Wednesday, March 24, 2021

যেসব শেয়ারে বেশি ভুগছে বিনিয়োগকারীরা - Outlook Bangla

যেসব শেয়ারে বেশি ভুগছে বিনিয়োগকারীরা - Outlook Bangla: যেসব শেয়ারে বেশি ভুগছে বিনিয়োগকারীরা 


দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই অনেক যাচাই-বাছাই করে যোগ্য কোম্পানির প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) অনুমোদন দেয়া হয় বলে দাবি করে আসছে অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিশন। শুরুতে কয়েকটি কোম্পানির আইপিও আবেদন বাতিলের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীরা মধ্যে সেই দাবি বিশ্বাসও করে। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে সেই বিশ্বাসে কিছুটা হলেও ফাঁটল ধরেছে। এখনো আগের মতোই দূর্বলতার কারনে নতুন শেয়ারগুলোতে অস্থিরতা বিদ্যমান।

নতুন কমিশন ভালো কোম্পানির আইপিও দেয় বলে দাবি করে আসলেও এরমধ্যে দূর্বল কোম্পানির আইপিও দেওয়া হয়েছে। এমন কোম্পানির আইপিও দেওয়া হয়েছে, যে কোম্পানি কোটি কোটি টাকার ভূয়া ল্যান্ড ডেভেলপমেন্টবাবদ সম্পদ দেখিয়েছে। এমনকি চুক্তিভিত্তিক কাজ করায় একটি জাহাজ নির্মাণকারী কোম্পানির আইপিও বাতিল করলেও কন্ট্রাকটারের কাজ করা আরেক কোম্পানির অনুমোদন দিয়ে বৈষম্য সৃষ্টি করার উদাহরন আছে। এছাড়া ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে অ্যাকাউন্টসের কোম্পানিও আইপিও অনুমোদন পেয়েছে এই কমিশনের সময়ে। যা লেনদেনে আসার পরে কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর ধরে রাখতে না পারার পেছনে একটি কারন।

এরইমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নতুন কমিশনের আইপিও নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়ে গেছে। এছাড়া দূর্বল কোম্পানির আইপিও নিয়ে অনেক বাজার সংশ্লিষ্টরাও সমালোচনা করছেন। তবে নতুন কমিশন হওয়ায় এখনই কেউ প্রকাশ্যে এ বিষয়ে কিছু বলছেন না।

বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, লেনদেনের কয়েকদিনের মধ্যে দর পতনের পেছনে দূর্বল কোম্পানির আইপিও অনুমোদনের পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের নির্বুদ্ধিতাও কাজ করছে। দূর্বল কিংবা সবল, যেকোন ধরনের নতুন কোম্পানির শেয়ার পেতে বিনিয়োগকারীদের মরিয়া হয়ে উঠা শেয়ারবাজারের একটি বড় সমস্যা। যাতে নতুন শেয়ারগুলো মৌলভিত্তি ছাড়াই টানা দর বাড়ে। কিন্তু একসময় অযৌক্তিক দর বৃদ্ধির কারনে তার পতন হতেই হয়।

শেয়ারবাজারে উত্থান-পতন স্বাভাবিক। কখনো শেয়ারের দাম কমবে, কখনো বাড়বে-এমনটিই হয়ে থাকে। কিন্তু সব নতুন শেয়ারের ভিন্নচিত্র। লেনদেনের শুরুতে টানা দর বৃদ্ধি পায় এবং পরবর্তীতে টানা পতন হয়। এই পতনে শেয়ারগুলো আর কখনো আগের অবস্থানে ফিরে যায় না। এতে করে আইপিওধারীরা লাভবান হলেও সেকেন্ডারির বিনিয়োগকারীদের নিশ্চিত লোকসান হয়।

শেয়ারবাজার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের নির্ধারিত দরের শেয়ারও লেনদেনের শুরুতে টানা বৃদ্ধি পায়। এটা খুবই অবাক করার বিষয়। যেখানে বুক বিল্ডিংয়ে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের নির্ধারিত দরকেই অতিমূল্যায়িত বলে অভিযোগ ওঠে, সেখানে সেইসব শেয়ারও লেনদেনে এসে টানা দর বৃদ্ধি পায়।

দেখা গেছে, নতুন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পরে গত ২০ মার্চ পর্যন্ত সময়ে ১১টি কোম্পানির লেনদেন শুরু হয়েছে। যার সবগুলো শেয়ার লেনদেনের প্রথম দিন থেকে টানা বাড়ে। কিন্তু একমাত্র ওয়ালটন ছাড়া কোনটিই সেই দর ধরে রাখতে পারেনি। প্রত্যেকটি শেয়ারের দর কয়েকদিনের ব্যবধানে নেমে এসেছে।

ওই ১১টি কোম্পানির মধ্যে সবচেয়ে বেশি দর পতন হয়েছে ১৯ জানুয়ারি লেনদেন শুরু হওয়া এনার্জিপ্যাক পাওয়ারের। ৩৫ টাকা ইস্যু মূল্যের শেয়ারটি টানা বেড়ে ২৫ জানুয়ারি ৯২.৬০ টাকা হয়ে যায়। অর্থাৎ ওই সময় শেয়ারটির দর বাড়ে ৫৭.৬০ টাকা বা ১৬৫ শতাংশ। কিন্তু সেই শেয়ারটি ২০ মার্চ ৪৬.৫০ টাকায় নেমে এসেছে। এ হিসেবে শেয়ারটির ৫০ শতাংশ দর পতন হয়ে গেছে।

নিম্নে কোম্পানিগুলোর শেয়ার দরের বিস্তারিত তুলে ধরা হল-
কোম্পানির নামলেনদেন শুরুইস্যু মূল্য (টাকা)প্রথম মাসের সর্বোচ্চ দর (টাকা)২০ মার্চের দর (টাকা)পতনের হার
ওয়ালটন হাইটেক২৩ সেপ্টেম্বর৩১৫১০০২.৭০১২৬৫.৩০২৬.১৯%
এনার্জিপ্যাক পাওয়ার১৯ জানুয়ারি ২১৩৫৯২.৬০৪৬.৫০(৪৯.৭৮%)
ডমিনেজ স্টিল২ ডিসেম্বর১০৪৩.৩০২২.৬০(৪৭.৮১%)
এসোসিয়েটেড অক্সিজেন২৫ অক্টোবর১০৬৫.৬০৩৭.৬০(৪২.৬৮%)
ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স২১ ডিসেম্বর১০৫৩.৮০৩৪.১০(৩৬.৬২%)
রবি আজিয়াটা২৪ ডিসেম্বর১০৭০.১০৪৬.৬০(৩৩.৫২%)
লুব-রেফ৯ মার্চ ২১৩০৬০.৭০৪৩.১০(২৯%)
এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স২৪ আগস্ট১০৩২২৪.৩০(২৪.০৬%)
মীর আখতার২ ফেব্রুয়ারি ২১৬০১০০.২০৭৬.৮০(২৩.৩৫%)
ইজেনারেশন২৩ ফেব্রুয়ারি১০৩৯.৪০৩২.৫০(১৭.৫১%)
লাভেলো১০ ফেব্রুয়ারি১০২৫২১.৮০(১২.৮০%)
তবে দেশের জায়ান্ট ইলেকট্রনিক্স কোম্পানি ওয়ালটন হাইটেক একমাত্র ব্যতিক্রম কোম্পানি। এই কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেনের প্রথম মাসে যে পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছিল, এখন তারচেয়ে অনেক বেশিতে অবস্থান করছে। শুধুমাত্র এই শেয়ারটির ধস নামেনি। অথচ এই শেয়ারটি নিয়ে কমিশনের এক কমিশনারও বিরোধীতা করেছিলেন। যিনি কোম্পানিটির আইপিওতে আপত্তি জানিয়ে নোট দেন।

৩১৫ টাকা ইস্যু মূল্যের ওয়ালটনের শেয়ারটি লেনদেনের প্রথম মাসে সর্বোচ্চ ১০০২.৭০ টাকায় উঠে। যে শেয়ারটি ২০ মার্চ আরও বেড়ে দাড়িঁয়েছে ১২৬৫.৩০ টাকায়।    

Tuesday, March 16, 2021

নৌপথে প্রাণের খাদ্যপণ্যের প্রথম চালান গেলো ভারতে - Outlook Bangla

নৌপথে প্রাণের খাদ্যপণ্যের প্রথম চালান গেলো ভারতে - Outlook Bangla


বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে নৌ প্রোটোকল চুক্তির আওতায় নৌপথে প্রথমবারের মতো খাদ্যপণ্যের ৪০ হাজার কার্টন লিচি ড্রিংকস-এর চালান ভারতের কলকাতায় পাঠালো প্রাণ গ্রুপ। মঙ্গলবার নরসিংদীর পলাশ উপজেলায় প্রাণ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক থেকে একটি কার্গো ভারতের কলকাতার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।

পণ্যবোঝাই জাহাজটি নরসিংদীর শীতলক্ষ্যা থেকে যাত্রা শুরু করে। জাহাজটি নারায়ণগঞ্জ, খুলনার শেখবাড়িয়া হয়ে ভারতে প্রবেশ করবে এবং কলকাতা বন্দরে গিয়ে পৌঁছাবে। ৭১০ কিলোমিটার দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে জাহাজটির গন্তব্যে পৌঁছাতে ৩-৪ দিন সময় লাগবে।

রপ্তানি কার্যক্রম উদ্বোধন করেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সাংসদ আনোয়ারুল আশরাফ খান, বাণিজ্যসচিব জাফরউদ্দিন, নৌসচিব মেসবাহ উদ্দিন চৌধুরী ও প্রাণ–আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী।

নৌ প্রতিমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে দশ হাজার কিলোমিটার নৌ চলাচলের উপযোগী করার প্রতিশ্রুতি ছিল। এখন পর্যন্ত আড়াই হাজার কিলোমিটার হয়ে গেছে। বাকি কাজ চলছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, নৌ পথে ভারতসহ অন্যান্য দেশে পণ্য রপ্তানি বাড়াতে হবে। তার অংশ হিসেবে আমরা নৌ পথে পণ্য রপ্তানি বাড়াচ্ছি। সুনীল অর্থনীতিতে বিনিয়োগে বেসরকারি খাতকে এগিয়ে আসার আহ্বান করেন তিনি।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আহসান খান চৌধুরী বলেন, নৌপথে খাদ্যপণ্য রপ্তানির মাধ্যমে ভারতে বাংলাদেশের বাণিজ্য আরও ব্যাপক প্রসার ঘটবে। নৌপথে পণ্য পরিবহন হলে ৩৫ শতাংশ ব্যয় কমে যাবে। যে ২৫ হাজার কার্টন লিচি ড্রিঙ্ক পাঠানো হলো নৌপথে, তা যদি সড়কপথে পাঠানো হতো, তাহলে ৪০টি ট্রাক লাগত।

বাণিজ্যসচিব বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ হলে বাংলাদেশের ৫০০ থেকে ৭০০ কোটি ডলার রপ্তানি কমে যাবে। সেই ক্ষতি পুষিয়ে দিতে প্রাণ–আরএফএলকে পণ্যের রপ্তানির বাড়ানোর তাগিদ দেন তিনি। প্রাণ–আরএফএল এখন যে পরিমাণ রপ্তানি, তার চেয়ে ২০০ কোটি ডলার বেশি রপ্তানির পরামর্শ দেন।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, সড়কপথের চেয়ে নৌপথে পণ্য পরিবহন খরচ ৩০ শতাংশ কম। সড়কপথে অনেক জায়গায় রাস্তা খারাপ হওয়ায় পণ্য নষ্ট কিংবা পণ্যের গুণগত মান নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি থাকে। কিন্তু নৌপথ এক্ষেত্রে নিরাপদ। ট্রাকে পণ্য পরিবহনে একাধিকবার লোডিং ও আনলোডিংয়ের প্রয়োজন পড়ে। এতে পণ্যের গুণগত মান নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু নৌপথে পণ্য পরিবহনে পণ্যের গুণগতমান ভালো থাকে।


সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, সড়কপথে পণ্য পাঠানোর জন্য অনেক ট্রাক লাগে যা ব্যবস্থা করতে রপ্তানিকারকদের বেশ বেগ পেতে হয়। এছাড়া ট্রাকভাড়াও বিভিন্ন সময় ওঠানামা করে। এতে খরচ বেড়ে যায়। কিন্তু নৌপথে একটি বার্জে একসঙ্গে অনেক পণ্য পাঠানো যায়। নদীপথে অবকাঠামোগত কোনো সমস্যা থাকলে তার সমাধান করে এই পথে পণ্য রপ্তানি করলে নিঃসন্দেহে দেশের রপ্তানি বাড়বে এবং উভয় দেশ এর মাধ্যমে উপকৃত হবে।

প্রাণ গ্রুপ-এর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, প্রতিবেশী দেশ ভারতে প্রাণ গ্রুপ-এর রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৯৭ সালে। তখন পার্শ্ববর্তী রাজ্য ত্রিপুরায় যায় প্রাণ চানাচুর। সেখান থেকে এখন ভারতের ২৮টি রাজ্যের প্রতিটিতেই প্রাণ পণ্য রপ্তানি হচ্ছে।

তারা জানান, ১৩০ কোটি মানুষের দেশ ভারতে প্রাণ পণ্যের বিশাল বাজার রয়েছে। প্রতিবেশী দেশ হওয়ায় ভারতের আবহাওয়া, মানুষের খাদ্যাভ্যাসসহ বিভিন্ন বিষয়ে বাংলাদেশিদের সঙ্গে অনেক মিল এবং সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে দেশটিতে বাংলাদেশের খাদ্যপণ্যের ভালো করার সুযোগ রয়েছে। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ ও ভারতের সেভেন সিস্টারস খ্যাত সাত রাজ্যে বাংলাদেশে উৎপাদিত প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ-এর পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল বলেন, প্রাণ প্রতিনিয়ত প্রতিবেশী দেশটির মানুষের চাহিদা উপযোগী পণ্য সরবরাহের চেষ্টা করে যাচ্ছে এবং দুদেশের মধ্যে থাকা কিছু প্রতিকূলতা কাটিয়ে উঠে রফতানির পরিমাণ বাড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রতিবছর ভারতে প্রাণ-এর রপ্তানি গড়ে ১০ শতাংশ হারে বাড়ছে। এছাড়া বিশ্বে প্রাণ-এর খাদ্যপণ্যের মোট রপ্তানির প্রায় ৩০ শতাংশ হয় ভারতে। এখন নদীপথ যুক্ত হওয়ায় ভারতে খাদ্যপণ্য রপ্তানিতে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে চলেছে।

ভারতে প্রাণ বর্তমানে দেড় শতাধিক পণ্য রফতানি করে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য পণ্য হলো- ফ্রুট ড্রিংকস, চিপস, স্ন্যাকস, বিস্কুট, ক্যান্ডি, সস, কেচাপ, নুডলস্, সস, জেলি ও মশলা। প্রাণ গ্রুপ গ্রুপ-এর পণ্য যায় ভারতের আসাম, পশ্চিমবঙ্গ, উত্তর প্রদেশ, বিহার, ত্রিপুরা, গুজরাট, পাঞ্জাব, তামিলনাড়ু ও কেরালা রাজ্যে। ভোমরা, বুড়িমারী, সুতারকান্দি, আখাউড়া ও ডাউকি স্থলবন্দর এবং চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর দিয়ে প্রাণ-এর এসব পণ্য রপ্তানি হয়।


উল্লেখ্য, করোনার কারণে ২০২০ সালে ভারতে পণ্য রপ্তানি তুলনামূলক কম হয়েছে। এ কারণে এ অর্থবছরে ভারতে প্রাণ-এর রপ্তানি কম ছিল। তবে এখন রপ্তানি কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়েছে।

প্রাণ গ্রুপ-এর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, ভারতে বিভিন্ন দেশের নামি-দামি ব্র্যান্ডের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে দেশটির বিখ্যাত সব চেইনশপ ও অনলাইনে স্থান করে নিচ্ছে প্রাণ-এর পণ্য, যা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়। এসব সুপারশপ ও অনলাইন হলো ডি-মার্ট, স্পেন্সর রিটেইল, মোর রিটেইল, মেট্রো ক্যাশ অ্যান্ড ক্যারি, বিগ বাস্কেট অনলাইন, অ্যামাজন ইন্ডিয়া, গ্রোফারস ও উড়ান অনলাইন স্টোর।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বর্তমানে বিশ্বের ১৪৫টি দেশে প্রাণ-এর প্রায় ৫০০ ধরনের পণ্য রপ্তানি হচ্ছে। রপ্তানি বাণিজ্যে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ সরকারের তরফ থেকে পরপর ১৬ বার জাতীয় রপ্তানি ট্রফি অর্জন করেছে।

Friday, March 5, 2021

অটোমোবাইল উৎপাদনের আঞ্চলিক কেন্দ্র হবে বাংলাদেশ: শিল্পমন্ত্রী - Outlook Bangla

অটোমোবাইল উৎপাদনের আঞ্চলিক কেন্দ্র হবে বাংলাদেশ: শিল্পমন্ত্রী - Outlook Bangla: অটোমোবাইল উৎপাদনের আঞ্চলিক কেন্দ্র হবে বাংলাদেশ: শিল্পমন্ত্রী 


শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, র্বতমানে অটোমোবাইল শিল্প উন্নয়ন নীতি প্রণয়নের কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। শিগগিরই এর খসড়া অনুমোদন করে তা চূড়ান্ত করা হবে। এর মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে আঞ্চলিক অটোমোবাইল শিল্প উৎপাদনের কেন্দ্রে পরিণত করা হবে।

বৃহস্পতিবার ধামরাইয়ে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে ইফাদের নিজস্ব কারখানায় এসি, নন-এসি লাক্সারি বাস তৈরি কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ওই অনুষ্ঠানে ইফাদ গ্রুপের চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমেদ টিপুর সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান, ঢাকা-২০ আসনের এমপি আলহাজ্ব বেনজির আহমেদ এবং বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান মুন্সী শাহাবুদ্দিন আহমেদ।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘অটোমোবাইল শিল্পের বিকাশে প্রকৃত অর্থেই নীতিমালা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ গাড়ি সংযোজনকারী দেশের গণ্ডি পেরিয়ে গাড়ি উৎপাদনকারী দেশের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবে।’

শিল্পমন্ত্রী নূরুল বলেন, জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে সাশ্রয়ী মূল্যে বিশ্বমানের গাড়ি দেশেই উৎপাদন করা বর্তমান সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। এ লক্ষ্য অর্জনে শিল্প মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে অটোমোবাইল শিল্পের বিকাশে একটি নীতিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে। এ শিল্পের উত্তরোত্তর উন্নয়ন এবং টেকসই বিকাশের লক্ষ্যে এ নীতি প্রণয়ন করা হচ্ছে।

তিনি আরো জানান, বর্তমানে অটোমোবাইল শিল্প উন্নয়ন নীতি প্রণয়নের কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। শিঘ্রই এর খসড়া অনুমোদন করে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সাথে পরামর্শক্রমে তা চূড়ান্ত করা হবে। এর মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে আ লিক অটোমোবাইল শিল্প উৎপাদনের কেন্দ্রে উন্নীত করা হবে। এ লক্ষ্য অর্জনে সরকার অটোমোবাইল শিল্প উন্নয়নে সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে। এ লক্ষ্য অর্জনে তিনি সরকারের পাশাপাশি অটোমোবাইল শিল্প উদ্যোক্তাদেরকেও এগিয়ে আসার আহবান জানান।

অটোমোবাইল শিল্পের বিকাশে প্রকৃত অর্থেই নীতিমালা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিক রাখবে। তিনি বলেন, ২০৪১ সালে উন্নত আয় ও শিল্প সমৃদ্ধ দেশ গড়তে সরকার দেশে শিল্প কারখানা স্থাপনের উপর গুরুত্ব দিয়ে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সব ধরনের সহায়তা প্রদান করছে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান এমপি বলেন, বর্তমান সরকার শিল্পবান্ধব। যার ফলে সাভার ও ধামরাই এ শিল্পায়ন হয়েছে, এলাকার উন্নয়ন হয়েছে এবং এ অঞ্চলের দারিদ্র্য বিমোচন হয়েছে। তিনি শিক্ষাব্যবস্থা/ প্রতিষ্ঠান/অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ার বিষয় বিভাগ খোলা আহ্বান জানান।


বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য বেনজির আহমেদ বলেন, দেশে যেভাবে শিল্প উন্নয়ন ঘটছে, তাতে ২০৪১ সালের আগেই বাংলাদেশ উন্নত আয়ের দেশে পরিণত হবে। তিনি নতুন প্রজন্মকে টেকনিক্যালি আরো সাউন্ড হওয়ার আহ্বান জানান।

৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে এসি, নন-এসি লাক্সারি বাস উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করেছে ইফাদ অটোস লিমিটেড। কারখানাটিতে ভারতের অশোক লেল্যান্ড ব্র্যান্ডসহ বিভিন্ন মডেলের গাড়ি তৈরি হবে। এর মাধ্যমে বছরে ১ হাজার বাস তৈরির টার্গেট নিধারণ করছে প্রতিষ্ঠানটি।

ইফাদ জানায়, এখন থেকে এই কারখানায় তৈরি হবে আধুনিক ও বিশ্বমানের এসি, নন-এসি বাস। এতে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ের পাশাপাশি দেশে শিল্পায়ন বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে।

জানা গেছে, চার বছর আগে এই কারখানায় বাস ও ট্রাকের সংযোজন শুরু হয়েছিল। এবার এখানেই তৈরি হবে অত্যাধুনিক এসি, নন-এসি বাস ও ট্রাকের কেবিন। যেহেতু এই কারখানায় বিভিন্ন মডেলের বডি তৈরি করা হবে। তাই উৎপাদন খরচও আমদানি করা গাড়ির চেয়ে কম হবে।

ইফাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দেশে পরিবহন খাতে লাক্সারি এসি ও নন-এসি বাস সরবরাহ বাড়ানোর উদ্দেশ্যে বছরে ১ হাজারেরও বেশি গাড়ির বডি তৈরি করা হবে। ভবিষ্যতে এ সংখ্যা আরো বাড়ানো হবে। এর আগে বছরে ১২ হাজার বাস ও ট্রাকের বডি সংযোজনের লক্ষ্য নিয়ে ২০১৭ সালে একই কারখানার ভিন্ন প্ল্যান্টে যাত্রা শুরু হয় ইফাদ অটোস লিমিটেডের সংযোজন কারখানা। সেখানেও ভারতের অশোক লেল্যান্ড ব্র্যান্ডের বিভিন্ন মডেলের গাড়ি সংযোজন করা হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে ইফাদ গ্রুপের চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমেদ টিপু জানান, বেসরকারী উদ্যোগে ইতিহাসে নব দিগন্তের সূচনা করেছে ইফাদ অটোস। এতদিন এই কারখানায় শুধু গাড়ি সংযোজন করা হতো। এখন বিলাসবহুল এসি, নন-এসি বাসের বডি তৈরী করা হবে। তিনি জানান, বর্তমানে বিদেশ থেকে গাড়ি আমদানী করতে বেশ সময় লাগে। এই কারখানা চালু হওয়ার ফলে ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী দ্রুততম সময়ে গাড়ি সরবরাহ করা সম্ভব হবে।

ইফতেখার আহমেদ টিপু বলেন, বাংলাদেশে বিগত কয়েক বছরে ভারী যানবাহনের ক্ষেত্রে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। চাহিদা বাড়ার সাথে সাথে আমদানীকৃত গাড়িতে আমদানী বাবদ বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হচ্ছে। বিষয়টি বিবেচনায় রেখে ইফাদ অটোস লিমিটেড বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় ও দেশে শিল্প বান্ধব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে এই কারখানা স্থাপন করেছে। তিনি আরো জানান, ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই কারখানা গড়ে তোলা হয়েছে। যেখানে লাক্সারী এসি ও নন-এসি বাস তৈরী হবে। বছরে ১ হাজারেরও বেশী গাড়ির বডি তৈরী করা হবে এবং ভবিষ্যতে এ সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

তিনি বলেন, যেহেতু এই কারখানায় বিভিন্ন মডেলের এসি-নন এসি বাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান সংযোজন হবে, তাই তার উৎপাদন খরচ আমদানীকৃত তৈরী গাড়ির চেয়েও কম হবে। এর সুবিধা গাড়ীর মালিক ও যাত্রীরা ভোগ করবেন। দেশী-বিদেশী বিশেষজ্ঞের সমন্বয়ে তৈরী হবে নতুন গাড়ি। শুধু বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে না, দেশের অনেক ছোট ছোট বিশেষায়িত কারখানায় তাদের উৎপাদিত মানসম্পন্ন বিভিন্ন পণ্য এই সংযোজন কারখানায় সরবরাহের দ্বার উন্মোচন হবে।

জাতীয় অর্থনীতিতে এই সংযোজন কারখানা বিশেষ ভুমিকা পালন করবে। যেমন- দেশীয় কাঁচামালের সঠিক ব্যবহার, দক্ষ কর্মি সৃষ্টি, নতুন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা।

Wednesday, March 3, 2021

জেনে নিন দক্ষতা অর্জনের ১০ কৌশল


১. কোন বিষয়ে আপনার কৌতূহল


যে বিষয় আপনাকে কৌতূহলী করে, সেটিই শিখতে চেষ্টা করুন। যা কিছুতে আমাদের ভালো লাগা বা ভালোবাসা কাজ করে, সেগুলোই আমরা দ্রুত শিখতে পারি। আর যেসব বিষয় খুব একটা টানে না, সেগুলো শিখতেও বেগ পেতে হয়।


২. এক নৌকায় পা দিন


প্রতিটি দক্ষতা অর্জনেই বেশ পরিশ্রম ও সময় ব্যয় করতে হয়। তাই অনেকগুলো দক্ষতা অর্জনের প্রকল্প যদি আপনি একসঙ্গে নেন, তাহলে উল্লেখযোগ্য ফলাফল পেতে দীর্ঘ সময় লেগে যাবে। আর এ থেকে তৈরি হতে পারে হতাশা। তাই একটি দক্ষতা নিয়ে কাজ করুন। আপনার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু যদি হয় একাধিক বা আপনি একসঙ্গে অনেকগুলো বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে চান, তবে তার মধ্যে থেকে যেটা আপনার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে, সেটি বেছে নিন। বাকিগুলো পরে শেখার জন্য একটি নোটবুকে টুকে রাখুন।


৩. কতটুকু শিখতে চান


একটি নির্দিষ্ট সময়ে কতটুকু শিখলে আপনি সন্তুষ্ট হবেন? এই প্রশ্নের উত্তরটি আগেভাগে ঠিক করে রাখা ভালো। তাহলে বুঝতে পারবেন, একটি নির্দিষ্ট সময়ে আপনি কতটুকু শিখতে চান। টাইপিংয়ের ক্ষেত্রে আপনার লক্ষ্য হতে পারে, প্রথম ২০ ঘণ্টায় মিনিটে ১৫ শব্দ টাইপ করার দক্ষতা অর্জন। আবার ভাষা শেখার ক্ষেত্রে প্রথম ২০ ঘণ্টায় আপনার লক্ষ্য হতে পারে কিছু সহজ বাক্য গঠন।


৪. ভাগ করে ফেলুন


পুরো দক্ষতা অর্জনের প্রক্রিয়াটিকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করে ফেলুন। এরপর একবারে একটি বিষয়ে মনোযোগ দিন। এই প্রক্রিয়া অনুসরণ করলে ‘কোনটা ছেড়ে কোনটা করব’—এই দ্বিধা আপনাকে আটকাতে পারবে না। ধরা যাক, আপনি একটি নতুন ভাষা শিখতে চান। এ ক্ষেত্রে আপনি পুরো ভাষা শেখার প্রক্রিয়াটিকে ভাগ করতে পারেন: বর্ণমালা, সংখ্যা, শব্দ, বাক্যগঠন বা ব্যাকরণ, শোনা, বলা, লেখা, পড়া ইত্যাদি। তারপর আপনার কাজ হলো একটি নির্দিষ্ট সময়ে একটি নির্দিষ্ট দক্ষতার প্রতি নজর দেওয়া।


৫. প্রয়োজনীয় উপকরণ সংগ্রহ


প্রয়োজনীয় উপকরণগুলো হাতের কাছে নিয়ে নিন। সাইকেল চালানো শিখতে চাইলে নিয়ে নিন একটি সাইকেল। ভাষা শিখতে চাইলে ভাষা শেখার বই বা অ্যাপ সংগ্রহ করুন। আবার যদি কম্পিউটার প্রোগ্রামিং শিখতে চান, তবে বন্দোবস্ত করুন বই, টিউটোরিয়াল আর একটি কম্পিউটারের।


৬. দূর করুন অনুশীলনের বাধা


অনুশীলনের সময় যেন প্রযুক্তি বা কোনো কিছু বাধা হয়ে না দাঁড়ায়, সেদিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন। টেলিভিশন, ইন্টারনেট বা স্মার্টফোন যেন আপনার মনোযোগে ব্যাঘাত না ঘটায়, সে ব্যবস্থা আগে থেকেই করে রাখুন। নিজের পরিবেশকে সাজিয়ে ফেলুন, যেন নিয়মিত অনুশীলন সহজ হয়ে যায়।


৭. সময় আলাদা করুন


নির্দিষ্ট একটি সময় অনুশীলনের অভ্যাস করুন। আপনি হয়তো ভাবছেন কী করে সময় বের করব? একটা নোটবুক নিন। রোজ কখন কী করলেন—সব টুকে রাখুন। দেখবেন অনেক কাজেই আপনার সময় ব্যয় হচ্ছে, যা তেমন প্রয়োজনীয় নয়। সেসব কাজ বাদ দিয়ে দিন। যে সময়টা বেঁচে যাবে, সে সময়টিকে কাজে লাগান নতুন দক্ষতা অর্জনের জন্য।


৮. আয়না দেখা


ভালো প্রতিফলন দেখতে পেলে আমরা সেই কাজটি আবার করতে চাই। টাইপিং শেখার সময় টাইপিং টেস্ট দিয়ে দেখুন আপনি কতটা দক্ষতা অর্জন করেছেন। কিংবা নতুন ভাষা শেখার সময় নিজের পড়ার বা বলার গতি রেকর্ড করে শুনুন। নিজের ব্যায়ামের পরিমাণ রেকর্ড করুন স্মার্টফোনের অ্যাপে।


৯. ঘড়ি ধরে অল্প করে


শুরুর দিকে একটা অসুবিধার সম্মুখীন হই আমরা। অল্প অনুশীলন করেই মনে হয়, আমি বুঝি অনেক পরিশ্রম করে ফেলেছি। এই সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসার উপায় হলো, ঘড়ি ধরে অনুশীলন করা। স্টপওয়াচে ২০ মিনিট সময় নির্ধারণ করুন। এবার স্টপওয়াচ চালু করে টানা ২০ মিনিট অনুশীলন করে যান। এরপর বিরতি নিন। এভাবে রোজ মাত্র চার–পাঁচ ধাপে অনুশীলন করলে ভালো ফল পেতে পারেন।


১০. পরিমাণ ও গতিতে জোর দিন


শুরুর দিকে অনুশীলন নিখুঁত করার একটা প্রবণতা তৈরি হতে পারে। এ থেকে আসতে পারে হতাশা। এই হতাশাকে কাটানোর জন্য মনোযোগ দিন অনুশীলনের পরিমাণের ওপর। হিসাব করে দেখুন, আপনার গতি কতটা বেড়েছে। আপনি কত কম সময়ে কতটুকু করতে পারছেন। মোটামুটি ভালো, অর্থাৎ ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ পারলে আপনার গতি বাড়িয়ে দিন।


‘হালাল সাবান’ খ্যাত আলমগীর এসিআই ছেড়ে আকিজে


স্টাফ রিপোর্টার :এসিআই কনজ্যুমার ব্র্যান্ডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ আলমগীর আকিজ ভেঞ্চারসে যোগ দিচ্ছেন। সোমবার আকিজে তাঁর প্রথম কর্মদিবস ছিল। সৈয়দ আলমগীর আকিজ ভেঞ্চারসের গ্রুপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে যোগ দিচ্ছেন।


দেশের করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর সিইওদের মধ্যে সৈয়দ আলমগীর স্বনামখ্যাত। তাঁর দেওয়া স্লোগান ‘শতভাগ হালাল সাবান’ একসময় একটি নতুন সাবানের ব্র্যান্ডকে বাজারের শীর্ষে তুলেছিল। এ ছাড়া ভোগ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বা ফাস্ট মুভিং কনজ্যুমার গুডস (এফএমসিজি) খাতের নানা পণ্যকে জনপ্রিয় করেছেন তিনি।


মার্কিন বিপণন বিশেষজ্ঞ কোটলারের বিখ্যাত বই ‘প্রিন্সিপালস অব মার্কেটিং’–এর একটি সংস্করণে হালাল সাবানের বিপণন কৌশলটি একটি ‘কেস স্টাডি’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল।


এসিআই ছেড়ে আকিজে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে সৈয়দ আলমগীর বলেন, ‘এসিআই এখন সুপ্রতিষ্ঠিত। অন্যদিকে আকিজ ভেঞ্চারস নতুন নতুন অনেক খাতে বিনিয়োগ করতে চাইছে। এ জন্যই সেখানে যাওয়া।’


সৈয়দ আলমগীর ১৯৯৮ সালের জানুয়ারিতে এসিআই কনজ্যুমার ব্র্যান্ডসে নির্বাহী পরিচালক হিসেবে যোগ দেন। কনজ্যুমার ব্র্যান্ডসের অধীনে গ্রুপটির খাদ্য ও নিত্যব্যবহার্য বিভিন্ন পণ্যের ব্যবসা দেখাশোনা করতেন তিনি।


১৯৭৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট থেকে এমবিএ করার পর প্রথম চাকরি হিসেবে মে অ্যান্ড বেকারে (এখনকার সানোফি) যোগ দেন সৈয়দ আলমগীর। সেখানে ১৬ বছর থাকার পর যমুনা গ্রুপে যোগ দেন তিনি। ২০১৯ সালে প্রথম আলোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সৈয়দ আলমগীর জানিয়েছিলেন, যমুনায় যোগ দিয়ে তিনি বৃহত্তর পরিসর পেয়েছিলেন। ১১টি কোম্পানি তাঁর অধীনে ছিল, যেগুলোকে তিনি বড় করেন। যমুনা থেকে এসিআইতে যোগ দিয়ে তিনি কনজ্যুমার ব্র্যান্ডসের ব্যবসা বড় করেন।


আকিজ ভেঞ্চারসের চেয়ারম্যান সেখ শামীম উদ্দিন। এই প্রতিষ্ঠানের অধীনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর, হবিগঞ্জ ও মানিকগঞ্জে বড় বিনিয়োগের চিন্তা রয়েছে কর্তৃপক্ষের। 


বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) সূত্র জানায়, গত ডিসেম্বরে আকিজ বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরে রাসায়নিক, স্বাস্থ্যসুরক্ষা পণ্য, হালকা প্রকৌশল, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ এবং খাদ্য ও পানীয় খাতে ৩ হাজার ৪৮০ কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রস্তাব দেয়। তারা প্রায় ১৮টি কারখানা করবে, এ জন্য জমি চেয়েছে ৩০৭ একর।


সৈয়দ আলমগীর বলেন, আকিজে গেলেও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পর্ষদে পরিচালক হিসেবে তিনি থাকবেন।

Tuesday, March 2, 2021

তিন হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে এখন বড় উদ্যোক্তা


অনলাইন ডেস্ক: কুমিল্লার গোমতী নদীর তীরে তৈরি হচ্ছে মুঠোফোন, মুঠোফোনের ব্যাটারি, চার্জার, পাওয়ার ব্যাংকসহ ইলেকট্রনিকসের নানা পণ্য। মাত্র তিন হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে স্বপ্নবান এক যুবক এক দশক আগে গড়ে তোলেন বিশাল এক কর্মযজ্ঞ। দেশে মুঠোফোনের ব্যাটারি, চার্জার ও পাওয়ার ব্যাংক তৈরিতে এক অগ্রগণ্য প্রতিষ্ঠান হালিমা টেলিকম। কর্মবীর ওই যুবকের নাম আবুল কালাম হাসান ওরফে টগর। স্বল্প পুঁজি নিয়ে ধীরে ধীরে ব্যবসা সম্প্রসারণ করেছেন তিনি। দেশের ৬৪ জেলায় তাঁর প্রতিষ্ঠানের ইলেকট্রনিকসামগ্রী পাওয়া যাচ্ছে। শুধু ব্যবসা নয়, পাড়া–মহল্লায় যেসব মেয়ে অন্যের বাসায় কাজ করে সামান্য টাকা পেতেন, তাঁদের প্রশিক্ষণ দিয়ে তিনি কারখানায় কাজে লাগিয়েছেন। তাঁর এ প্রতিষ্ঠানে এখন অন্তত ৯০০ ছেলেমেয়ে কাজ করছেন। এখন তাঁর স্বপ্ন কারখানার তৈরি সামগ্রী বিদেশে ব্যাপকভাবে রপ্তানি করা।


জীবনসংগ্রামের শুরু


সময়টা ছিল ১৯৯৮ সাল। আবুল কালাম হাসানের বয়স তখন ২২ বছর। একদিন বাড়ি থেকে বেরিয়ে হোটেল বয় হিসেবে কাজ নেন সিরাজগঞ্জের একটি হোটেলে। একপর্যায়ে মনে হলো, এভাবে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব না। জমানো তিন হাজার টাকা নিয়ে ঢাকায় চলে আসেন। রাজধানীর ফার্মগেটসহ বিভিন্ন এলাকায় গ্রামীণফোনের মোবাইলের প্রিপেইড কার্ড বিক্রি শুরু করেন। এই সময়েই ঢাকায় গ্রামীণফোনের এক কর্মকর্তার সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। তিনি তাঁকে নিজ শহর কুমিল্লায় ফিরে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে গ্রামীণফোনের অনুমোদিত সাব–ডিলার করার প্রতিশ্রুতি দেন। ১৯৯৯ সালে আবুল কালাম হাসান নিজের শহর কুমিল্লায় ফিরে আসেন এবং আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুদের কাছ থেকে আর্থিক সহযোগিতা নিয়ে গ্রামীণফোনের সঙ্গে যুক্ত হন। গ্রামীণফোনের সিম বিক্রির ব্যবসা শুরুর প্রথম দিনই চালু হয় গ্রামীণফোনের প্রিপেইড প্যাকেজ। ওই সিমের চাহিদা ছিল ব্যাপক। তখন একশ্রেণির ব্যবসায়ী বাড়তি টাকা নিয়ে সিম বিক্রি করত। কিন্তু আবুল কালাম হাসান নির্ধারিত দামেই সিম বিক্রি করতেন বলে মানুষের মধ্যে তাঁর প্রতি আস্থা বেড়ে যায়। পরে তিনি গ্রামীণফোনের ডিস্ট্রিবিউটর হন। গ্রামীণফোন থেকে তখন সেরা বিক্রেতারও পুরস্কার পেয়েছেন।


গ্রামীণফোনের সিমের ব্যবসা করতে গিয়ে পুরো জেলার মোবাইল ব্যবসায়ীরা তাঁর কাছে মোবাইল ফোনের আনুষঙ্গিক পণ্য বা অ্যাকসেসরিজ এনে দেওয়ার দাবি তোলেন। এরপর ঢাকা থেকে মুঠোফোনের যন্ত্রপাতি এনে ব্যবসাটা আরও বাড়ান তিনি। একটি সাইকেল কেনেন তিনি। সাইকেলে করে দোকানে দোকানে গিয়ে মুঠোফোনের চার্জারসহ বিভিন্ন সামগ্রী সরবরাহ করা শুরু করেন। এ সময়েই আবুল কালাম হাসানের মাথায় নিজেই কিছু করার কথা এল। ওই ভাবনা থেকে ২০১০ সালে পাড়ি জমান চীনে। সেখানে মোবাইল ব্যাটারি, চার্জার, পাওয়ার ব্যাংক তৈরির বিভিন্ন কারখানা পরিদর্শন করেন, একই সঙ্গে জেনে নেন মোবাইলের অ্যাকসেসরিজ তৈরির কৌশল। আবুল কালাম হাসান জানান, ‘চীনে গিয়ে দেখতে পেলাম বাংলাদেশে সবাই নকিয়া ও স্যামসাংয়ের তৈরি পণ্য এনে বিক্রি করে। এতে মুনাফা কম হয়। এরপর দেশে এসে স্বল্প অভিজ্ঞতা নিয়ে ২০১০ সালেই মায়ের নামে চালু করি হালিমা টেলিকম।’


যেভাবে শুরু


২০১০ সালে চীন থেকে ফেরার সময় কিছু কাঁচামাল নিয়ে আসেন টগর। এরপর তিনি চারজনকে নিজেই প্রশিক্ষণ দেন। প্রশিক্ষণের পর মোবাইল চার্জার ও ব্যাটারি বানানো শুরু করেন। কিন্তু বাংলাদেশে এই প্রযুক্তি বা কারিগরি দিক সম্পর্কে কারও তেমন কোনো ধারণা ছিল না। ফলে সামান্য অভিজ্ঞতা নিয়ে শুরু করতে গিয়ে লোকসান গুনতে হয়। কিন্তু হতাশ না হয়ে চারজনকে নিয়েই আবার শুরু করেন তিনি। এবার মোবাইল ফোনের চার্জার ও ব্যাটারি ভালো বাজার পায়। আর তিনিও কর্মীর সংখ্যা বাড়াতে শুরু করেন। ব্যবসাও বাড়তে থাকে। দেশে হালিমা টেলিকমের ব্যাটারি ও চার্জারের সুনাম ছড়িয়ে পড়ে।



একপর্যায়ে আবুল কালাম হাসান গোমতী নদীর তীরে চানপুর এলাকায় জায়গা কেনেন। সেখানে ছয়তলা ভবন নির্মাণ করেন। ৩০ হাজার বর্গফুটের ওই ভবনে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে ব্যাটারি, চার্জার ও পাওয়ার ব্যাংক তৈরির কাজ। প্রতিদিন ওই কারখানায় গড়ে ৫০ হাজার মোবাইল চার্জার, ২০ হাজার ব্যাটারি ও দুই হাজার পাওয়ার ব্যাংক তৈরি হয়। এরপর নিজস্ব গাড়িতে করে দেশের বিভিন্ন জেলায় ওই সামগ্রী বাজারজাতকরণের জন্য পৌঁছানো হয়। আবুল কালাম হাসান বলেন, ‘আমার কারখানায় ৩.৪ / ২.৪ / ২ এমএএইচ চার্জার, ১০০০ এমএএইচ থেকে শুরু করে ২৬০০ এমএএইচ ব্যাটারি ও ১০ হাজার এমএএইচ পর্যন্ত পাওয়ার ব্যাংক বানানো হচ্ছে।’


কারখানার শ্রমিক নুসরাত জাহান, ইমরান হোসেন, মিলি বেগম একই পরিবারের সদস্য। তিনজনেই ২৫ হাজার টাকা মাসিক বেতন পান। তাঁরা বলেন, ‘আগে আমরা অতি নিম্নমানের কাজ করতাম। এখন হালিমা টেলিকমে কাজ করে ভালো বেতন পাচ্ছি। পরিবারকে টাকা নিয়ে ভালোভাবেই চলতে পারছি।’


২০১৫ সালেই সারা দেশে আমার প্রতিষ্ঠানের তৈরি চার্জার, ব্যাটারি ও পাওয়ার ব্যাংক এক নম্বরে চলে আসে। সাফল্যের শীর্ষে পৌঁছাতে আমাকে পুরো দেশ অন্তত ৫০ বার ঘুরতে হয়েছে। বর্তমানে সারা দেশে ৩৭৫ জন ডিলার, ৪০০ বিক্রয়কর্মী মাঠে আছেন।

আবুল কালাম হাসান


কুমিল্লা সরকারি মহিলা কলেজের অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সালমা বেগম বলেন, এই কারখানার প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এখানে পিছিয়ে পড়া ও অনগ্রসরমাণ নারীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ কর্মী বানানো হয়। শুধু ব্যবসা নয়, সমাজের মানুষের জন্য কাজ করা হয়। এটা একধরনের সামাজিক ব্যবসা। গ্রামের মেয়েরা ইলেকট্রনিকসের কাজ করছে। এটা অনেক বড় ব্যাপার।


আবুল কালাম হাসান যা বলেন


চারজন দিয়ে কারখানা শুরু করি। এখন মোবাইল চার্জার, ব্যাটারি ও পাওয়ার ব্যাংক তৈরি করছে ২৭৫ জন মেয়ে ও ১৭৫ জন ছেলে। এদের প্রশিক্ষণ আমিই দিই। এদের মধ্য থেকে অতি প্রতিভাবান একজনকে নেতৃত্বে আনি, যে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। সবাই মিলে দক্ষ কর্মী তৈরি করি। এই কারখানার কর্মীদের প্রাতিষ্ঠানিক কোনো শিক্ষা নেই। তাঁদের প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ কর্মী করা হয়। হালিমা আমার মায়ের নাম। ওই নামেই আমি ব্র্যান্ডিং শুরু করি। কিন্তু ব্যবসায়ীরা নাম নিয়ে কেমন জানি করত। পরে আমি ডিস্ট্রিবিউটর নিয়োগ দিয়ে বাজারজাত শুরু করি। পুরো দেশের আনাচকানাচে ঘুরে আমার তৈরি জিনিস কেনার জন্য ব্যবসায়ীদের উদ্বুদ্ধ করি।


আবুল কালাম হাসান আরও বললেন, ২০১৫ সালেই সারা দেশে আমার প্রতিষ্ঠানের তৈরি চার্জার, ব্যাটারি ও পাওয়ার ব্যাংক এক নম্বরে চলে আসে। সাফল্যের শীর্ষে পৌঁছাতে আমাকে পুরো দেশ অন্তত ৫০ বার ঘুরতে হয়েছে। বর্তমানে সারা দেশে ৩৭৫ জন ডিলার, ৪০০ বিক্রয়কর্মী মাঠে আছেন। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে আমি কুমিল্লা অঞ্চলে সেরা করদাতার পুরস্কার পাই। এখন আমার স্বপ্ন, হালিমা গ্রুপের পণ্য, মালয়েশিয়া, ইউরোপ, আমেরিকা ও থাইল্যান্ডে রপ্তানি করা। এ জন্য সরকারের সহযোগিতা দরকার। কেননা আমার দেশে তৈরি পণ্যের মান ভালো, টেকসই ও মজবুত।


আবুল কালাম হাসান হালিমা ইলেকট্রনিকস নামে আরেকটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করে ব্যবসা সম্প্রসারণ করেন। কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার পাঁচথুপি ইউনিয়নের পিড়াতলি এলাকায় ৪০ হাজার বর্গফুটের জায়গা নিয়ে এই কারখানা। কারখানায় আধুনিক যন্ত্রপাতি এনে এলইডি লাইট, এনার্জি লাইট, ক্লিয়ার বাল্ব, টিউবশেট, ব্যাকলাইট, গ্যাং ও পিয়ানো সুইচ, সার্কিট ব্রেকার ও হোল্ডার তৈরি করা হয়। সেখানেও ৩০০ জন মেয়ে ও ১৫০ জন ছেলে কাজ করছেন। হালিমা টেলিকম থেকে ব্যবসা বাড়িয়ে আরও পাঁচটি প্রতিষ্ঠান করা হয়। এগুলো হচ্ছে হালিমা ইলেকট্রনিকস, হালিমা ট্রেডার্স, হালিমা ওয়ার্ল্ড, এইচটিই ও নিউক্লিক গ্লোবাল। আবুল কালাম হাসান বাংলাদেশের প্রতিনিধি হয়ে তাঁর উৎপাদিত পণ্য নিয়ে কাতার ও থাইল্যান্ডে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় অংশ নেন।



সর্বশেষ খবর হচ্ছে, হালিমা টেলিকম চলতি বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি বাজারে নিয়ে এসেছে মুঠোফোন সেট। এর দামও নাগালের মধ্যে। সূত্র: প্রথম আলো।


বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা নিয়ে চলবে: প্রধানমন্ত্রী


স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা নিয়ে চলবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণের লক্ষে অভ্যন্তরীণ সম্পদ ব্যবহার করেই দেশকে গড়ে তোলা হচ্ছে।


আজ মঙ্গলবার (০২ মার্চ) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় এসব নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এনইসি সভায় অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সচিবরা রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে উপস্থিত ছিলেন।


সভা শেষে দুপুরে পরিকল্পনা বিভাগের সচিব মোহাম্মদ জয়নুল বারী সাংবাদিকদের সামনে এসব তথ্য তুলে ধরেন।


সচিব মোহাম্মদ জয়নুল বারী বলেন, প্রধানমন্ত্রী আজ নির্দেশনা দিয়েছেন যে, নদী-ভাঙন রোধে যেন শুষ্ক মৌসুমে কাজ করা হয়।


তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে, করোনাকালে সারাবিশ্বে যেখানে অর্থনীতি মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে, সেখানে আমরা যেভাবে অর্থনীতিকে চালু রেখেছি, সেটা বজায় রাখতে হবে। আমাদের এখন গুরুত্ব দিতে হবে যে, খাদ্য উৎপাদন, মানুষকে খাদ্য সরবরাহ, সময়মতো ভ্যাকসিন দেওয়া; এজন্য প্রয়োজনে আরও ভ্যাকসিন কেনা হবে, সেজন্য অর্থ সংস্থান রাখার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।


মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় যে বিষয়গুলো আছে, অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে সেখানে গুরুত্ব দিতে হবে। যাতে মানুষের খাদ্য সমস্যা না হয়, কৃষি উৎপাদন বিঘ্নিত না হয় বলেও নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী।


আজকের সভায় যথাসময়ে এবং যথাসম্ভব আইন-কানুন মেনে সব প্রকল্প সমাপ্ত করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী- জানান পরিকল্পনা বিভাগের সচিব।


মঙ্গলবার (০২ মার্চ) রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের এনইসি সভাকক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সংশোধিত এডিপি প্রস্তাব করা হয় ১ লাখ ৯৮ হাজার কোটি টাকা।


গত জুন মাসে ঘোষিত ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে এডিপিতে বরাদ্দ রাখা হয় ২ লাখ ৫ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা। মূল এডিপিতে বৈদেশিক ঋণ ও সহায়তা ধরা হয় ৭০ হাজার কোটি টাকা। সেখান থেকেই সংশোধিত এডিপিতে ৭ হাজার কোটি টাকা কমানো হচ্ছে বলে জানা গেছে।


এতে পদ্মাসেতু, রূপপুরসহ কয়েকটি বড় প্রকল্পে চলতি অর্থ বছরের বরাদ্দ কিছুটা কমতে পারে।


বাংলাদেশ এখন চীন-ভারত-মালয়েশিয়ার কাতারে: অর্থমন্ত্রী


স্টাফ রিপোর্টার: বিশ্বে জিডিপিতে প্রবৃদ্ধি অর্জনে গত ১০ বছরে বাংলাদেশের অবস্থান শীর্ষে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।


তিনি বলেন, এখন কেউ আমাদের মিসকিন বলতে পারবে না। বর্তমানে বাংলাদেশ চীন, কাতার, ভারত ও মালয়েশিয়ার কাতারে পৌঁছে গেছে।


মঙ্গলবার (০২ মার্চ) দুপুরে সোনালী ব্যাংকে বঙ্গবন্ধু কর্নার ও বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন অর্থমন্ত্রী।


অর্থমন্ত্রী বলেন, সোনার বাংলার কনসেপ্ট নিয়ে জাতির পিতা স্বপ্ন দেখেছিলেন। তার স্বপ্ন ছিল এ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং সামাজিক নিরাপত্তা। একইসঙ্গে বাংলা এবং বাঙালিকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরা। তার দেখানো পথে বাংলাদেশ এখন এগিয়ে যাচ্ছে।


তিনি বলেন, জাতির পিতা এ দেশ ও মানুষের কল্যাণে সারাজীবন ব্যয় করেছেন। জাতির পিতার নামে শুধু একটি ম্যুরাল এবং কর্নার উদ্বোধন করে তার অবদানকে এড়িয়ে যাওয়া যাবে না।


মার্চ মাস অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এ মাসে বাঙালির অনেক অর্জন রয়েছে। এ মাসেই বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদযাপন হচ্ছে, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং উন্নয়নশীল দেশের কাতারে এ মাসে পদার্পণ করেছে বাংলাদেশ, যোগ করেন আ হ ম মুস্তফা কামাল।


সোনালী ব্যাংকের সিইও এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আতাউর রহমান প্রধানের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান জিয়াউল হাসান সিদ্দিকী প্রমুখ।


সুকুক ছেড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করবে বেক্সিমকো


স্টাফ রিপোর্টার: পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত কোম্পানি বাংলাদেশ এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট কোম্পানি লিমিটেড (বেক্সিমকো লিমিটেড) সুকুক ইস্যু করবে, এর মাধ্যমে কোম্পানিটি ৩ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করবে।


মঙ্গলবার (২ মার্চ) বেক্সিমকো পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। কোম্পানি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।


সুকুকের মাধ্যমে সংগ্রহ করা অর্থ বেক্সিমকোর দুটি সহযোগী প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করা হবে। কোম্পানি দুটি হচ্ছে তিস্তা সোলার লিমিটেড ও করতোয়া সোলার লিমিটেড। এই দুটি কোম্পানি সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে। এছাড়া বেক্সিমকোর টেক্সটাইল ডিভিশনের ব্যবসা সম্প্রসারণেও এই অর্থ ব্যবহার করা হবে।


আলোচিত সুকুকের ফেস ভ্যালু হবে ১০০ টাকা, একজন বিনিয়োগকারীকে নুন্নতম ৫০টি সুকুক কিনতে হবে। এই সুকুকের মেয়াদ হবে ৫ বছর। সুকুক থেকে কমপক্ষে ৯ শতাংশ মুনাফা পাওয়া যাবে।


বেক্সিমকো লিমিটেডের লভ্যাংশ ৯ শতাংশের বেশি হলে তার ১০ শতাংশ সুকুকের মুনাফার সাথে যুক্ত হবে।


এই সুকুক শেয়ারে রূপান্তর যোগ্য, বিনিয়োগকারী চাইলে সুকুককে শেয়ারে রূপান্তর করতে পারবেন। প্রতি বছর ২০ শতাংশ হারে সুকুক শেয়ারে রূপান্তর হবে।


এই রুপান্তরের মূল্য হবে রেকর্ড তারিখের আগের ২০ দিনে ঢাকা স্টক একচেঞ্জে বেক্সিমকোর শেয়ারের গড় মূল্যের ৭৫ শতাংশ।


যদি কোনো বিনিয়োগকারী সুকুককে শেয়ারে রূপান্তর করতে না চান তাহলে ৫ বছরে ওই সুকুকের অবসান ঘটবে।