দেখা গেছে, প্রতি কেজি দেশি পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১৫-১২৫ টাকায়। শুক্রবারও এই দামেই বিক্রি হয় দেশি পিয়াজ। তবে একদিনের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে আমদানি করা পিয়াজ। ভালো মানের আমদানি করা পিয়াজ কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০-১০০ টাকা, যা শুক্রবার ছিল ৮০-৯০ টাকা।

বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত কয়েক দিনে মিয়ানমার থেকে যে পিয়াজ আমদানি হচ্ছে, সেগুলোর দাম পড়ছে প্রতি কেজি ৪২ টাকা। একই পিয়াজ খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকায়। এর আগে ভারতীয় পিয়াজ আমদানি হয়েছে ৭২ টাকা কেজি দরে। বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। মিসরের পিয়াজ আমদানি হয়েছে ২৫ টাকা কেজি দরে, বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়।

আমদানি তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত ২৯শে সেপ্টেম্বর ভারত সরকার কর্তৃক পিয়াজ রপ্তানি নিষিদ্ধ করা হলেও ৩০শে সেপ্টেম্বর থেকে ১৯শে অক্টোবর পর্যন্ত ২০ দিনে ভারত থেকে আমদানি হয়েছে ৮ হাজার ৫৬৮ টন পিয়াজ। এ সময়ে মিয়ানমার থেকে ১২ হাজার ৮৪৯ টন, মিসর থেকে ৫৬২ টন এবং চীন থেকে ৫২ টন পিয়াজ আমদানি করা হয়। সব মিলিয়ে ২০ দিনে পিয়াজ আমদানি হয়েছে ২২ হাজার টন।

মগবাজার মধুবাগ কাঁচাবাজারে দেখা গেছে, ওই বাজারে ৮ থেকে ১০ জন বিক্রেতা। তাদের মধ্যে ৫ জনের কাছে পিয়াজ আছে। আর বাকিদের কাছে পিয়াজ নাই। তাদের একজন জানালেন, 'দাম বেশি, গ্রাহকরা ঝামেলঅ করে, তাই বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছি। পিয়াজ বিক্রেতা সুমন মিয়া বলেন, পাইকারি বাজারে পিয়াজের অভাব নাই। দামটা বেশি, এটাই সমস্যা।

বিক্রেতাদের দাবি, পাইকারি বাজার থেকে চাহিদা অনুযায়ী পিয়াজ পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে অনেকেই পিয়াজ বিক্রি বন্ধ রেখেছেন। তারা বলেন, বৃষ্টির কারণে পিয়াজের দাম বেড়ে গেছে। বৃহস্পতিবার শ্যামবাজার থেকে যে পিয়াজ ৮০ টাকা কেজি কিনেছি, এখন তা ১২০ টাকা। সামনে হয়তো আরো বাড়তে পারে। কিন্তু কিছুদিন পরই বাজারে নতুন পিয়াজ আসবে, এ পরিস্থিতিতে পিয়াজের দাম বাড়ার যুক্তিসঙ্গত কোনো কারণ নেই। মূলত শ্যামবাজারের ব্যবসায়ীদের কারণেই দাম বাড়ছে। শ্যামবাজারে অভিযান চালিয়ে ব্যবস্থা নিলেই দেখবেন দাম কমে গেছে।

টেকনাফ স্থলবন্দর সূত্রে জানা গেছে, গেল ২৬ দিনে মিয়ানমার থেকে প্রায় সাড়ে ১৭ হাজার টন পিয়াজ আমদানি হয়েছে। আমদানির এ হার আগের চেয়ে বাড়ছে।

গ্রাহকরা জানান, ব্যবাসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়াচ্ছে। দাম যখন বেড়ে যায় তখনই সব দোকানদার একসঙ্গে বাড়ায়। এটা সম্ভব তখনই, যখন বিক্রেতারা একজোট থাকে।

কাওরানবাজারে আসা মতিন বলেন, বাজারে সরকারের নজরদারি নেই বললেই চলে। নজরদারি হলে অন্তত দিনে দিনে দাম বাড়তে পারে না।

এদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) খোলাবাজারে ৪৫ টাকা কেজি দরে পিয়াজ বিক্রি করছে। কিন্তু তাতেও বাজারে কোনো প্রভাব পড়ছে না। প্রতিষ্ঠানটি এখন ঢাকার ৩৫টি স্থানে ট্রাকে করে পিয়াজ বিক্রি করছে। প্রতিটি ট্রাকে প্রতিদিন ১ হাজার কেজি করে পিয়াজ বিক্রির জন্য দেয়া হচ্ছে বলে জানান টিসিবির তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির।

গতকাল চট্টগ্রামের আউটার স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড এক্সপোর্ট ফেয়ারের (বিআইটিএফ) উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সী বলেছেন, এবার আমাদের শিক্ষা হয়েছে। কৃষিমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। উনি বলেছেন খুব চেষ্টা করবেন পিয়াজ উৎপাদন বাড়াতে। আমাদের যেন আর বাইরের ওপর নির্ভর করতে না হয়। এবার হয়তো কষ্ট হবে। আশাকরি, আগামী বছর অবস্থার উন্নতি হবে। পিয়াজে ভারতনির্ভরতা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, আমরা ভারতের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে চাই তা না, আমরা নিজেরাই স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে চাই। আমাদের সব চেষ্টা হলো আগামীতে যেন নিজেরাই এসব জিনিস উৎপাদন করতে পারি।

বাজার মনিটরিং প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, মজুদকারীদের বিরুদ্ধে শক্ত ব্যবস্থা নিচ্ছি। সমস্যাটা হচ্ছে হঠাৎ করে চাপ দিলে তারা বিগড়ে গেলে মানুষের কষ্ট আরো বাড়বে। এদিকে চাপের কারণে কিছু পিয়াজ পচেও গেছে। আমরা বাজার মনিটরিং করতে যাই। কিন্তু কাউকে জেলখানায় নিয়ে ভরবো সেই রকম মানসিকতা নেই। আমরা তাদের প্রোঅ্যাকটিভ করতে চাই, বোঝাতে চাই। তাতে কিছু কাজ হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, সমস্যাটা আরো এক মাস থাকবে। মিশরের পিয়াজ ঢুকলে দাম কমে আসবে।

উল্লেখ্য, পিয়াজের বাজারের এ অস্থিরতার শুরু হয়েছিল ২৯শে সেপ্টেম্বর ভারতের পিয়াজ রপ্তানি বন্ধের ঘোষণার মধ্য দিয়ে। সে সময় পিয়াজের দাম কেজি ১৩০ টাকায় উঠেছিল। কিন্তু এটি আবার কমে ৭০-৯০ টাকার মধ্যে আসে। কিন্তু তা খুব বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। দ্রুতই আবার ১০০ টাকা, পরের ধাপে ১১০ টাকা এবং সব শেষে গতকাল ১২০ টাকায় উঠে আসে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি দেশ থেকে আমদানি করা হলেও দাম বাড়ার নেরাজ্য আর ঠেকানো যাচ্ছে না।

দেশে ছাগল কমেছে, বেড়েছে গরু

অর্থনৈতিক রিপোর্টার: দেশে এখন ছাগলের সংখ্যা ১ কোটি ৯২ লাখ ৮৭ হাজার ৪১৩। আর গরু আছে ২ কোটি ৮৪ লাখ ৮৭ হাজার ৪১৫টি। এসব গরু ছাগলসহ গবাদিপশু ব্যক্তি ও খামারি পর্যায়ে লালনপালন করা হয়।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) কৃষি শুমারি ২০১৯ এর প্রাথমিক ফলাফলে এই চিত্র উঠে এসেছে। ওই শুমারিতে অবশ্য ভেড়া, মহিষ, হাঁস, মুরগি, টার্কির সংখ্যাও পাওয়া গেছে। রোববার এক অনুষ্ঠানে শুমারির প্রাথমিক ফলাফল প্রকাশ করেছে বিবিএস।

অবশ্য ২০১৮ সালে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর প্রকাশিত হিসেব অনুযায়ী দেশে ছাগল ২ কোটি ৫৯ লাখ। আর গরুর সংখ্যা ২ কোটি ৩৯ লাখ। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসেব ও বিবিএসের শুমারির তথ্য অনুযায়ী দেশে ছাগলের সংখ্যা কমেছে ৬৬ লাখ। অন্যদিকে গরুর সংখ্যা বেড়েছে ৪৬ লাখ। এবারের কৃষি শুমারিতে অন্য গবাদিপশুর হিসাবও এসেছে। সারা দেশে এখন মহিষ আছে ৭ লাখ ১৮ হাজার ৪১১টি। ভেড়ার সংখ্যা ৮ লাখ ৯২ হাজার ৬২৮। এ বছরের কৃষি শুমারির তথ্য অনুসারে ২০১৯ সালে এসে দেশে মুরগি ১৮ কোটি ৯২ লাখ ৬২ হাজার ৯০১টি মুরগি, ৬ কোটি ৭৫ লাখ ২৯ হাজার ২১০টি হাস ও ১৪ লাখ ৪৫ হাজার ৪২০টি টার্কি আছে।

শুমারির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে মোট পরিবারের (খানা) সংখ্যা ৩ কোটি ৫৫ লাখ ৩৩ হাজার ১৮০টি। দেশে গরুর সংখ্যা ২ কোটি ৮৪ লাখ ৮৭ হাজার ৪১৫টি। হাঁসের সংখ্যা ৬ কোটি ৭৫ লাখ ২৯ হাজার ২১০টি এবং মুরগী রয়েছে ১৮ কোটি ৯২ লাখ ৬২ হাজার ৯১০টি।

শুমারিতে মাছ চাষ করে নির্ভরশীল হয়েছেন, ৯ লাখ ৯৫ হাজার ১৩৫টি, কৃষি মজুরি করে এমন পরিবারের সংখ্যা ৯০ লাখ ৯৫ হাজার ৯৭৭টি, নিজস্ব জমি নেই এমন পরিবার রয়েছে ৪০ লাখ ২৪ হাজার ১৮৯টি এবং অন্যের কাছ থেকে জমি নিয়েছে এমন পরিবার ৬৭ লাখ ৬৩ হাজার ৪৮৭টি। দেশে টার্কি রয়েছে ১৪ লাখ ৪৫ হাজার ৪২০টি, মহিষ ৭ লাখ ১৮ হাজার ৪১১টি, ছাগল ১ কোটি ৯২ লাখ ৮৭ হাজার ৪১৩টি এবং ভেড়া রয়েছে ৮ লাখ ৯২ হাজার ৬২৮টি।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, নিজের জমি নেই এমন পরিবার সবেচেয়ে বেশি রয়েছে ঢাকা বিভাগে। এ বিভাগে প্রতি হাজারে ৬৪৮টি পরিবারের নিজস্ব জমি নেই। রাজশাহী বিভাগে প্রতি হাজারে ২৪১টি পরিবারের নিজস্ব জমি নেই। এছাড়া রংপুর বিভাগে প্রতি হাজারে ৩১৭টি, চট্টগ্রাম বিভাগের ২৭৫টি, খুলনা বিভাগে ২৬৯টি, মংমনসিংহ বিভাগে ১৬৯টি, সিলেটে বিভাগে ২২১টি এবং বরিশাল বিভাগে প্রতি হাজারে ৯২টি পরিবারের নিজস্ব জমি নেই। তবে প্রকল্প পরিচালক জাফর আহমেদ জানান, নিজস্ব জমি নেই মানে ভূমিহীন নয়। অনেক সময় নিজের নামে জমি না থাকলেও তার বাবা বা দাদার নামে থাকতে পারে।

অনুষ্ঠানে শুমারির তথ্যের সঙ্গে দ্বিমত জানিয়ে মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ সচিব রইছুল আলম মন্ডল বলেন, এসডিজি বাস্তবায়নে বিশুদ্ধ ডাটা দরকার। বেইজ লাইন না থাকলে সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম সঠিক হয়না। শুমারিতে ডিম, দুধ, ইলিশ এবং মিঠা পানির মাছের তথ্য থাকা উচিত ছিল।

এ বিষয়ে কৃষি সচিব নাসিরুজ্জামান বলেন,বিবিএসের তথ্যের সাথে কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্যের কোনো মিল নেই। বিভাজনে হাইব্রীড ধানের কোনো হিসাব নেই। কৃষি মন্ত্রণালয় বলছে, ছাদ বাগান এখন অনেক জনপ্রিয় একে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। ভাসমান কৃষিকে যুক্ত করা হয়নি। মাসকলাই ও ছোলার ডালের তথ্য বাদ দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে পরিসংখ্যানের সাথে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বয় করা উচিত। তাহলে এত বেশি ব্যবধান আর থাকবেনা।

পরে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, এতবড় মহাযজ্ঞ বোধহয় নিখুঁত হওয়ার বিষয় নয়। সংশোধন করার বিষয় রয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে আরও নিবিড়ভাবে সবাই কাজ করবে বলে আমি কথা দিচ্ছি। বিবিএসকে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা হবে। দেশের সকল পরিকল্পনায় ভিত্তি হবে পরিসংখ্যান। বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ আগে নাক সিটকালেও এখন আমাদের তথ্য ব্যবহার করছে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, মাঠ পর্যায়ে মূল শুমারির তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম ২০১৯ সালের ৯ জুন থেকে ২০ সালের জুন পর্যন্ত সংগ্রহ করা হবে।

অনুষ্ঠানে আরো ছিলেন, মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ সম্পদ সচিব রইছউল আলম, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব সৌরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো; নাসিরুজ্জামান, বিবিএসের মহাপরিচালক মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, ও প্রকল্প পরিচালক জাফর আহমেদ খান।

Saturday, October 26, 2019

প্রিমিয়ার ব্যাংকের ২০ বছর উদযাপন


অর্থনৈতিক রিপোর্টার: জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সমৃদ্ধি এবং সাফল্যের ২০ বছর উদযাপন করেছে দি প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেড।

গতকাল রাজধানীর বনানীতে ইকবাল সেন্টারে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. এইচ বি এম ইকবাল। এ সময় ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান মঈন ইকবাল, পরিচালনা পর্ষদের সদস্য আব্দুস সংসদ সদস্য সালাম মুর্শেদী, মোহাম্মদ ইমরান ইকবাল, জামাল জি আহমেদ, উপদেষ্টা মুহাম্মদ আলী, ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম রিয়াজুল করিমসহ ব্যাংকের অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, সমৃদ্ধিময় ২০ বছরের এই পথচলায় প্রিমিয়ার ব্যাংক বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন তরান্বিত করতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার পাশাপাশি মানুষের আস্থাও অর্জন করেছে। অনুষ্ঠানের শুরুতেই বড় একটি কেক কাটা হয়।

এরপর ব্যাংকের চেয়ারম্যান এইচ বি এম ইকবাল বলেন, শুরুটা হয়েছিলো সেই ১৯৯৯ সালে। তারপর থেকে আমরা মানুষের বিশ্বাস, আস্থা ও ভালোবাসায় আজকের অবস্থানে এসেছি। আমাদের ব্যাংক দেশের বিভিন্ন খাতে উন্নয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এই সমৃদ্ধিময় উন্নয়নে সবার সাহায্য ও ভালোবাসা ছাড়া আমরা আজকের অবস্থানে পৌঁছাতে পারতাম না।

ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম রিয়াজুল করিম বলেন, সমৃদ্ধির এই পথচলা অব্যাহত থাকবে। বর্তমানে আমাদের ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ নেমে এসেছে ৫ শতাংশের নিচে। এ ছাড়া অন্যান্য সূচকেও গত কয়েক বছরে ব্যাংকটি বেশ উন্নতি করেছে। গত এক বছরের ব্যবধানে আমাদের ব্যাংকের আমানতে ২২ শতাংশ, মুনাফায় ১৫ শতাংশের বেশি, রেমিট্যান্স আহরণে ৫৪ শতাংশের মতো প্রবৃদ্ধি হয়েছে। আশা করছি, আগামী ৫ বছরের মধ্যে এই ব্যাংকটি সব ধরনের সূচকে দেশের শীর্ষ পর্যায়ের একটি ব্যাংক হয়ে উঠবে।

ব্যাংকটির উপদেষ্টা মুহাম্মদ আলী বলেন, বাংলাদেশ ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের এই অগ্রযাত্রায় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ডা. ইকবালের নেতৃত্বে গত বিশ বছরে সাহসী এবং অগ্রগতিশীল উন্নয়ন কৌশল গ্রহণের ফলে প্রিমিয়ার ব্যাংক উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে চলেছে। 

Thursday, October 24, 2019

ডুয়িং বিজনেস: ৯৯ দেশের মধ্যে প্রবেশের লক্ষ্য সালমান এফ রহমানের

অর্থনৈতিক রিপোর্টার: বিশ্বব্যাংকের 'ডুইং বিজনেস-২০২০' সূচকে সবচেয়ে ভালো করা ২০টি দেশের তালিকায় এসেছে বাংলাদেশের নাম। ৮ ধাপ এগিয়ে এবার বাংলাদেশ উঠে এসেছে ১৯০ দেশের মধ্যে ১৬৮ নম্বরে। গত বছর বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৭৬ নম্বরে। তবে 'ডুয়িং বিজনেস' সূচকে আগামী বছর বাংলাদেশের অবস্থান প্রথম ৯৯ দেশের মধ্যে বা ডাবল ডিজিটে প্রবেশের লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। 

গতকাল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে 'ডুইং বিজনেস ২০২০' প্রতিবেদন প্রকাশকালে তিনি এ কথ বলেন। এ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব মো. নজিবুর রহমান, প্রধান সমন্বয়ক (এসডিজি) আবুল কালাম আজাদ, বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিভাগের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ শহিদুল হক ও অর্থ সচিব মো. আবদুর রউফ তালুকদার।

সালমান এফ রহমান বলেন, অতীতে এই সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান খুব সামান্যই পরিবর্তিত হয়েছে। এবার অবশ্য ৮ ধাপ এগিয়েছে। আগে কখনো এত পয়েন্ট জাম্প আমরা করতে পারিনি। এছাড়া সবচেয়ে ভালো করা ২০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ রয়েছে। এটিও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, এই সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান উন্নতির প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে বেশি দিন হয়নি। বিশেষ করে, এ বছর আওয়ামী লীগ সরকার পুনরায় ক্ষমতায় আসার পরই এই প্রচেষ্টার ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। তবে সূচকের অগ্রগতি বা অবনতি সংক্রান্ত তথ্য নথিবদ্ধ করার শেষ সময় ছিল এপ্রিল মাস। সুতরাং আমাদের হাতে বেশি সময় ছিল না।

সালমান এফ রহমান বলেন, গত ৩/৪ বছর ধরেই এ নিয়ে কাজ হচ্ছিল। কিন্তু আমাদের উল্লেখযোগ্য উন্নতি হচ্ছিল না। নিয়মটা হল, এপ্রিল মাসের মধ্যে প্রতি বছরের যা রিফর্মস হয়, সেই রিফর্মসের উপর ভিত্তি করে তারা অক্টোবরে ফলাফল দেয়। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, বিশ্ব ব্যাংক যখন র‌্যাংকিং শুরু করে, বাংলাদেশ খারাপ অবস্থানে ছিল।

সালমান এফ রহমান বলেন, তারপরও আমাদের প্রত্যাশা আরো বেশি ছিল। কারণ আমরা নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে অনেক পরিবর্তন এনেছি। তবে এই পরিবর্তনের সুফল মাঠপর্যায়ে পুরোপুরি যায়নি, কারণ মধ্যম ও নিচু সারির সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিরা এই পরিবর্তন স¤পর্কে অবহিত হননি অথবা মানিয়ে নিতে পারেননি। আমরা এখন এই পরিবর্তনের প্রায়োগিক বাস্তবায়নের ওপর জোর দিচ্ছি। যাতে সকল উপকারভোগী বাস্তবিক অর্থেই এই পরিবর্তনের সুফল পান। পামাপাশি আমরাও যেন সূচকে পূর্ণ নম্বর পাই। এছাড়া আমরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছি। যেগুলো বাস্তবায়িত হলে আমাদের অবস্থানে ব্যাপক উন্নতি হবে। কিন্তু আইন সংশোধনের কাজ সময়সাপেক্ষ কেননা এক্ষেত্রে সরকারকে সকল আংশীজনের সঙ্গে শলাপরামর্শ করতে হয় ও তাদের উদ্বেগ ও পরামর্শ আমলে নিতে হয়।

অগ্রগতির জন্য অনুষ্ঠানে উপস্থিত কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ৮ ধাপ এগিয়ে এলেও আমরা মনে করব না এটা আমাদের অনেক বড় অর্জন। আমাদের লক্ষ্য আগামী বছর আমরা উল্লেখযোগ্য একটা অগ্রগতি চাই। আমরা টার্গেট করব যেন ডাবল ডিজিটে আসতে পারি।

এক প্রশ্নের জবাবে এসসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ বলেন, আপনি যদি প্রতিবেদনটা দেখেন, ১০টা মানদ-ের মধ্যে অন্তত ৬০টি ইস্যুতে রিপোর্ট করতে হয়। প্রতিটাকেই কিন্তু গুরুত্ব দিতে হবে। সবগুলো ক্ষেত্রেই আমাদের উন্নতি করার সুযোগ রয়েছে। সবাই মিলে আন্তরিকভাবে কাজ করে গেলে আরো ভালো ফলাফল পাওয়া সম্ভব বলে মন্তব্য করেন তিনি।

একটি দেশের অর্থ-বাণিজ্যের পরিবেশ ১০টি মাপকাঠিতে তুলনা করে এই সূচক তৈরি করা হয়। বাংলাদেশের পরিস্থিতি বুঝতে ব্যবহার করা হয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামের তথ্য। এই ১০টি মাপকাঠি হল- নতুন ব্যবসা শুরু করা, অবকাঠামো নির্মাণের অনুমতি পাওয়া, বিদ্যুৎ সুবিধা, সম্পত্তির নিবন্ধন, ঋণ পাওয়ার সুযোগ, সংখ্যালঘু বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা, কর পরিশোধ, বৈদেশিক বাণিজ্য, চুক্তি বাস্তবায়ন ও দেউলিয়া হওয়া ব্যবসার উন্নয়ন। সব মিলিয়ে ১০০ ভিত্তিক এই সূচকে বাংলাদেশের মোট স্কোর হয়েছে এবার ৪৫, যা গতবারের চেয়ে ৩.০৩ পয়েন্ট বেশি। গতবছর ৪১.৯৭ ছিল।

বিশ্ব ব্যাংক বলছে, ১০টি মাপকাঠির মধ্যে ৬টিতেই বাংলাদেশের স্কোর গতবারের চেয়ে বেড়েছে। এর মধ্যে ঋণ পাওয়ার সুযোগে স্কোর বেড়েছে ২০ শতাংশ পয়েন্ট। ৪টি মাপকাঠিতে এবারের স্কোর গতবারের সমান। শুধু অবনতি হয়েছে দেউলিয়া হওয়া ব্যবসার উন্নয়ন ঘটানোর ক্ষেত্রে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে ব্যবসা করা সহজ হয়েছে। বাংলাদেশের এতটা এগিয়ে আসার কারণ হিসেবে বিশ্বব্যাংক বলছে, ব্যবসা শুরু করতে আগের চেয়ে খরচ কমেছে বাংলাদেশে। রাজধানী ঢাকাসহ শহর এলাকায় বিদ্যুৎ প্রাপ্তি সহজ হয়েছে। এছাড়া ঋণপ্রাপ্তির যাবতীয় তথ্য এখন সহজে, আরো বিস্তারিত আকারে পান উদ্যোক্তারা। তারপরও ব্যবসার পরিবেশে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ শুধু আফগানিস্তানের চেয়ে এগিয়ে আছে। আফগানিন্তানের অবস্থান ১৭৩ তম। স্কোর ৪৪.১। এবারের সূচকে দেশটির অবনতি হয়েছে ৬ ধাপ।

ভারত দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষস্থানে আছে। ভারত সারা বিশ্বে ৬৩তম স্থানে আছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার করায় ভারতের অবস্থানের ১৪ ধাপ অগ্রগতি হয়েছে। এছাড়া ভুটান এ সূচকের ৮৯তম (স্কোর ৬৬), নেপাল ৯৪তম (৬৩.২), শ্রীলঙ্কা ৯৯তম (৬১.৮), পাকিস্তান ১০৮তম (৬১), মালদ্বীপ ১৪৭তম (৫৩.৩), মিয়ানমার ১৬৫তম (৪৬.৮) অবস্থানে রয়েছে।

এবারের প্রতিবেদনে অর্থ-বাণিজ্যের পরিবেশ তৈরির ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে নিউজিল্যান্ড; সূচকে তাদের স্কোর ৮৬.৮। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে আছে যথাক্রমে সিঙ্গাপুর ও হংকং। শীর্ষ দশে থাকা অন্য দেশগুলো হল- ডেনমার্ক, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, জর্জিয়া, যুক্তরাজ্য, নরওয়ে ও সুইডেন। গতবারের মত এবারও সূচকে সোমালিয়ার পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ। আফ্রিকার এই দেশটির স্কোর ২০।

প্রতিবেদনের সুপারিশে বলা হয়, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ডাবল-ডিজিটে উন্নীত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন আইন সংস্কার ও বাস্তবায়ন করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে কো¤পানিজ অ্যাক্ট, ব্যাংক্রাপ্টসি অ্যাক্ট, আরবিট্রেশন অ্যাক্ট ও ইমারত নির্মান বিধিমালা, ইত্যাদি। এছাড়া সিকিউর্ড ট্রানজেকশন বিল প্রণয়ন, কমার্শিয়াল ডিসপিউট রিজ্যুলিউশন কোর্ট প্রতিষ্ঠা ও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের রিস্ক প্রোফাইল তৈরির মাধ্যমে বর্ডার কমপ্ল্যয়েন্স-এ কার্যকরি পরিদর্শন ব্যবস্থা প্রনয়ণ করতে হবে।

Sunday, October 20, 2019

বীমা খাতেও দুরবস্থা, মেয়াদ শেষেও টাকা ফেরত পান না গ্রাহকরা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার: জীবন বীমা কোম্পানিগুলোর আয়ের গতি শ্লথ হয়ে পড়েছে। প্রতি বছর এ খাতের গ্রস প্রিমিয়াম আয়ের প্রবৃদ্ধি কমছে। দেশি-বিদেশি ৩২ জীবন বীমা কোম্পানির গ্রস প্রিমিয়াম আয় বর্তমানে ১০ হাজার কোটি টাকার নিচে অবস্থান করছে। অন্যদিকে বীমা কোম্পানিগুলোতে পলিসি করে বিপাকে পড়েছে গ্রাহকরা। মেয়াদ শেষ হলেও পাচ্ছে না তাদের পাওনা টাকা। এ নিয়ে বীমা কোম্পানি আর নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তারা। জানা গেছে, ৫৬০৯ গ্রাহকের কয়েক কোটি টাকার বীমা দাবি পরিশোধ করছে না নামিদামি ৫টি বীমা কোম্পানি।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বীমা খাতে দুরবস্থার জন্য বেশিরভাগ কোম্পানির ব্যবস্থাপনাই দায়ী। কারণ কোম্পানিগুলো সময়োপযোগী পণ্য-সেবা দিতে পারছে না। বীমা দাবি নিয়ে কালক্ষেপণের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া বীমা সম্পর্কে গণমানুষের আস্থার সংকট রয়েছে। 

জানা গেছে, বীমা খাতে গতি আনতে ২০১০ সালে আইন প্রণয়ন ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা পুনর্গঠনসহ বেশ কিছু উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু তারপরও জীবন এ খাতে গতি ফেরেনি। বরং নিয়ন্ত্রক সংস্থার কড়াকড়ি আরোপ, নতুন কোম্পানির কারণে অসুস্থ প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি ও দাবি পরিশোধ নিয়ে জটিলতাসহ আরো কিছু কারণে এ খাতের এগিয়ে চলার গতি শ্লথ হয়ে পড়েছে। সময়ের সঙ্গে কোম্পানিগুলোর গ্রস প্রিমিয়াম আয়ের প্রবৃদ্ধিও কমছে।

সূত্র জানায়, ২০১০ সালে জীবন বীমা খাতে ১৮ কোম্পানি ছিল। ওই বছর কোম্পানিগুলো প্রায় ৫ হাজার ৮৩৫ কোটি টাকা গ্রস প্রিমিয়াম আয় করেছিল। আর প্রিমিয়াম আয়ের প্রবৃদ্ধি ছিল ১৮.৪০ শতাংশ। নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাড়াকড়ির ফলে পরের বছর থেকে আয় কমতে থাকে। ২০১৫ সালে এসে ওই প্রবৃদ্ধি সর্বনি¯œ ৩.৩৯ শতাংশে নেমে যায়। এর আগের দুবছরের ইতিবাচক ধারায় কোম্পানিগুলো কিছুটা এগোলেও ২০১৭ সাল শেষেও গ্রস প্রিমিয়াম আয়ের প্রবৃদ্ধি এখনও ৮.০৩ শতাংশে আটকে আছে। ওই বছরে প্রায় ৮ হাজার ১৯৮ কোটি টাকা গ্রস প্রিমিয়াম আয় করেছে কোম্পানিগুলো। ৮ বছরে জীবন বীমা কোম্পানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২টি হলেও গ্রস প্রিমিয়াম আয়ের প্রবৃদ্ধি এখনও ২০১০ সালের অর্ধেকের কম রয়ে গেছে। এসব কোম্পানির গ্রস প্রিমিয়াম আয় এখন ১০ হাজার কোটি টাকার নিচে অবস্থান করছে। 

বাজারে নতুন কোম্পানি আসলে বীমা ব্যবসার পরিধি বাড়বে বলে উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে দাবি করা হলেও বাস্তব চিত্র এখনও উল্টো। নতুন ১৪ কোম্পানি অনুমোদনের পর অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পুরোনো ব্যবসা ভাগাভাগি হচ্ছে। কোম্পানির তুলনায় ব্যবসার পরিধি বাড়েনি। বরং এ খাতে অসুস্থ প্রতিযোগিতা আরো প্রকট হয়েছে। 

এ বিষয়ে একটি বীমা কোম্পানির শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, সময়ের সঙ্গে দেশের জীবন বীমা খাতের পরিধি বাড়ছে। কিন্তু মান বাড়ছে না। তার মতে, সময়োপযোগী বীমা পণ্য, গ্রাহক স্বার্থ সংরক্ষণ, স্বল্প সময়ে দাবি পরিশোধ ও গ্রাহকবান্ধব করে কোম্পানিকে গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি। যার ফলে এ খাত ধুকছে। গ্রাহকরা সন্তুষ্ট হলে কোম্পানি এগিয়ে যাবে বলে মনে করেন তিনি। 

খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোম্পানিগুলোকে সময়োপযোগী পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। অন্যথায় অস্তিত্ব সংকটে পড়বে এ খাত। 
বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স ফোরামের সভাপতি ও পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিএম ইউসুফ আলী বলেন, গত কয়েক বছরে জীবন বীমা কোম্পানিগুলোকে খুব খারাপ সময় পার করতে হয়েছে। তবে এখন কোম্পানিগুলো অতীতের দুর্নাম কাটিয়ে উঠছে। 

এদিকে জমানো টাকা ফিরে পেতে প্রতিদিনই গ্রাহকরা আইডিআরের অফিসে ভিড় করছেন। সরজমিন দেখা গেছে, পলিসির টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য প্রতিদিনই আইডিআরের কর্মকর্তাদের রুমের সামনে গ্রাহকের লাইন। দীর্ঘদিন কোম্পানির কাছে ধরনা দিয়ে শেষ পর্যন্ত আসছে আইডিআরের কাছে। কর্মকর্তাদের সামনে গ্রাহকরা কান্নায় ভেঙে পড়ছে। পলিসির মেয়াদ শেষ হলেও বছরের পর বছর কোম্পানিগুলো গ্রাহকের টাকা পরিশোধ করছে না। এসব পলিসির বিপরীতে সুদ ছাড়া টাকার পরিমাণ ৩ কোটি। কিন্তু সুদসহ হিসাব করলে তা কয়েক কোটি ছাড়িয়ে যাবে। 

আইডিআরের তথ্য অনুসারে, ৫ কোম্পানির বিরুদ্ধে ৫৬০৯ গ্রাহককে পলিসির টাকা পরিশোধ না করার অভিযোগ জমা পড়েছে। এ ছাড়া প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে যেসব নিয়ন্ত্রণ সংস্থার কাছে পৌঁছাতে পারেনি, সে সংখ্যা হিসাব করলে তা ২০-২৫ হাজার ছাড়িয়ে যাবে। আইডিআরের কাছেই ২ হাজার ৩৪৪টি অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া আইডিআরের বাইরে থাকা অভিযোগ তদন্ত করলে বিশাল আকারে পৌঁছাবে। 

আইডিআরের নির্বাহী পরিচালক ড. রেজাউল ইসলাম বলেন, কয়েকটি কোম্পানি গ্রাহককে পলিসির টাকা দিচ্ছে না। সম্প্রতি এ ব্যাপারে আইডিআরের কাছে বেশ কিছু অভিযোগ জমা পড়েছে। কোম্পানিগুলো টাকা না দিয়ে বিভিন্ন ভাবে গ্রাহককে হয়রানি করছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। কারণ গ্রামের গরিব মানুষ খুব কষ্ট করে টাকা জমা দিয়েছে। মেয়াদ শেষ হলেও কোম্পানিগুলো তাদের টাকা দিচ্ছে না। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে আমরা প্রতিটি কোম্পানির সঙ্গে আলাদাভাবে বৈঠক করে কঠোর বার্তা দিয়েছি। আর টাকা পরিশোধের সময়ও বেঁধে দেয়া হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টাকা না দিলে বাধ্য হয়েই কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।

নিয়ম অনুসারে একজন গ্রাহক জীবন বীমায় কিস্তিতে টাকা জমা রাখে। এই কিস্তি মাসিক, তিন মাস অথবা ছয় মাসের হতে পারে। এসব পলিসির মেয়াদ ৫ থেকে ১৮ বছর পর্যন্ত। জীবনের আর্থিক নিরাপত্তার জন্য এই দীর্ঘ সময় তারা স্বল্প আয় থেকে একটু একটু করে টাকা জমা রাখে। বীমা আইন অনুসারে, পলিসির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর সর্বোচ্চ ৯০ দিনের মধ্যে প্রতিশ্রুত টাকা দিতে হয়। আর ৯০ দিনের বেশি হলে বাকি দিনগুলোর সুদসহ টাকা পরিশোধ করতে হয়। কিন্তু কোম্পানিগুলো টাকা পরিশোধ না করে গ্রাহককে বছরের পর বছর হয়রানি করছে। এরা পলিসির টাকা আত্মসাৎ করেছে। 

বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শেখ কবির হোসেন বলেন, গ্রাহকের টাকা পরিশোধ করছে না, এ ধরনের কোম্পানির সংখ্যা বেশি নয়। তবে কয়েকটি কোম্পানি এ খাতের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। তিনি বলেন, এ খাতের আস্থা অর্জনের জন্য সবার আগে গ্রাহকের টাকা পরিশোধ করতে হবে। 

Thursday, October 17, 2019

শেয়ারবাজার টালমাটাল, বিনিয়োগকারীদের কান্না

অর্থনৈতিক রিপোর্টার: দেশের শেয়ারবাজারে অব্যাহত দরপতনে বিনিয়োগকারীদের লোকসানের পাল্লা দিন দিন ভারী হচ্ছে। পতন আরো গভীর থেকে গভীর হচ্ছে। প্রায় সব কোম্পানি ক্রমাগত দর হারাচ্ছে। ফলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই)  প্রধান সূচক প্রায় তিন বছর আগের অবস্থানে ফিরে গেছে। একই সঙ্গে বাজার মূলধন, লেনদেনও তলানিতে নেমে যাচ্ছে। এদিকে টানা দরপতনে পুঁজি হারাচ্ছেন লাখ লাখ বিনিয়োগকারী। বাজারের স্থিতিশীলতা ফেরাতে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা-বিএসইসির চেয়ারম্যান খায়রুল হোসেনের আশ্বাস এবং তারল্য সংকট কাটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উদ্যোগেও কোন কাজ হচ্ছে না। বাজারে পতন চলছেই। গতকাল সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসেও মূল্য সূচকের পতনেই লেনদেন শেষ হয়েছে পুঁজিবাজারে। এদিন ডিএসইতে লেনদেন কমেছে। অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক কমলেও লেনদেন বেড়েছে।

বিনিয়োগকারীদের অভিযোগ, বাজারের বর্তমান অবস্থা ১৯৯৬ এবং ২০১০ সালের ধসকেও হার মানিয়েছে। ওই দুই সময়ের ধসে বড় ধরনের সংস্কার এবং প্রণোদনা দেয়া হয়। কিন্তু বর্তমানে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের দেখার কেউ নেই। এ অবস্থায় পুঁজি হারানো বিনিয়োগকারীরা কাউকে কিছু বলতে পারছেন না। ফলে নীরব কান্না চলছে শেয়ারবাজারে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা জানান, পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক। কোনো বিনিয়োগকারীই পুঁজি নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারছেন না। নতুন করে বিনিয়োগ তো আসছেই না, উল্টো অনেকে বড় লোকসান দিয়ে সমুদয় শেয়ার বিক্রি করছেন। যাদের লোকসান মাত্রাতিরিক্ত, তারাই লোকসান কমানোর আশায় এক শেয়ার বিক্রি করে অন্য শেয়ার কিনছেন। কিন্তু লোকসান তো কমছেই না, বরং লোকসানের পাল্লা বাড়ছে।

ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, ডিএসই প্রধান সূচক প্রায় ৯ মাসে কমেছে ১ হাজার ২০০ পয়েন্ট। একই সময়ের ব্যবধানে বাজার মূলধন বা শেয়ারের বাজারমূল্য কমেছে প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা। কারণ বাজারের ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা নেই। সূচক যেমন তলানিতে, আস্থাও তলানিতে।

পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, অতিমূল্যায়িত আইপিও পুঁজিবাজারকে অস্থির করে তুলেছে। অন্যদিকে নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। পাশাপাশি স্টক এক্সচেঞ্জ, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে বাজার প্রাণহীন হয়ে পড়েছে।

জানা গেছে, ডিএসইর প্রধান সূচকটি চলতি বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানে ছিল গত ২৪শে জানুয়ারি। ওই দিন সূচক ছিল ৫ হাজার ৯৫০ পয়েন্টে ও বাজার মূলধন ছিল প্রায় ৪ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা। গতকাল সেই সূচক নেমে এসেছে ৪ হাজার ৭৭০ পয়েন্টে আর বাজার মূলধন কমে দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৫৯ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ ৯ মাসে সূচক কমেছে প্রায় ২০ শতাংশ আর বাজার মূলধন কমেছে ১৪ শতাংশের বেশি। এছাড়া শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৩১৯ কোম্পানির মধ্যে ৪৬টি বা প্রায় সাড়ে ১৪ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারের দাম এখন ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের নিচে নেমে এসেছে। এসব কোম্পানির বেশির ভাগই বর্তমান নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন নিয়ে বাজারে এসেছে। অনুমোদন দেয়া নিয়েও আছে নানা প্রশ্ন।

ডিএসই ব্রোকার্স এসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সভাপতি শাকিল রিজভী বলেছেন, তারল্য সংকট, আর্থিক খাতের খারাপ অবস্থা এবং গ্রামীণফোনের সমস্যার সমাধান না হওয়ার কারণে পুঁজিবাজারে অব্যাহত দরপতন হচ্ছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে যে তারল্য সংকট আছে সেটা রয়ে গেছে। ব্যাংকের সুদের হার এখনও বেশি। এটার নেতিবাচক প্রভাব পুঁজিবাজারে আছে। গ্রামীণফোন পুঁজিবাজারের প্রায় ১০ শতাংশর মত। এটার সঙ্গে কর নিয়ে যে একটি সমস্যা সেটার সমাধান হয়নি। এসটার বড় প্রভাব ফেলছে বাজারে। শাকিল রিজভী মনে করেন, বাজারে এখন আস্থার সংকটই সবচেয়ে বড় সমস্যা। আর এই তিন সমস্যা দূর না হলে বাজারে আস্থা ফিরবে না। বিনিয়োগকারীলা বাজারমুখি হবেন না। বাজার স্বাভাবিক হবে না।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলামও শাকিল রিজভীর সঙ্গে একমত পোষণ করে বলেন, ব্যাংকিং খাত ঠিক না হলে শেয়ার বাজার ঠিক হবে না। দেশের অর্থনীতির স্বার্থে ব্যাংকিং খাতের সুশাসন ফিরিয়ে আনতে সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গতকাল ডিএসই প্রধান বা ডিএসইএক্স সূচক ১০ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৪ হাজার ৭৭০ পয়েন্টে। গত সোমবার ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) বিনিয়োগের ঘোষণার পর মঙ্গলবার বড় উত্থান হলেও বুধবার আবার পতনে ফিরেছে শেয়ারবাজার। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসইএস বা শরিয়াহ সূচক ৫ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৯৪ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ৬ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬৭৯ পয়েন্টে। ডিএসইতে গতকাল টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ৩১৩ কোটি লাখ টাকার। যা গত কার্যদিবস থেকে ১১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা কম। এর আগের দিন লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৩২৪ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। গতকাল ডিএসইতে ৩৫০টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৪৫টির, কমেছে ১৬২টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৩টির।

অপরদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৪৩ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১৪ হাজার ৫১১ পয়েন্টে। সিএসইতে টাকার অংকে ১৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এ সময়ে সিএসইতে লেনদেনে অংশ নিয়েছে ২৫৫টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১০২টির, কমেছে ১২৪টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৯টির।

বাজারের এমন আচরণে হতাশ সাধারণ বিনিয়োগকারী থেকে শুরু করে শেয়ারবাজার-সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিরাও। সংশ্লিষ্টরা জানান, মঙ্গলবার গুঞ্জন ছিল শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির শীর্ষ পদে বড় রদবদল হচ্ছে। ওই দিন বিকালেই অবশ্য জানা যায়, এটি গুজব। বাজারের বিপরীতমুখী অবস্থার ক্ষেত্রে এ খবরের যোগসূত্র রয়েছে বলে অনেকেই মনে করছেন। এদিকে শেয়ারবাজার থেকে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা যে পরিমাণ টাকার শেয়ার কিনছেন বিক্রি করে দিচ্ছেন তার থেকে বেশি।

সূত্র জানায়, শেয়ারবাজার পরিস্থিতি নিয়ে গত ১৬ই সেপ্টেম্বর বৈঠক করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছিলেন, এখানে আশ্বস্ত করব সবাইকে যে, আমরা পুঁজিবাজারকে সুশাসন দেব এবং আমরা গর্ভন্যান্সে ভালো করব। এভাবে আমাদের পুঁজিবাজারকে আমরা একটি শক্তিশালী বাজারে রূপান্তরিত করব। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংক শেয়ারবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ বাড়াতে নগদ অর্থ জোগান দেয়ার উদ্যোগ নেয়। এর বাইরে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের জন্য রাষ্ট্রমালিকানাধীন সোনালী ব্যাংক ২০০ কোটি টাকা দিয়েছে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ বা আইসিবিকে। আইসিবি ওই টাকা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ শুরু করেছে বলে জানা গেছে।

এর পর সর্বশেষ 'বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ' অনুষ্ঠানে বিএসইসির চেয়ারম্যান খায়রুল হোসেন বলেছিলেন, সরকারি লাভজনক প্রতিষ্ঠানগুলো খুব শিগগিরই পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হবে। কিছু ভালো লাভজনক প্রতিষ্ঠান দু-এক মাসের মধ্যেই বাজারে আসবে। এরপরও বাজারে পতন চলছেই। অর্থাৎ আস্থার সংকটে কোনো উদ্যোগই কাজে আসছে না।

বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, বিনিয়োগকারীদের আস্থা সৃষ্টি করাই এখন নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রধান কাজ।


অন্যদিকে শেয়ারবাজারে লেনদেন কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন খোদ স্টক ব্রোকার মালিকরা। তাদের ব্যবসা সংকোচনের নামে কর্মী ছাঁটাই শুরু করেছেন।

একজন ব্রোকার মালিক জানান, ২০১০ সালের পর দীর্ঘ সময়ে লোকসান দিয়ে হাউস পরিচালনা করেছেন। এর পর কোম্পানির রিজার্ভ থেকে কর্মকর্তাদের বেতন পরিশোধ করেছেন। এখন রিজার্ভের খাতা শূন্যের কোঠায় নামছে। ফলে বাধ্য হয়েই কর্মী ছাঁটাইয়ে যেতে হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

শাকিল রিজভী বলেন, পরিস্থিতি ভালো না। প্রতিদিনই লোকসান দিতে দিতে বিনিয়োগকারীদের পোর্টফোলিও এতটাই কমেছে যে, তারা এর দিকে ফিরে তাকাতেও বিরক্ত বোধ করছেন। অনেক ব্রোকারেজ হাউস বন্ধ হওয়ার উপক্রম। কারণ শেয়ার কেনাবেচা থেকে যে কমিশন আয় হচ্ছে, তা নিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন দেয়া তো দূরের কথা, দৈনন্দিন অফিস খরচই মেটাতে পারছে না। এভাবে কতদিন চলবে, তা কেউ বলতে পারছেন না।

এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী সোহেল হাসান বলেন, কয়েক মাস আগে একটি কোম্পানির শেয়ার ৬ টাকা ৭০ পয়সায় কিনেছিলেন। এখন সেই শেয়ারের মূল্য কমে ৪ টাকা ৫০ পয়সায় নেমেছে। আলোচ্য সময়ে তিনি পুঁজি খুইয়েছেন ৩৩ শতাংশ। তিনি বলেন, কোম্পানিটির শেয়ারের মূল্য কমেছে যৌক্তিক কোনো কারণ ছাড়াই।

হাসিবুল হাসিব নামের আরেক বিনিয়োগকারী একটি ভালো কোম্পানির শেয়ার কিনেছিলেন ৭৭ টাকা করে। সর্বশেষ সেই শেয়ারের মূল্য কমে দাঁড়িয়েছে ৪৭ টাকায়। আলোচ্য সময়ে তিনি পুঁজি হারিয়েছেন ৩৯ শতাংশ। আরেক বিনিয়োগকারী আতিকুল ইসলাম জাহিন স্পিনিংয়ের প্রতিটি শেয়ার কিনেছিলেন ৯ টাকা ৬০ পয়সায়। এখন সেই শেয়ারের মূল্য দাঁড়িয়েছে ৫ টাকা ৫ পয়সা। আলোচ্য সময়ে তার পুঁজি হারিয়েছে ৪৩ শতাংশ। তিন মাসের ব্যবধানে তাদের বিনিয়োগ করা পুঁজি খুইয়েছেন। তবে শেয়ারের এই মূল্য কমে যাওয়ার কোনো কারণ কোম্পানি বা স্টক এক্সচেঞ্জের পক্ষ থেকে জানানো হয়নি।

বাজার সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, অব্যাহত দরপতনে বেশিরভাগ বিনিয়োগকারীই এখন লোকসানে। লোকসান আরো বাড়বে এমন শঙ্কায় অনেক বিনিয়োগকারী শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন। এতে বিক্রির চাপ বেড়ে দরপতন ত্বরান্বিত হচ্ছে। বিক্রির চাপ বাড়লেও তা সামাল দেয়ার জন্য যে সহায়তা দরকার, তা বাজারে নেই। 

Tuesday, October 15, 2019

একনেকে নতুন দুই মেট্রোরেলসহ ১০ প্রকল্প অনুমোদন

সরকারি আবাসিক ভবনে আর গ্যাস সংযোগ নয়: প্রধানমন্ত্রী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার: সরকারি আবাসিক ভবনে আর গ্যাস সংযোগ না দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহারে অভ্যস্ত হওয়ার কথা জানান পধানমন্ত্রী। এছাড়া বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে করণীয় নির্ধারণে বেশকিছু নির্দেশনাও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এদিকে রাজধানীর যানজট নিরসনে নতুন দুটি মেট্রোরেল নির্মাণসহ ১০ প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এতে খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ৯৪ হাজার কোটি টাকা। 
গতকাল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) বৈঠক শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর এসব নির্দেশনার বিষয়ে জানান পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান।
পরিকল্পনা মন্ত্রী জানান, ডেঙ্গু প্রতিরোধে সরকারি সব বাসভবনে নেট লাগানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, এখন থেকে যেসব সরকারি বাড়ি তৈরি করা হবে তার সবগুলোতে মসকিউটো নেটিং থাকতে হবে। সেই সঙ্গে আর্বজনা ডিসপোজালের ব্যবস্থা থাকতে হবে। তাছাড়া বাড়ির নিচতলায় গাড়ি চালকদের জন্য টয়লেট, নামাজ পড়ার জায়গা ও বিশ্রামের জায়গা থাকতে হবে। সরকারি বাসভবনে গ্যাস সংযোগের বিষয়েও নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। 
পরিকল্পনা মন্ত্রী জানান, এখন সরকারি আবাসিক ভবনে গ্যাস সংযোগ না দেয়ার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী ধীরে ধীরে সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহারে মানুষকে অভ্যস্ত হওয়ার আহবান জানান।
তিনি বলেন, এখন সরকারি অর্থে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হলেও আগামীতে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডকে শেয়ার বাজারে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া আগামীতে ধানম-িকে ধরে আশপাশের এলাকার জন্য মেট্রোরেল তৈরির পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। মেট্রোরেলের ব্যয়ের প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, এখন বেশি জমি অধিগ্রহণ করায় নতুন মেট্রোরেলের ব্যয় বেশি হচ্ছে। এছাড়া মাটির নিচে ও এলিভেটেড দুই ধরনের হওয়ায় কারিগরি অনেক বিষয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, যেকোনো প্রকল্প সময়ের মধ্যেই সংশোধন করতে হবে। কিন্তু সময় শেষে নিয়ে আসা যাবে না।
এদিকে একনেক সভায় বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর রেলস্টেশন এবং নতুন বাজার থেকে পূর্বাচল ডিপো পর্যন্ত ৩১.২৪১ কিলোমিটার এমআরটি লাইন-১ নির্মাণ ও হেমায়েতপুর-আমিনবাজার-গাবতলী-মিরপুর ১-মিরপুর ১০-কচুক্ষেত-বনানী-গুলশান ২-নতুনবাজার-ভাটারা পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার এমআরটি লাইন-৫: নর্দার্ন রুট প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
এমআরটি (লাইন-১) নির্মাণের জন্য চলতি বছরের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ ধরা হয়েছে। প্রকল্পটির মোট ব্যয় ৫২,৫৬১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকার বহন করবে ১৩,১১১ কোটি ১১ লাখ টাকা সরকার ও ৩৯,৪৫০ কোটি ৩২ লাখ টাকা বৈদেশিক ঋণ।
এমআরটি (লাইন-৫) নির্মাণ সম্পন্নের জন্য মেয়াদ রাখা হয়েছে চলতি বছরের জুলাই থেকে ২০২৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রকল্পটিতে মোট ব্যয় হবে ৪১,২৩৮ কোটি ৫৪ লাখ ৭৭ হাজার টাকা। এতে সরকারি অর্থায়ন ১২,১২১ কোটি ৪৯ লাখ ৬৭ হাজার টাকা। বৈদেশিক ঋণ ২৯,১১৭ কোটি ৫ লাখ ১০ হাজার টাকা। 
অনুমোদিত ১০ প্রকল্প: সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের ‘ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভলপমেন্ট প্রজেক্ট (লাইন-১)’; ‘ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভলপমেন্ট প্রজেক্ট (লাইন-৫): নর্দান রুট; ‘ডোমার-চিলাহাটি-ভাউলাগঞ্জ (জেড-৫৭০৬), ডোমার (বোড়াগাড়ী)-জলঢাকা-(ভাদুরদরগাহ) (জেড-৫৭০৪) এবং জলঢাকা-ভাদুরদরগাহ-ডিমলা (জেড-৫৭০৩) জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ’ ও ‘কিশোরগঞ্জ-করিমগঞ্জ-চামড়াঘাট জেলা মহাসড়ক যথাযথ মানে উন্নীতকরণসহ ছয়না-যশোদল-চৌদ্দশত বাজার সংযোগ সড়ক নির্মাণ’ প্রকল্প; স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ‘গৃহায়ন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়ন (দ্বিতীয় সংশোধন) প্রকল্প’; গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ‘ঢাকাস্থ মিরপুর পাইকপাড়ায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বহুতল আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ’ ও ‘ঢাকার আজিমপুরে বিচারকদের জন্য বহুতল ভবন নির্মাণ (প্রথম সংশোধন) প্রকল্প; পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘ইরিগেশন ম্যানেজমেন্ট ইনম্প্রুভমেন্ট প্রজেক্ট ফর মুহরী ইরিগেশন প্রজেক্ট (দ্বিতীয় সংশোধন) প্রকল্প এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের ‘জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব নিরসনে সিলেট বন বিভাগে পুনঃবনায়ন ও অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প।
এদিকে চলতি অর্থবছর বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন হয়েছে ৮.০৬ শতাংশ। যা গত বছর একই সময়ে হয়েছে ৮.২৫ শতাংশ। একনেক ব্রিফিং শেষে বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের এ তথ্য প্রকাশ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী। তিনি জানান, চলতি অর্থবছরে ৩ মাসে (জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর) ১৭ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। যা গতবছর একই সময়ে ব্যয় হয়েছিল ২ হাজার ৪১৭ কোটি টাকা।

Monday, October 14, 2019

বিশ্ব মান দিবসের আলোচনায় শিল্পমন্ত্রীর হুশিয়ারী


অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত হলে দায়ি ব্যক্তির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা
অর্থনেতিক রিপোর্টার: জাতীয় পর্যায়ে পণ্য ও সেবার গুণগত মান সুরক্ষা ও উন্নয়নে বিএসটিআইর সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব, সততা, নিষ্ঠা, আন্তরিকতা ও দেশ প্রেমের সাথে অর্পিত দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। তিনি বলেন, এক্ষেত্রে কোনো ধরনের শৈথিল্য কিংবা দায়িত্বহীনতা সরকার মেনে নেবে না। দায়িত্ব অবহেলা কিংবা অনৈতিক কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত হলে, শিল্প মন্ত্রণালয় দায়ি ব্যক্তির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেবে।

সোমবার বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউশন (বিএসটিআই) আয়োজিত 'ভিডিও মান বৈশ্বিক সম্প্রীতির বন্ধনʼ শীর্ষক আলোচনা সভায় শিল্পমন্ত্রী এ নির্দেশ দেন। বিশ্ব মান দিবস-২০১৯ উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে অবস্থিত বিএসটিআই'র প্রধান কার্যালয়ে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। শিল্প মন্ত্রণালয়ের রুটিন দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব সালাহউদ্দিন মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিএসটিআই'র মহাপরিচালক মো. মুয়াজ্জেম হোসাইন এবং বিএসটিআই'র পরিচালক (মান) মো. সাজ্জাদুল বারী বক্তব্য রাখেন।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, বিএসটিআই জাতীয় পর্যায়ে একমাত্র মান নির্ধারণী প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানের কর্মকা-ের ওপর গুণগত শিল্পায়ন এবং জনগণের জীবনের সুরক্ষার বিষয়টি নির্ভর করে। এ বিবেচনায় বর্তমান সরকার বিএসটিআই'র আধুনিকায়ন ও সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় আইন, নীতি ও বিধি প্রণয়ন করেছে। এর পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটির কর্মক্ষেত্র সম্প্রসারণে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। জনগণের দোরগোড়ায় বিএসটিআই'র সেবা পৌঁছে দিতে সরকার উপজেলা পর্যায়ে এর কার্যক্রম সম্প্রসারণ করবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, শিল্প-কারখানায় কোনো নির্দিষ্ট এলাকার জনগোষ্ঠির ব্যবহারের জন্য পণ্য উৎপাদিত হয় না। এটি নিজ দেশের গ-ি পেরিয়ে বিদেশে রপ্তানির জন্য উৎপাদিত হয়ে থাকে। কোনো পণ্য অন্য দেশের ক্রেতা ভোক্তাদের কমপ্লায়েন্স অনুসরণ করে তৈরি না করলে, তা বিশ্ববাজারের প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারবে না। এর ফলে সংশ্লিষ্ট শিল্প উদ্যোক্তা ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং এক সময় তার প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবে। এ বাস্তবতা মাথায় রেখে বাংলাদেশে বিশ্বমানের পণ্য উৎপাদনের প্রয়াস জোরদার করতে তিনি শিল্প উদ্যোক্তাদের প্রতি আহবান জানান।

বিএসটিআই মহাপরিচালক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত রূপকল্প ২০২১ ও ২০৪১ অনুযায়ী দেশে গুণগত শিল্পায়নের ধারা বেগবান করতে বিএসটিআই কাজ করছে। এর অংশ হিসেবে গত ৯ মাসে তৃণমূল পর্যায়ে পণ্য ও সেবার গুণগত মান সুরক্ষায় বিএসটিআইর কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১,৮২৯টি সিএম লাইসেন্স প্রদান, ২০১১টি লাইসেন্স নবায়ন, ১,৫০৫টি সার্ভিল্যান্স টিম এবং ১৪৭টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে। এ সময় ৩ কোটি ৯৬ লাখ ১৬ হাজার টাকা জরিমানা আদায়ের পাশাপাশি ৮৯৩টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এছাড়া ৪৬৫টি ফলের নমুনা পরীক্ষা করা হলেও এর কোনটিতে ফরমালিনের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি বলে তিনি উল্লেখ করেন। এর আগে বিশ্ব মান দিবস ২০১৯ উপলক্ষে বিএসটিআইর উদ্যোগ এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা আয়োজন করা হয়। এটি প্রধান কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবার প্রধান কার্যালয়ে এসে শেষ হয়। বিএসটিআই মহাপরিচালক এতে নেতৃত্ব দেন।

অর্থনীতিকে এগিয়ে নিবে উদ্ভাবনী প্রযুক্তি

ডিজিটাল ডিভাইস অ্যান্ড ইনোভেশন এক্সপো ২০১৯

অর্থনৈতিক রিপোর্টার: দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে নিজস্ব প্রযুক্তি উদ্ভাবনে তরুণদের নিয়োজিত হবার আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী আবুল মোমেন। সোমবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে তথ্যপ্রযুক্তি প্রদর্শনী 'ডিজিটাল ডিভাইস অ্যান্ড ইনোভেশন এক্সপো ২০১৯' উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশের প্রযুক্তি খাতের অগ্রগতির প্রশংসা করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী। 'মেড ইন বাংলাদেশ' স্লোগানে শুরু হলো তিনদিন ব্যাপী দেশের সর্ববৃহৎ প্রযুক্তি প্রদর্শনী। ১৪ই অক্টোবর থেকে ১৬ই অক্টোবর পর্যন্ত চলবে প্রদর্শনীটি। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে চলবে রাত ৮টা পর্যন্ত।

তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ, বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ, আইডিয়া প্রজেক্ট, এটুআই এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস) এর যৌথ উদ্যোগে ডিজিটাল পণ্য এবং তরুণ প্রজন্মের উদ্ভাবিত প্রযুক্তি প্রদর্শন করা হবে এখানে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংকের গবেষণা অনুযায়ী বাংলাদেশ এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দ্রুততম অর্থনীতির একটি। জাতিসংঘ বলছে বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে গত দশ বছরে ৪০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রণীত 'ডিজিটাল বাংলাদেশ' পরিকল্পনা বাংলাদেশকে জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির দিকে এগিয়ে নিচ্ছে বলে মন্তব্য করেন মোমেন।

সাবেক কূটনৈতিক মোমেন বলেন, তথ্য প্রযুক্তিভিত্তিক বাজার সম্প্রসারনের মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতি বিশ্ব দরবারে নতুন পরিচয় পেয়েছে। যার পেছনে রয়েছে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা এবং সময়ভিত্তিক বাস্তবায়ন।

দেশীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রশংসা করে বক্তব্য শুরু করেন তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, এমপি।

জুনায়েদ আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ বছরে চার কোটি মোবাইল ফোন আমদানি করে। সরকারের ব্যবসায় বান্ধব নীতির কারণে গত এক বছরে ওয়ালটন, সিম্ফোনিসহ কোরিয়ান স্যামসাং আমাদের হাইটেক পার্কে সেট উৎপাদন করছে।

বাংলাদেশ হাইটেক পার্কের মাধ্যমে নতুন প্রযুক্তি ব্যবসায় উদ্যোক্তাদের সরকার সহযোগিতা করে আসছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ। তিনি আরো বলেন, ডিজিটাল ডিভাইস অ্যান্ড ইনোভেশন এক্সপোর মাধ্যমে বাংলাদেশ নিজস্ব সক্ষমতা প্রদর্শন করা হবে যেখানে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী, উদ্ভাবক এবং ব্যবসায়ীদের একই জায়গায় নিয়ে আসা হয়েছে।

টেলিযোগাযোগ মন্ত্রনালয়ের সংসদীয় কমিটির প্রধান একেএম রহমতুল্লাহ বলেন, প্রযুক্তিখাতে বাংলাদেশ বিশ্ব অর্থনীতিতে নিজস্ব জায়গা করে নিয়েছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদের নেতৃত্বে দেশের প্রযুক্তি খাতে অসামান্য অগ্রগতি হয়েছে।

আইসিটি বিভাগের জেষ্ঠ্য সচিব জিয়াউল আলাম জানান, প্রযুক্তিখাতের সম্প্রসারনের সঙ্গে সঙ্গে সরকারের পক্ষ থেকে আইসিটি আইন-২০০৯ কে গত দশ বছরে দুইবার হালনাগাদ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ হাইটেক পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম, এনডিসি বলেন, তরুণ উদ্ভাবকেরাই ডিজিটাল বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ায় মূখ্য ভূমিকা পালন করছে।

হোসনে আরা বেগম জানান, আইসিটি বিভাগের বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে তরুণদের উদ্ভাবনী,  ব্যবসায়ীক এবং সেবাভিত্তিক প্রকল্পকে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে।

উইটসার মহাসচিব জেমস (জিম) পয়জান্ট বাংলাদেশি তরুণদের স্থানীয় সমস্যা সমাধানে প্রযুক্তি উন্নয়নে মনযোগী হবার আহবান জানান।

প্রদর্শনীটি সকাল থেকেই সবার জন্য উন্মুক্ত রয়েছে। তবে প্রদর্শনীতে প্রবেশের জন্য প্রদর্শনীর ওয়েবসাইট (যঃঃঢ়ং://ফফরবীঢ়ড়.পড়স/ৎবমরংঃৎধঃরড়হ) অথবা স্মার্টফোনে আইওএস (যঃঃঢ়ং://ধঢ়ঢ়ষব.পড়/২ড়যঝঅ১া) ও অ্যান্ড্রয়েড (যঃঃঢ়ং://নরঃ.ষু/৩৫ল২চউম) থেকে অ্যাপ ডাউনলোড করে নিবন্ধন করতে হচ্ছে। উল্লেখিত সাইট বা অ্যাপে প্রদর্শনী সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। পুরো প্রদর্শনী অনলাইনে লাইভ স্ট্রিমিং করা হচ্ছে।

প্রযুক্তি খাতে দেশের সক্ষমতা, দক্ষতা, হার্ডওয়্যার পণ্য উৎপাদনে সম্ভাবনা এবং কর্মপ্রচেষ্টার বাস্তবচিত্র এই প্রদর্শনীতে উপস্থাপন করা হচ্ছে। এ ছাড়াও হাই-টেক পার্ক এবং তথ্যপ্রযুক্তিতে উন্নয়ন কাঠামোর অগ্রগতিতে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়া সম্পর্কেও দর্শনার্থীরা সম্যক ধারণা অর্জন করতে পারছেন। দেশীয় প্রযুক্তির সমাহার দিয়ে এবারের প্রদর্শনীকে ভিন্ন আঙ্গিকে সাজানো হয়েছে। রাখা হয়েছে ৮টি জোন। 'মেড ইন বাংলাদেশ' জোনে দেশীয় প্রযুক্তি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানদের এক ছাদের নিচে পাওয়া যাবে। থাকছে ইনোভেশন জোন। এই জোনে নিত্য নতুন উদ্ভাবন সম্পর্কে জানা যাচ্ছে।

আইডিয়া প্রজেক্টের ৩০টি প্রজেক্ট, এটুআই এর ৩০টি প্রজেক্ট এবং ২১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবিত প্রযুক্তি দিয়ে সাজানো হয়েছে ইনোভেশন জোন। অ্যাক্টিভেশন প্রোগ্রামগুলো থেকে নির্বাচিত সেরা ৩০টি উদ্ভাবন এক্সপোতে প্রদর্শিত হবে এবং প্রদর্শনীটি শেষ হওয়ার পরে শীর্ষ ১০ তরুণ উদ্ভাবককে বঙ্গবন্ধু উদ্ভাবনী অনুদান (বিআইজি) দিয়ে ভূষিত করা হবে। স্টার্টআপ জোনে নতুন উদ্যোক্তাদের এগিয়ে যাওয়ার প্রজেক্ট সম্পর্কে ধারণা পাবেন দর্শনার্থীরা। মেলার অন্যতম আকর্ষণ রোবোটিক জোন। এই জোনে শিক্ষার্থীদের তৈরি রোবটের পদচারণা রয়েছে।

সকাল ১০ টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এই প্রদর্শনী সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।  ৫ লাখ দর্শনার্থী সরাসরি এবং ১০ লাখ ভিউয়ারস এই প্রদর্শনী অনলাইনে উপভোগ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। প্রদর্শনীর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর শাহজালাল প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তৈরি রোবট 'লি'। ডিজিটাল ডিভাইস অ্যান্ড ইনোভেশন এক্সপো ২০১৯ এর প্লাটিনাম স্পন্সর ওয়ালটন। গোল্ড স্পন্সর ফেয়ার ইলেকট্রনিক্স। যৌথভাবে সিলভার স্পন্সর সিম্ফনি এবং ডিবিবিএল। প্রদর্শনীর ফোরজি এলটিই পার্টনার বাংলালায়ন। এডিএন টেলিকম, বাংলাদেশ টেকনো সিটি লিমিটেড, ডাহুয়া, ডেল, এইচপি, হিকভিশন, ইউসিসি এক্সপোর পার্টনার। গেমিং পার্টনার গিগাবাইট। ই-কর্মাস পার্টনার প্রিয়শপ ডটকম।

দেশের ২১টি বিশ্ববিদ্যালয় ডিজিটাল ডিভাইস অ্যান্ড ইনোভেশন এক্সপো ২০১৯ এর নলেজ পার্টনার। এক্সপোকে সফল করার জন্য বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস), বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কল সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্য), সিটিও ফোরাম, ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব), বাংলাদেশ ওম্যান ইন টেকনোলজি (বিডব্লিউআইটি), ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (আইএসপিএবি) এবং বাংলাদেশ আইসিটি জার্নালিস্ট ফোরাম (বিআইজেএফ) সহযোগী সংগঠন হিসেবে কাজ করছে। 

শতভাগ পরিবেশ রক্ষা করেই সুন্দরবন এলাকায় উন্নয়ন হচ্ছে: সালমান এফ রহমান

অর্থনৈতিক রিপোর্টার: সুন্দরবন এলাকায় যত উন্নয়নমূলক কাজ হচ্ছে শতভাগ পরিবেশ রক্ষা করেই করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। গতকাল সোনারগাঁও হোটেলে 'পাওয়ার প্যাক ইকোনমিক জোন প্রাইভেট লিমিটেড' এর বিনিয়োগ উন্নয়ন শীর্ষক অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন তিনি। বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, বেজার নির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ আইয়ুব বক্তব্য রাখেন। পাওয়ারপ্যাক ইকনোমিক জোনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রনো হক শিকদার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
সুন্দরবনের কাছে এই অর্থনৈতিক অঞ্চল নিয়ে বিভিন্ন মহলের উদ্বেগ প্রসঙ্গে সালমান এফ রহমান বলেন, আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জলবায়ু ও পরিবেশ নিয়ে অত্যন্ত সচেতন এবং সতর্ক। সুন্দরবনের পাশে পরিবেশের ক্ষতির আশঙ্কা থাকলে এই ধরনের প্রকল্প হাতে নেয়া হত না। সুন্দরবনের ক্ষতি করে কিছু করা হবে না। আপনারা নিশ্চিত থাকতে পারেন। তিনি বলেন, বিশ্বে ইকোনমিক জোনের অনেক মডেল রয়েছে। আমাদের এখানে করা হয়েছে কান্ট্রি স্পেসিফিক ইকোনমিক জোন। অভিনব আইডিয়া। চীনা ইকোনমিক জোন, জাপানিজ ইকোনমিক জোন, ভারতীয় ইকোনমিক জোন দেখে কোরিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ অনেক দেশ বিনিয়োগ করতে আসছে। সালমান এফ রহমান বলেন, প্রথমে যখন ১০০ ইকোনমিক জোনের কথা বলা হয়েছিল তখন অনেকে বিশ্বাস করতে চায়নি। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে ১০০ যথেষ্ট নয়। আরো জোনের প্রয়োজন পড়বে। 
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কিন্তু বিসিক দিয়ে কাজটি শুরু করেছিলেন। সেইটার একটি বৃহৎ ভার্সন ইকোনমিক জোন। বিসিকে ছোট ছোট শিল্প থাকে এখানে বড় বড়গুলো থাকবে। সরকারের মধ্যম ও উন্নত রাষ্ট্রের লক্ষ্যমাত্রা এবং ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নে সহায়ক ভূমিকা রাখছে এসব শিল্প জোন। তিনি বলেন, এতদিন কী হতো? কোথাও রাস্তা নির্মাণ হলে তার পাশে গিয়ে আমরা জমি কিনতাম। এরপর ভরাট করে শিল্প স্থাপন করে গ্যাস বিদ্যুতের জন্য কান্নাকাটি শুরু করে দিতাম। ইকোনমিক জোনগুলো সেই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দেবে বলে মন্তব্য করেন সালমান এফ রহমান। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যখন ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসে তখন ইকোনমিক জোন নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। এবার ক্ষমতায় এসে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ বলেন, মোংলার ইকোনমিক জোনটি সুন্দরবনের কাছে। আমরা যেমন শিল্প চাই, তেমনি সুন্দরবন ও সুন্দরবনের জীব-বৈচিত্র্য রক্ষা করতে চাই। যারা এখানে বিনিয়োগ করতে চান তাদের অনুরোধ করব হলুদ কিংবা লাল ক্যাটাগরির কোনো শিল্প স্থাপনের প্রস্তাব দেবেন না।

বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন, অন্যান্য দেশ অনেক আগে শুরু করেছে। আমরা বেসিক্যালি ২০১৫ সালে কাজ শুরু করেছি, লক্ষ্য ১০০ ইকোনমিক জোন। প্রথমে মিরসরাইতে ৫৫০ একর জমি দিয়ে যাত্রা শুরু করি। এখন সেখানে ৩০ হাজার একর জমি কনফার্ম হয়েছে। মহেশখালীতে ২৫ হাজার একর জমি নিশ্চিত করা হয়েছে। বেজা ইতিমধ্যে ৬০ হাজার একর জমির ব্যাংক তৈরি করেছে। এখন শুধুই এগিয়ে চলার সময়। এক সময় এটাকে অনেকে বিশ্বাস করতে চায়নি। এখন এটা বাস্তবতা বলে মন্তব্য করেন বেজা চেয়ারম্যান।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বেজার সঙ্গে পিপিপির আওতায় সিকদার গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান পাওয়ার প্যাক ইকোনমিক জোন প্রাইভেট লিমিটেড অঞ্চলটির উন্নয়ন করছে। মোংলা বন্দরের অদূরে ২০৫ একর জমি নিয়ে গঠিত এই জোনে সড়ক যোগাযোগ, পানি সরবরাহ, বৈদ্যুতিক উপকেন্দ্র প্রশাসনিক ভবনের কাজ শেষ হয়েছে। ৪৪ শতাংশ প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। অবশিষ্ট প্লট পুরোপুরি প্রস্তত রয়েছে। এখানে ২৫ হাজার লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন পাওয়ার প্যাক ইকোনমিক জোনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রন হক সিকদার। অনুষ্ঠনে ৫টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ভূমি বরাদ্দ চুক্তি হয়, যার ৪টিই এনার্জিপ্যাকের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। এর বাইরে রয়েছে আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড ইউনিলিভারের অন্যতম পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান নাগা লিমিটেড। এছাড়া ন্যাশনাল ব্যাংক ও শিকদার ইন্স্যুরেন্সকে শাখা খোলার জন্য ছোট আকারের প্লট বরাদ্দ দেয়া হয় এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে।

যৌথ অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে মোংলা অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণ ও রক্ষাণাবেক্ষণের জন্য দেশীয় প্রতিষ্ঠান শিকদার গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান পাওয়ারপ্যাক ইকনোমিক জোনকে নিয়োগ করে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ বেজা। প্রথম ধাপে ৫ কোম্পানির কাছে ভূমি বরাদ্দ উপলক্ষে বিনিয়োগ উন্নয়ন বা ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন শীর্ষক কর্মসূচি পালন করে বেজা ও পাওয়ারপ্যাক। 

Sunday, October 13, 2019

আইএফআইসি-সমকাল শিল্প পুরস্কার পেল তরুণ উদ্যোক্তা কাজী সাজেদুর রহমান

অর্থনৈতিক রিপোর্টার: দেশের অগ্রগতির প্রবহমান ধারাকে প্রণোদনা যোগাতে ৫ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করেছে আইএফআইসি ব্যাংক ও সমকাল। এর মধ্যে উদীয়মান তরুণ উদ্যোক্তা ও সেরা এসএমই উদ্যোগ পুরস্কার পেয়েছে কেপিসি ইন্ডাস্ট্রিজ কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী সাজেদুর রহমান। শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের কার্নিভাল হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কারের চেক, সনদ ও ক্রেস্ট তুলে দেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। 


এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন আইএফআইসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ এ সারওয়ার। সভাপতিত্ব করেন সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি। পুরস্কার ঘোষণা করেন জুরি বোর্ডের সদস্য বিআইডিএসের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো নাজনীন আহমেদ।

প্রথমবারের মত ৫টি ক্যাটাগরিতে আইএফআইসি ব্যাংক-সমকাল শিল্প ও বাণিজ্য পুরস্কার-২০১৮ প্রদান করা হয়েছে। ৫ খাতে দেয়া পুরস্কারগুলো হচ্ছে- আজীবন সম্মাননা, বর্ষসেরা বৃহৎ শিল্প উদ্যোগ, বর্ষসেরা নারী উদ্যোক্তা, উদীয়মান তরুণ উদ্যোক্তা ও সেরা এসএমই উদ্যোগ। বৃহৎ শিল্প উদ্যোগ পুরস্কার পেয়েছে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ। কোম্পানির পক্ষে পুরস্কার গ্রহণ করেন ওয়ালটন গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক (বিপণন) হুমায়ুন কবির। নারী উদ্যোক্তা পুরস্কার পেয়েছেন সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার রামধানা গ্রামের মেসার্স আফিয়া খানম ফিশারিজের স্বত্বাধিকারী রুবা খানম। তরুণ উদ্যোক্তার পুরস্কার পেয়েছেন ফরচুন সুজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান। সেরা এসএমই উদ্যোগ পুরস্কার পেয়েছে কেপিসি ইন্ডাস্ট্রিজ। কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী সাজেদুর রহমান পুরস্কার গ্রহণ করেন।


অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সমকালের এ উদ্যোগ খুবই ইতিবাচক। এ পুরস্কার ব্যবসায়ীদের উৎসাহিত করবে। 

প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, আইএফআইসি ব্যাংক সমকাল সময়োপযোগী উদ্যোগ নিয়েছে। ব্যবসায়ীদের অবদানে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। তাদের সম্মাননা দেয়ায় আয়োজকদের ধন্যবাদ দেন তিনি। এ সময় চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য ব্যবসায়ীদের প্রস্তুতি নেয়ার আহবান জানান তিনি। 

আইএফআইসি ব্যাংকের এমডি শাহ এ সারওয়ার বলেন, আইএফআইসি ব্যাংক এখন ৭ লাখ গ্রাহককে সেবা দিচ্ছে। আগামী দুই-তিন বছরের মধ্যে এককোটি গ্রাহকের কাছে সেবা পৌঁছে দিতে টাই।                          

ওয়ালটন গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক হুমায়ুন কবির বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের সেরা ৫টি ব্র্যান্ডের অন্যতম হতে চায় ওয়ালটন। এ পুরস্কার তাদের উৎসাহিত করবে। 

কেপিসি ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী সাজেদুর রহমান বলেন, দেশের এসএমই উদ্যোক্তারা অনেক পরিশ্রম করে। এসএমই উদ্যোক্তাদের বিকশিত হওয়ার পথে নানা বাধা দূর করার আহ্বান জানান তিনি।

Saturday, October 12, 2019

রাজনীতি এখন ব্যবসায় পরিণত: রুমিন ফারহানা

ব্যাংকিং খাত নিয়ে উল্টোপাল্টা চলছে: সুজন (ভিডিও)

সুজনের সেমিনার, ব্যাংকিং খাত নিয়ে উল্টোপাল্টা পদক্ষেপ বন্ধ করতে হবে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার: ব্যাংকিং খাত নিয়ে উল্টোপাল্টা পদক্ষেপ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। সংগঠনটির মতে, এই খাত সংস্কার না হলে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ খারপের দিকে চলে যাবে। শুধু অর্থমন্ত্রীর টোটকা দাওয়াই দিয়ে খেলাপিঋণের ক্যানসার সারানো যাবে না। খেলাপিঋণ সমস্যা সমাধানের জন্য অবিলম্বে একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ব্যাংকিং সংস্কার কমিশন গঠন করতে হবে। গতকাল জতীয় প্রেস ক্লাবে সুজন আয়োজিত ‘ব্যাংকিং খাত নিয়ে উল্টোপাল্টা পদক্ষেপ বন্ধ করুন: ব্যাংকিং সংস্কার কমিশন গঠন করুন’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এই আহ্বান জানানো হয়। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক মইনুল ইসলাম। 
সুজন-এর সভাপতি এম হাফিজ উদ্দিন খানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের সঞ্চালনায় আলোচনা অংশ নেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর ইব্রাহীম খালেদ, লেখক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু নাসের বখতিয়ার, অধ্যাপক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইনাম আহমেদ চৌধুরী, সংরক্ষিত আসনের বিএনপি সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। 
প্রবন্ধে বলা হয়, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল চ্যালেঞ্জ দিয়েছেন, তিনি আর খেলাপিঋণ এক টাকাও বাড়তে দেবেন না। অতএব, একজন চার্টার্ড একাউন্টেন্টের চাল প্রয়োগ করে তিনি মন্দঋণ রাইট-অফ করার পদ্ধতি সহজ করে দিয়েছেন, যাতে ক্লাসিফাইড লোনের এই শিথিল পদ্ধতি প্রয়োগ করে বিভিন্ন ব্যাংক ‘মন্দঋণ রাইট-অফ করা’ বাড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়। রাইট-অফ করা মন্দঋণ বাড়ার মানেই হলো এর ফলে ক্লাসিফাইড লোন ওই পরিমাণ কম দেখানো যাবে। তিনি মন্দঋণ আদায়ের জন্যে খেলাপি ঋণগ্রহীতাকে দুই শতাংশ ঋণ প্রাথমিক কিস্তিতে পরিশোধ করে যে দশ বছরের সময় দেয়ার ব্যবস্থা করলেন, সে সুবিধা নিয়মনিষ্ঠ ঋণ ফেরতদাতারা পান না।
কিন্তু এ-ধরনের পরিবর্তন খেলাপিঋণ সমস্যাটিকে আড়াল করার পন্থা হলেও মন্দঋণ আদায় করার কোনো নিষ্ঠাবান প্রয়াসের মাধ্যমে জোরদার করার লক্ষণ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। উল্টো একজন ‘ব্যবসায়ী অর্থমন্ত্রী’ তার ঋণখেলাপি ব্যবসায়ী বন্ধুদের প্রতি মাত্রাতিরিক্ত দরদ দেখিয়ে উল্টোপাল্টা পদক্ষেপ নিয়ে চলেছেন।
প্রবন্ধে আরো বলা হয়, গত ২০১৪-১৯ মেয়াদের সরকারের সময়েও খেলাপিঋণের অবস্থা সংকটজনক থাকা সত্ত্বেও কোন রহস্যজনক কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যাংকিং সংস্কার কমিশন গঠনের ইস্যুটাকে বারবার এড়িয়ে গেছেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর ক্ষমতাগ্রহণের ৯ মাস অতিক্রান্ত হলেও এখনো তিনি কমিশন গঠনের ঘোষণা দেননি, কিন্তু কেন? এদ্দিনে তার বোঝা উচিত যে অর্থমন্ত্রীর টোটকা দাওয়াই দিয়ে খেলাপিঋণের ক্যানসার সারানো যাবে না। দেশে বেশিরভাগ ব্যাংকের অবস্থা ভালো নয়। যার মূল কারণ খেলাপি ঋণ। এমন অবস্থায় প্রয়োজনীয় বিশ্লেষণের ভিত্তিতে সুপারিশ করার জন্যে অবিলম্বে একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ব্যাংকিং সংস্কার কমিশন গঠন করার দাবি জানানো হয়। 
দেশে ব্যাংকঋণ নিয়ে একটা ‘পাতানো খেলা’ চলছে দাবি করে প্রবন্ধে অধ্যাপক মইনুল ইসলাম বলেন, সমস্যার প্রকৃত রূপটি সরকার, ব্যাংকার এবং ঋণখেলাপি সবারই জানা আছে। সমস্যার সমাধানের উপায় সম্পর্কেও এই তিন পক্ষের সবার স্পষ্ট ধারণা আছে। কিন্তু জেনে শুনেই সরকার সমাধানের পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করছে না। ফলে, এখনো দেশের ব্যাংকিং খাতের প্রধান সমস্যা রয়ে গেছে রাঘববোয়াল ঋণখেলাপিদের কাছে আটকে থাকা বিপুল খেলাপিঋণ। এই ঋণখেলাপিদের প্রায় সবাই ‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’, মানে যারা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন যে, তারা তাদের ঋণ ফেরত দেবেন না। কারণ তাদের রাজনৈতিক প্রতিপত্তি এবং আর্থিক প্রতাপ দিয়ে তারা শুধু ব্যাংকিং খাত নয় দেশের সংসদকেও দখল করে ফেলেছেন।
এক পরিসখ্যান তুলে ধরে জানানো হয়, গত ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের মাধ্যমে সংসদের নির্বাচিত সদস্যদের ৬১.৭ শতাংশই ব্যবসায়ী। তাদের সিংহভাগই ব্যাংকের মালিক/পরিচালক। সংসদের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সদস্য পকৃতপক্ষে ঋণখেলাপি হলেও বিভিন্ন পন্থা অনুসরণ করে তারা তাদের খেলাপিঋণ আড়াল করে সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছেন, বলে অভিযোগ করা হয়।

মূল প্রবন্ধে মইনুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে দেশের খেলাপি ঋণ ১ লাখ কোটি টাকার কিছু বেশি। আসলে দেশের খেলাপি ঋণ ৩ লাখ কোটি টাকা। ব্যাংক খাতের ৩০ শতাংশই খেলাপি। এই সমস্যা সমাধানে শক্তিশালী কমিশন গঠন করতে হবে। শীর্ষ খেলাপি প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করতে হবে। খেলাপি ঋণ ট্রাইব্যুনাল করে প্রতিটি ব্যাংকের শীর্ষ ঋণ ১০ খেলাপিকে বিচার করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বাতিল জরুরি। দেশে এত ব্যাংকের প্রয়োজন নেই। তাই ব্যাংকগুলো একীভুত করতে হবে।
মইনুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রামের একজন ব্যবসায়ী নাকি এখন ৭টি ব্যাংকের ওপর মালিকানা প্রতিষ্ঠা করে ফেলেছেন। ব্যাংকের মালিকানায় একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার সুযোগ অন্য কোনো দেশে চালু আছে কি না, আমার জানা নেই।
অধ্যাপক মইনুল বলেন, ব্যাংক পরিচালকদের নিজেদের মধ্যে ঋণ নেয়া বন্ধ করতে হবে। ব্যাংক পরিচালকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসকে বেআইনি ঘোষণা করতে হবে। যাতে তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্ষমতাকে অন্যায়ভাবে প্রভাবিত করতে না পারে।
এই অর্থনীতিবিদ খেলাপি ঋণ কমাতে কয়কটি পরামর্শ দিয়েছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- খেলাপি ঋণ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে প্রত্যেক ব্যাংকের শীর্ষ ১০ জন খেলাপিকে দ্রুত শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা। ব্যাংকিং খাতের জন্য আলাদা ন্যায়পাল নিয়োগ, মন্দ ঋণ আদায়ের জন্য ‘ডেট রিকভারি বা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি’ গঠন, অর্থঋণ আদালতে কোনো ঋণ খেলাপির বিরুদ্ধে চূড়ান্ত রায় হলে জামানত বা বন্ধকী সম্পত্তি নিলাম করার জন্য মামলা করার যে নিয়ম রয়েছে, তা বাতিল করা, প্রতিটি ব্যাংকের শীর্ষ দশ ঋণ খেলাপি প্রতিষ্ঠানের নাম এক বছরের বেশি তালিকাভুক্ত হলে ওই প্রতিষ্ঠানের মূল ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করার পাশাপাশি তার পাসপোর্ট জব্দ করা ইত্যাদি।

আলোচনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, বিএনপি, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি কেউ কাউকে পছন্দ করে না। কিন্তু ঋণ খেলাপি সৃষ্টিতে সবাই একমত। এখন জিডিপি প্রবৃদ্ধি নিয়ে গর্ববোধ করা হয়। বঙ্গবন্ধুর আমলেও ৮ শতাংশের কাছাকাছি জিডিপি ছিল। তিনি কখনো এসব নিয়ে গর্ববোধ করতেন না। আয় বৈষম্য কমিয়ে আনতে বলতেন। আর বর্তমানে জিডিপি প্রবৃদ্ধিকে উন্নয়নের পারিমাপক হিসেবে ধরা হচ্ছে। চোর ডাকাতের দেশে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। চরম বৈষম্যে পৌঁছেছে বাংলাদেশ। তিনি বলেন, ৯৫ জনকে শোষণ করে ৫ জনের প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। তিনি ‘সমাজ পরিবর্তনের ডাক’ দিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান। তা না হলে এই সমস্যা থেকে বেড় হওয়া যাবে না।

সুজন সভাপতি এম হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘যুবলীগ নেতা সম্রাট আঞ্জুমানের কাছে ২ কোটি টাকা চাঁদা চেয়েছিল, একবছর কাজ আটকে ছিল। পরে প্রধানমন্ত্রীর কানে এ খবর পৌঁছানোর পর এ সমস্যার সমাধান হয়েছে। তাই রাজনীতিকে কলুষমুক্ত করতে হবে। রাজনীতি যদি শুদ্ধ না হয় তাহলে কিছুই ভালো হবে না। জিডিপিতে উন্নয়ন দেখছি, কিন্তু আমি তো আমাদের অবস্থানের কোনো উন্নয়ন দেখি না। ব্যাংকিং খাত এখন দুর্বৃত্তদের কবলে। 

কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, যার যা ইচ্ছা, তাই করছে। ব্যক্তিগতভাবে রাষ্ট্রকে ব্যবহার করছে। কিন্তু কিছুই বলার ক্ষমতা আমাদের নেই। বাংলাদেশ এখন সারাবিশ্বের মধ্যে এক নম্বর ঋণখেলাপির দেশে পরিণত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ভালো হয়, যদি আমরা ব্যাংকে টাকা না রাখি। মানুষ বোকার মতো ব্যাংকে টাকা রাখছে। আর ঋণখেলাপিদের সুবিধা করে দিচ্ছে। তিনি বলেন, ক্যাসিনোর সম্রাট একজন, ব্যাংকের সম্রাট আরেকজন। এই সম্রাটকে ধরতে পারলে সবকিছু ঠিক হবে।

বিএনপির সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, ব্যাংকের ওপর থেকে যখন মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস নষ্ট হয়, তখন দেশের অর্থনীতি ধসে পড়ে। এই সরকার ঋণখেলাপিবান্ধব সরকার। তিনি বলেন, রাজনীতি করা এখন একটি বড় ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। তার প্রমাণ ক্যাসিনো সম্রাট যুবলীগ নেতা ঈসমাইল হোসেন সম্রাট। তিনি বলেন, এই সম্রাট আওয়ামী লীগের একটি অঙ্গ সংগঠনের একজন নেতা হয়ে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। সে কিন্তু এমপি বা মন্ত্রী কেউ নন। শুধু রাজনীতি করে নায়ক হয়েছেন। গত কয়েক বছরে যত বড় বড় আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটেছে তার সবগুলো এই সরকারের সময়ে হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। 

অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার বলেন, রাজনৈতিক কর্মী যখন ব্যাংক চালাতে আসবে, তখন অবশ্যই ব্যাংকের নিয়ম পালন করা সম্ভব নয়। সরকার রাজনৈতিক নেতাদের ব্যাংক পর্ষদে নিযুক্ত করে সবচেয়ে বড় ভুল করেছে বলে তিনি মনে করেন।

Monday, October 7, 2019

8m came out of poverty in 6yrs: WB

Online Report: Around eight million people in Bangladesh have come out of poverty between 2010 and 2016, according to the latest poverty assessment report of World Bank.
In the rural areas, 90 per cent of the poverty reduction took place whereas situation in the urban areas remained the same as before in the given timeline, the WB report said.  
Bangladesh has progressed significantly in reducing poverty and improving living conditions, mostly driven by labour income, the WB said in its report on Bangladesh Poverty Assessment which was released this morning.
The report shows an increase in economic growth but the rate of poverty reduction declined since 2010, said a WB press release. 
The World Bank programme was held at a hotel in Dhaka on Monday, October 7, 2019. Photo: Courtesy
At a programme in Amari Dhaka hotel in Gulshan of the capital, the World Bank released the report.
Finance Minister AHM Mustafa Kamal, who attended the programme as the chief guest, said in his speech that more one crore people will get jobs by 2030 taking down the current poverty rate to 3 per cent.
The government has undertaken need and technology based initiatives to curb inequality, the finance minister added. 
"The progress that Bangladesh has made in reducing poverty in the last decade is remarkable," said Mercy Tembon, World Bank country director for Bangladesh and Bhutan.
"But, with one out of four people still living in poverty, the country needs to do more, especially in addressing the new frontiers of poverty. For example, tackling urban poverty is critical since at current trends more than half of the poor Bangladesh is projected to live in the urban areas by 2030," quoting her the press release reads.
This poverty reduction is uneven across the country, the WB said in its report.
"Since 2010, the historical gap in poverty between eastern and western divisions re-emerged in the west, poverty increased in Rangpur division, stagnated in Rajshahi and Khulna, while in the east, poverty declined moderately in Chattogram, and rapidly in Barishal, Dhaka and Sylhet."

বিল গেটসের সেকেন্ডে আয় ৩৮০ ডলার

মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস এখন বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ ধনী ব্যক্তি। ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তাঁর নিট সম্পদমূল্য ছিল ১০৫ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার। মাইক্রোসফট থেকে সরে এসেছেন বিল গেটস। তিনি এখন বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনকেই বেশি সময় দিচ্ছেন। আসুন জেনে নেই বিল গেটস নিয়ে দারুণ পাঁচ তথ্য।

১. সেকেন্ডে আয় ৩৮০ ডলার

বিজনেস ইনসাইডার বিল গেটসের আয় নিয়ে মজার কিছু তথ্য বের করেছে। যেমন: প্রতি সেকেন্ডে তাঁর আয় ৩৮০ ডলার, এই হিসাবে প্রতি মিনিটে আয় ২২ হাজার ৮৩১ ডলার। তাঁর নিট সম্পদের মূল্য ক্রোয়েশিয়া, কম্বোডিয়া ও বাহামার মোট দেশজ উৎপাদনের সমান।

একজন গড় আমেরিকান, যাঁর ব্যাচেলর ডিগ্রি আছে, সারা জীবনে গড়ে আয় করেন ২২ লাখ ডলার। আর বিল গেটস এই অর্থ মাত্র দেড় ঘণ্টায় আয় করেন। এখন তিনি যদি প্রতিদিন ১০ লাখ ডলার খরচ করবেন বলে ঠিক করেন, তাহলে লাগবে ২৮৫ বছর।

২. দান প্রায় ৩৬ বিলিয়ন ডলার

জনপ্রিয় ম্যাগাজিন ফোর্বস-এর দেওয়া তথ্য হচ্ছে, বিল গেটস এখন পর্যন্ত তাঁর নিট সম্পদের ২৭ শতাংশ জনহিতে দান করেছেন। টাকার অঙ্কে তা ৩৫ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার। তিনি মূলত মাইক্রোসফটের শেয়ার বিক্রি করে তা দান করেছেন। তবে নিজের সম্পদ ও অন্যান্য পারিবারিক ফাউন্ডেশন মিলিয়ে তাঁর দানের পরিমাণ আরও বেশি—সাড়ে ৪৫ বিলিয়ন ডলার।

৩. এবার আয় ১৭ বিলিয়ন ডলার

বিল গেটস ২০১৯ সালে এখন পর্যন্ত সম্পদ বাড়িয়েছেন ১৭ বিলিয়ন ডলার। তিনি তাঁর সম্পদের ৬০ শতাংশ বিনিয়োগ করেছেন নানা ধরনের মূলধনি শেয়ারে। আর বিনিয়োগের ক্ষেত্রে তাঁকে আগ্রাসীই মনে করা হয়। কেননা, এক আমেরিকান গড়ে নিজ সম্পদের ৩২ শতাংশ বিনিয়োগ করে থাকেন।

৪. বাড়ির নাম জানাডু ২.০

সেরা চলচ্চিত্র মানেই অরসেন ওয়েলসের সিটিজেন কেইন। সিনেমার মূল চরিত্র চার্লস ফসটারের কাল্পনিক বাড়ির নাম ছিল ‘জানাডু’। বিল গেটস তাঁর বাড়ির নামও রেখেছেন ‘জানাডু ২.০’। ওয়াশিংটনের মেডিনায় অবস্থিত বাড়িটির মূল্য ১২ কোটি ৭০ লাখ ডলার। এর আয়তন ৬৬ হাজার বর্গফুট।

৫. পরেন ১০ ডলারের ঘড়ি, কিন্তু...

বিল গেটসের হাতঘড়িটির দাম মাত্র ১০ ডলার। নিজেই নিজের প্লেট পরিষ্কার করেন। কিন্তু তাঁর নিজের লাইব্রেরিতে আছে এক মহামূল্যবান সম্পদ। লেওনার্দো দা ভিঞ্চির নোটবুক। এর নাম কোডেক্স লেইচেস্টার। এর মূল্য ৩ কোটি ৮ লাখ ডলার।

বিশ্বব্যাংকের মতে দারিদ্র্য কমেছে অসমভাবে, অর্থমন্ত্রী বললেন ঠিক নয় ।।

Sunday, October 6, 2019

অস্থির ডলারের বাজার, দাম বেড়ে হয়েছে ৮৭ টাকা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার: অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে বৈদেশিক মুদ্রাবাজার। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলার বিক্রি হচ্ছে ৮৪ টাকা ৫০ পয়সা। কিন্তু বাস্তবে আরো ১ থেকে ২ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। এর বাইরে হঠাৎ করে খোলাবাজারেও চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় প্রতি ডলার কিনতে সাধারণ গ্রাহকের ব্যয় করতে হচ্ছে সাড়ে ৮৬ থেকে ৮৭ টাকা পর্যন্ত। অর্থাৎ সাধারণ মানুষ, যারা ভ্রমণ করতে বিদেশে যাচ্ছেন, তাদের ডলার কিনতে হচ্ছে ৮৭ টাকা দরের উপরে। এক মাস আগেও খোলাবাজারে প্রতি ডলারের বিনিময় মূল্য ছিল ৮৫ টাকা ৫০ পয়সা। এক মাসের ব্যবধানে তা বেড়েছে প্রায় দেড় টাকা।

ব্যাংক সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, বেসরকারি অনেক বড় আমদানির দায় পরিশোধ হচ্ছে। এ কারণে অনেককে খোলাবাজার থেকে ডলার কিনতে হচ্ছে। তবে খোলাবাজারে সরবরাহ তেমন নেই। এতে দাম বেড়ে গেছে। এছাড়া, আমদানি-রপ্তানির ভারসাম্য না থাকা, বিদেশে অর্থ পাচারসহ নানা কারণে ডলারের বাজারে এ সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে রপ্তানি বাণিজ্য ও প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স পাঠানোর বিষয়ে কিছুটা উৎসাহিত হলেও বেড়ে যাচ্ছে পণ্য আমদানির ব্যয়। কারণ আমদানির জন্য বেশি মূল্যে ডলার কিনতে হচ্ছে। ফলে খাদ্যশস্য, ভোগ্যপণ্য, জ্বালানি তেল, শিল্পের কাঁচামালসহ সব আমদানি পণ্যের ব্যয় বাড়ছে। সর্বপরি মূল্যস্ফীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ক্রমবর্ধমান চাহিদা ও জোগানের মধ্যে পার্থক্য বেড়ে যাওয়ায় সঙ্কট বেড়ে যাচ্ছে। এদিকে রপ্তানিকারক ও প্রবাসীদের সুবিধা দিতে সামনে ব্যাংকিং চ্যানেলেও ডলারের দাম বাড়ানোর দাবি উঠেছে। 

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে, বাজার স্থিতিশীল রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ডলার লেনদেনের ওপর সীমা বেঁধে দিলেও সেটা প্রকৃতপক্ষে কার্যকর হচ্ছে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ব্যাংকগুলো আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের যে মূল্যের তথ্য দিচ্ছে বাস্তবে তার চেয়ে বেশি মূল্যে কেনাবেচা হচ্ছে। অনেক ব্যাংক বাধ্য হয়ে নীতিমালার ফাঁকফোকর দিয়ে বেশি দরে লেনদেন করছে।

এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিভিন্ন ব্যাংক, খোলাবাজার ও মানি চেঞ্জারের লেনদেন পর্যবেক্ষণেও ডলারের দর বাড়ার তথ্য পাওয়া গেছে। পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, পুরো জুলাই মাসে প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ৩০ পয়সা দরে বিক্রি হয়। আগস্টে তা বেড়ে ৮৬ টাকা ৫০ পয়সা পর্যন্ত হয়। গত সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে কোনো কোনো দিনে প্রতি ডলার ৮৭ টাকায়ও বিক্রি করে মানি চেঞ্জারগুলো। আমদানি চাপ থাকায় হঠাৎ করে ডলারের দাম বেড়ে গেছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। 

জানা গেছে, প্রতি মাসেই এলএনজি আমদানির জন্য পরিশোধ করতে হচ্ছে ১১ কোটি ডলার। আর বিপিসির দায় বাবদ প্রতি মাসেই পরিশোধ করতে হচ্ছে ২৫ কোটি ডলার। আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদা বেড়ে গেছে। সামনে এ চাহিদা আরো বাড়বে। বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদা ও জোগানের মধ্যে পার্থক্য বেড়ে যাওয়ায় বৈদেশিক মুদ্রার সঙ্কট সামনে বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। অন্যদিকে বাজারে ডলারের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংকের বেঁধে দেয়া ডলারের দর কার্যকর করছে না ব্যাংকগুলো। 

কারণ হিসেবে রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানান, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংক থেকেও আর আগের মতো ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করছে না। ফলে পণ্য আমদানির দায় পরিশোধ করতে বাজার থেকে হয় তাদের ডলার কিনতে হচ্ছে। অথবা একটি নির্ধারিত কমিশনের বিপরীতে ধার নিতে হচ্ছে। আর এ সুযোগটি কাজে লাগাচ্ছে কিছু কিছু ব্যাংক। তারা ইচ্ছামাফিক ডলার মূল্য আদায় করছে। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের বেঁধে দেয়া মূল্য ধরেই ফরওয়ার্ড ডিলিং করছে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলো। ফরওয়ার্ড ডিলিং হলো- একটি ব্যাংকের পণ্যের আমদানি দায় মেটাতে ১০ কোটি ডলারের প্রয়োজন। চাহিদার দিনের ৪ থেকে ৫ দিন আগেই বাংলাদেশ ব্যাংক বেঁধে দেয়া মূল্য ধরে ডলার কেনা হলো। এর সঙ্গে বিনিময় ঝুঁকি বা অতিরিক্ত প্রিমিয়াম যুক্ত হচ্ছে। যেমন- ৪ দিন আগে ৮৪ টাকা ৫০ পয়সা দরে ডলার কেনা হলো। লেনদেনের দিন ২ শতাংশ অতিরিক্ত ধরে অর্থাৎ ৮৬ টাকায় ডলার লেনদেন করছে। এভাবেই বাজারে বাংলাদেশ ব্যাংক বেঁধে দেয়া দর কার্যকর করা হচ্ছে না। 

এদিকে খোলাবাজারেও ডলারের মূল্য অস্থির হয়ে পড়েছে। এর কারণ হিসেবে একজন মানিচেঞ্জার ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, ক্যাসিনো, টেন্ডারবাজিসহ চলমান অসামাজিক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে চলমান অভিযানের কারণেই অনেকেই আর নগদ টাকা রাখতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন না। এতে অনেকেই বাজার থেকে ডলার কিনছেন। আবার অনেকেই বিদেশে যাচ্ছেন। এতে খোলাবাজারে হঠাৎ করে ডলারের চাহিদা বেড়ে গেছে। নগদ ডলারের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় খোলাবাজারে দাম মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ২ টাকা বেড়ে গেছে। গত দুই সপ্তাহ আগেও প্রতি ডলার বিক্রি হয়েছে ৮৫ টাকা। বর্তমানে তা ৮৭ টাকার উপরে বিক্রি করেছেন কোনো কোনো মানিচেঞ্জার। এভাবেই খোলাবাজারে ডলারের চাহিদা বেড়ে গেছে। 

ব্যাংক সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ব্যাংকের বাইরে বড় অঙ্কের টাকা মজুত রয়েছে। সাম্প্রতিক দুর্নীতিবিরোধী অভিযানকে ঘিরে যে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে, তাতে একটি গোষ্ঠীর মধ্যে বিদেশে যাওয়ার প্রবণতা বেড়ে গেছে। আবার অনেকে দেশে থাকলেও টাকা পরিবর্তন করে ডলার করে রাখছেন। এ ক্ষেত্রে বেশির ভাগ লোকই খোলাবাজার থেকে ডলার কিনছেন। কারণ ব্যাংক থেকে ডলার কিনতে গেলে তার জন্য নানা কাগজপত্র লাগে। কিন্তু খোলাবাজার থেকে সহজে টাকা দিয়ে ডলার কেনা যায়। এ পরিস্থিতিতে খোলাবাজারে ডলারের চাহিদা বাড়লেও সে অনুযায়ী সরবরাহ নেই। এ কারণেই চাপ বেড়ে গেছে।

ব্যাংকগুলোর তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ ২ অক্টোবর আমদানি দায় মেটাতে ব্যবসায়ীদের থেকে দেশি ও বিদেশি খাতের বেশিরভাগ ব্যাংক ৮৪ টাকা ৫০ পয়সা নিয়েছে। তবে একটি ব্যাংক আমদানি দায় মেটাতে ডলারের মূল্য নিয়েছে ৮৪ টাকা ৭৫ পয়সা। অন্যদিকে ব্যাংকগুলোর ঘোষিত মুদ্রা বিনিময় হার অনুযায়ী, ২ অক্টোবর রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংক ও সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক নগদ ডলার বিক্রি করেছে ৮৭ টাকা। একই দিন ৮৬ টাকা ৭০ পয়সা দরে নগদ ডলার বিক্রি করেছে বিদেশি ব্যাংক আল ফালাহ। ৮৬ টাকা ৬০ পয়সা দরে নগদ ডলার বিক্রি করেছে জনতা, বিডিবিএল, অগ্রণী ও এনসিসি ব্যাংক।

পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হওয়ার আগেই বাংলাদেশ ব্যাংক বাজার কারসাজিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগ নিলে অনাকাঙিক্ষত ঘটনা এড়ানো সম্ভব হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

এ বিষয়ে অর্থনীতিবিদ ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলারের মূল্য দিয়েছে ৮৪ টাকা ৫০ পয়সা। এখন ব্যাংকগুলো যদি ৮৭ টাকায় নগদ ডলার বিক্রি করে তাহলে এটা অনেক বেশি। যেসব ব্যাংক ডলারের দাম বেশি নিচ্ছে এটা কেন নিচ্ছে তা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দেখা উচিত। কারণ এর প্রভাবে যেন ডলারের বাজার অস্থির না হয় এজন্য আগেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি আরো বলেন, ডলারের দাম বাড়লে দ্বিমুখী প্রভাব পড়ে। যেমন- ডলারের দাম বাড়লে রপ্তানিকারকরা লাভবান হয়। তবে সমস্যায় পড়ে আমদানিকারকরা। কারণ আমদানি ব্যয় বাড়লে স্থানীয় বাজারের পণ্যের দাম বেড়ে যায়। চাপ পড়ে মূল্যষ্ফীতির উপর। এতে করে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যায়। ফলে সবচেয়ে কষ্ট হয় গরীরের। 

বিদেশগামী তামিম সরকার বলেন, এত দামে আগে কখনো তিনি ডলার কেনেননি। আগে সর্বোচ্চ প্রতি ডলারের জন্য ৮৬ টাকা দিয়েছেন। আর এখন মতিঝিলের আশা মানি চেঞ্জার থেকে ৮৭ টাকা দরে ডলার কিনেছেন। 

ILO Global Business Forum Highlights the Importance of a Sustainability Vision for Bangladesh’s RMG Sector

Representatives from the world’s largest retails brands met with leading figures from the country’s ready-made garment (RMG) sector at the Annual Bangladesh Business Forum in Dhaka last Wednesday, 2 October 2019.
Over 350 garment-sector representatives from the government, employers’ and workers’ organisations, development partners, global brands and retailers, manufacturers, civil society and academia came together at a high-level event in Dhaka.
Staff reporter: Under the theme ‘Driving Sustainable Change’, the forum was organised by the Better Work Bangladesh (BWB) programme, a joint collaboration between the International Labour Organization (ILO) and the International Finance Corporation (IFC).

Today, Bangladesh’s $34 billion a year garment export industry is the second largest in the world (behind China) with more than 4,500 factories, employing over four million workers.

Discussions centred on the need for a globally competitive garment industry supported by improved labour market governance, effective social dialogue and responsible sourcing practices to ensure decent work and generate long-term prosperity for the industry. A number of speakers also highlighted ongoing issues facing the industry, including how BWB and its brand partners can continue to address gender and OSH non-compliances.
Over 350 RMG stakeholders, including representatives from the government, employers’ and workers’ organisations, development partners, global brands and retailers, manufacturers, civil society and academia attended the high-level event.



Saturday, October 5, 2019

The secret to Bangladesh’s economic success? The SheikhHasina factor

[This article, written by Salman Fazlur Rahman, the prime minister's adviser for private industry and investment, was first published by the World Economic Forum as part of the India Economic Summit.]

 

Nobody disputes the economic credentials of Sheikh Hasina's government - the Asian Development Bank (ADB) is the latest member of a growing list of international institutions attesting to Bangladesh's economic success. The ADB ranked Bangladesh as the fastest-growing economy in the Asia-Pacific region, eclipsing China, Vietnam and India. At the same time, our improvements in many socio-economic indicators are another object of envy to our neighbours.

 

Propelled by a robust manufacturing sector and an enormous boom in infrastructure, Bangladesh has set a target of becoming a developed nation by 2041 to coincide with the platinum jubilee of its independence. Many commentators have called the goal ambitious, but even the government's staunchest critics would think twice before questioning its plausibility. There has been a sea change in attitude from 2006 when our surpassing of Pakistan's growth rate was dismissed as a fluke.

 

Ten years ago, if somebody had told me that Bangladesh would progress this far, I wouldn't have believed it. Now, however, I am in a position to explain the phenomenon. While trying to decipher Bangladesh's economic success, pundits cite several crucial factors, including fulfilling electricity demands, infrastructural development, political stability and food self-sufficiency. But none of these achievements has been easy. When Sheikh Hasina's government tried to introduce and implement its policies, it often faced enormous political risks and implications.

 

Take the electricity crisis for example. When the Awami League re-assumed power a decade ago, the country was grappling with suffocating power outages. These days, however, we produce more electricity than we need at night and are close to eradicating any forms of power shortages once and for all.

 

When she returned to power in 2009, Sheikh Hasina knew that the energy shortage first needed to be mitigated to a tolerable extent, before embarking on long-term plans. As a temporary measure, she decided to allow private companies to build small-range power plants, known as quick-rental power plants. The decision received a barrage of criticism from many quarters — from opposition parties and economists to the press and think tanks — intimidating many in the bureaucracy.

 

But Sheikh Hasina refused to back down from what she thought was the right step forward. She defended her decision forcefully, making necessary amendments to clear any legal ambiguity, and focused on its implementation. Nearly 10 years on, no one doubts that the decision was instrumental in solving the persistent energy crisis.

 

Data from World BankData from World BankIn a way, this chapter also illustrates how much faith Sheikh Hasina puts in the private sector. She is aware of the country's socialist legacy, which is extremely wary of private sector inroads in critical areas, but she also knows the virtues of the free market.

When she first came to power in 1996, she broke the monopoly in the telecommunications industry, paving the way for intense competition between companies. As an obvious consequence, we now enjoy one of the cheapest mobile data and lowest mobile phone usage costs in the world, which, among others, has helped our globally celebrated mobile financial services to flourish.

 

While in power, Sheikh Hasina has opened up many sectors traditionally reserved for the public sector to the private sector, including health, banking, higher education, TV and even export processing and economic zones. At the same time, her government has substantially widened and expanded welfare programmes to lift the poorest and most neglected section of the population and increased subsidies for other crucial elements of the economy such as agriculture. Her development philosophy is a blend of capitalistic and socialistic virtues.

 

For the greater part of our history, the world knew Bangladesh only for natural calamities, wrenching poverty, famine and political violence. While these events and aspects merited attention, they were certainly not a reflection of the aspiration of our nation. The bigger story should have been the resilience with which our people withstood countless natural disasters and crises.

 

Regretfully, downplaying this resilience was the approach adopted by successive governments to ensure the undisrupted flow of foreign aid. A former finance minister once infamously argued that self-sufficiency in food could take a back seat to incoming foreign support. As a person deeply familiar with Bangladesh's state machinery, I know that such a mindset held back our economic progress for so long.

 

Indeed, the single most decisive factor behind Bangladesh's startling success is that Sheikh Hasina has infused a sense of confidence in our national psyche. Oftentimes, she has done so while defying great odds. The Padma Bridge, which the government decided to self-fund after the World Bank's withdrawal is, perhaps, a perfect example of this.

 

Observers may have overlooked the Prime Minister's tenacious, bold, fearless and pragmatic approach, but no explanation of Bangladesh's success would be complete or comprehensive without taking into account the Sheikh Hasina factor.