বিশেষ প্রতিবেদন
এম এম মাসুদ | ২ এপ্রিল ২০১৬, শনিবার |
|
BRB cable chairman mojibar rahman |
: চ্যালেঞ্জ নিতে তিনি পছন্দ করেন। সততা, ব্যবহার আর শ্রমের বিনিময়ে এ চ্যালেঞ্জকে তিনি জয়ও করেছেন। সফলতাকে এনেছেন হাতের মুঠোয়। আর তাই আজ দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও এক আলোকিত নাম বিআরবি ক্যাবল। এর কর্ণধার মো. মজিবর রহমান। কুষ্টিয়ার এক সম্ভ্রান্ত ব্যবসায়ী পরিবারে বেড়ে ওঠা। ফলে ছোট থেকে হিসাবের হাত একেবারে পাক্কা। চল্লিশ বছর ধরে এ পাক্কা হিসাবি মজিবর রহমান ব্যবসাকেও নিয়ে গেছেন পাক্কা খুঁটিতে। অন্যতম বিশ্বে বাংলাদেশের শীর্ষে- এ স্লোগান নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন তর তর করে। বেশিদিন আগের কথা নয়, ১৯৭৮ সালে কুষ্টিয়ায় প্রতিষ্ঠা করেন বিআরবি (বজলার রহমান অ্যান্ড ব্রাদার্স) ক্যাবল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। আস্তে আস্তে দেশের বাজারে অবস্থান করে নেয় প্রতিষ্ঠানের পণ্য। তারপর দেশের বাইরে নজর দেন তিনি। এখন বিশ্বের নানা প্রান্তে বাংলাদেশের সুনাম ও মর্যাদাকে শীর্ষে তুলে ধরছেন বিআরবি গ্রুপ তাদের উৎপাদিত পণ্যের মাধ্যমে। আর দেশের বেকারত্ব মোচন, অর্থনীতির গতি সঞ্চার ও দেশের রপ্তানি খাতকে এগিয়ে নিচ্ছেন সমান তালে। মজিবর রহমান প্রতিষ্ঠানটির চেয়াম্যান। তার মতে, দেশে কোনো কিছু করা না গেলে, বাইরে গিয়েও কিছু করা যায় না। ভবিষ্যৎ নিয়ে বলেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আমাদের অর্জন আরও সূদুরপ্রসারী করতে চাই।
প্রতিষ্ঠানের শুরু সম্পর্কে মজিবর রহমান বলেন, নিজেদের মূলধন ও ব্যাংকের অর্থায়নে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু হয় ১৯৮০ সালে। ১৯৯৪ সালে গোটা দেশে বিদ্যুতায়নের প্রসার ঘটলে ক্যাবল উৎপাদন বাড়নো হয়। ১৯৯৬ ও ২০০০ সালে উন্নত বিশ্বের উন্নত যন্ত্রপাতি স্থাপন করে কারখানার সমপ্রসারণ করা হয়। বর্তমানে উন্নত ও গুণগতমান সম্পন্ন পণ্য উৎপাদন করে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিশ্বের ক্যাবল বাজারের স্থান করে নিয়েছে বিআরবি গ্রুপ। এখন এ শিল্পের উৎপাদিত পণ্য ইউরোপ, আফ্রিকা ও দক্ষিণ এশিয়াসহ বিশ্বের অনেক দেশে রপ্তানি হচ্ছে।
১৯৭৮ সালে শুরু হওয়া এ গ্রুপে বর্তমানে ১২টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ৬ হাজারের বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মরত রয়েছে এখানে। এর মধ্যে বিআরবি ক্যাবল ইন্ডাস্ট্রিজ, কিয়াম মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ, এমআরএস ইন্ডাস্ট্রিজ, বিআরবি পলিমার, বিআরবি সিকিউরিটিজ, টিপিটি ক্যাবলস, লাভলী হাউজিং, কিয়াম সিরাতুন্নেসা মেমোরিয়াল ট্রাস্ট, বিআরবি এনার্জি, বিআরবি এয়ার, বিআরবি ট্রাভেলস, গ্যাস্ট্র লিভার হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট লিমিটেড।
জাতীয় অর্থনীতিতে অবদানের পাশাপাশি দেশে শিল্পায়নে পিছিয়ে থাকা জনপদ কুষ্টিয়াকে সমৃদ্ধ জেলায় রূপান্তরেরও অন্যতম কারিগর এই বিআরবি গ্রুপ। স্থানীয় বিপুলসংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি এ প্রতিষ্ঠানের হাত ধরেই কুষ্টিয়া অঞ্চলে নতুন করে শিল্পায়নের সূচনা হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর কুষ্টিয়ার খ্যাতনামা শিল্পপ্রতিষ্ঠান মোহিনী মিল বন্ধ হয়ে যায়। নাজুক হয়ে পড়ে কুষ্টিয়া টেক্সটাইল মিলের অবস্থাও। জেলার বৃহৎ কর্মস্থানের এ ক্ষেত্র দুটি ভঙ্গুর হয়ে পড়লে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে এ জেলা। এমন অবস্থায় নানা রকমের ঝুঁকি সত্ত্বেও নতুন করে শিল্পকারখানা দাঁড় করানোর চেষ্টা শুরু করেন মজিবর রহমান। এ প্রচেষ্টা বাস্তবরূপ লাভ করে ১৯৭৮ সালের ২৩শে অক্টোবর কুষ্টিয়া শহর থেকে ৫ কিলোমিটার দক্ষিণ বিসিক শিল্প নগরীতে বৈদ্যুতিক ওয়্যারস ক্যাবল প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বিআরবি ক্যাবল ইন্ডাস্ট্রিজ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে। দেশে ও বিশ্ব বাজারের বৈদ্যুতিক ক্যাবলের ক্রমবর্ধমান চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯৫ সালে কোম্পানির প্রসার ঘটিয়ে বিআরবি ক্যাবলস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ইউনিট-২ স্থাপন করেন প্রতিষ্ঠানটি।
মজিবর রহমান বলেন, বিআরবি উৎপাদনের ধারাবাহিকতায় শুধু বৈদ্যুতিক ক্যাবলই তৈরি করছে না তাদের উৎপাদনের সঙ্গে আরও সংযোজিত হয়েছে টেলিকম টিউব লাইন ব্যালস্টসহ ৯৯ হাইভোল্টেজ ক্যাবল, যা এদেশের মধ্যে শুধু বিআরবিই তৈরি করছে। অত্যাধুনিক ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে বাজারজাতকরণের মাধ্যমে বিআরবি ক্যাবল তার সাফল্যের আরও এক ধাপ এগিয়ে আইএসও ৯০০২ঃ ২০০০ সনদপ্রাপ্ত হয়ে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখেছে। শিল্প উৎপাদনে-রপ্তানি খাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় তিনি সিআইপি নির্বাচিত হয়েছেন বেশ কয়েক বার।
যেভাবে সম্প্র্রসারণ হয় গ্রুপটির: উৎপাদনের ধারাবাহিকতা রক্ষায় গ্রাহক চাহিদা মেটানোসহ কর্মসংস্থানের জন্য ২০০৯ সালে নতুন প্লান্ট স্থাপন করে উৎপাদন করছেন বৈদ্যুতিক ফ্যান। যার নাম লাভলী ফ্যান, যা বাজারে বেশ সুনাম অর্জন করেছে। টেকসই ও মজবুত হওয়ায় লাভলী ফ্যান অল্প সময়ে মানুষ গ্রহণ করেছে। বর্তমানে এ ফ্যান বাংলাদেশের এক নম্বর ব্র্যান্ড হিসেবে খ্যাতি পেয়েছে বলে জানান চেয়াম্যান।
২০১১ সালে বিআরবি গ্রুপে যুক্ত হয় আর একটি নতুন অধ্যায়। বিআরবি ক্যাবল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড মেরিন ক্যাবল উৎপাদন করে ব্যবসায় নজির স্থাপন করায় কোম্পানি ব্যাপক সুনাম অর্জন করে।
আন্তর্জাতিক মানের অত্যাধুনিক ও আকর্ষণীয় মেটালিক পণ্যসামগ্রী রান্নাঘরে পৌঁছে দেয়ার জন্য মজিবর রহমান ১৯৯০ সালে কিয়াম মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড নামে কুষ্টিয়া বিসিক শিল্প নগরীতে আরও একটি শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন।
কুষ্টিয়ায় ১৯৯২ সালে বিআরবি গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত এমআরএস ইন্ডাস্ট্রিজ নামে আরও একটি প্রকৌশল, ঢালাই, প্লাইউড ও মেলামাইন বোর্ড কারখানা প্রতিষ্ঠিত করেন গ্রুপটি।
কৃষিপ্রধান দেশর কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে উন্নত সেচ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বিআরবির স্বপ্নদ্রষ্টা আরেকটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়ে ১৯৯৭ সালে বিসিক শিল্প নগরী কুষ্টিয়ায় প্রতিষ্ঠা করেন বিআরবি পলিমার লিমিটেড।
২০১১ সালে বিসিক শিল্প নগরীর মূল হাইওয়েতে এমআরএস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ফিলিং স্টেশন স্থাপন করেন।
নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চয়তায় বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে বিসিক শিল্প নগরীর বিআরবি চত্বরে ২০০৯ সালে স্থাপন করেন বিআরবি এনার্জি লিমিটেড। এই বিদ্যুৎ সরবরাহের ফলে বিআরবি গ্রুপের সব প্রতিষ্ঠানের পণ্য উৎপাদনে গতিশীলতা ফিরে এসেছে।
অন্যদিকে ভোক্তাদের চাহিদা মেটানোর জন্য কুষ্টিয়া শহরের প্রাণকেন্দ্রে নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা সড়কে ২০০০ সালে ১০তলা বহুতল ভবন বাণিজ্যিক কমপ্লেক্স ‘লাভলী টাওয়ার’ স্থাপন করেন।
আকাশপথের মাধ্যমে সারা দেশে দ্রুত যোগাযোগ নিশ্চিত করতে বিআরবি গ্রুপে যুক্ত হয় বিআরবি এয়ার লিমিটেড। বর্তমানে বেল ৪০৭ জিএক্স নামের একটি হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হচ্ছে। শাহজালাল বিমানবন্দরে আনুষ্ঠানিকভাবে বিআরবি এয়ারের যাত্রা শুরু হয়।
গ্রুপের কর্ণধার মো. মজিবুর রহমান কুষ্টিয়ায় কিয়াম সিরাতুননেছা মেমোরিয়াল ট্রাস্ট গঠন করে দরিদ্র ছাত্রদের বিনামূল্যে ধর্মীয় ও আধুনিক শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করেছেন। পবিত্র হজব্রত পালনের জন্য তিনি বেশ কয়েকবার হজ ও ওমরাহ পালন করেছেন। নিজ খরচে কুষ্টিয়ার বিভিন্ন এলাকায় একাধিক মসজিদ, মাদরাসা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেছেন।
মজিবর রহমান বলেন, স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়তে ও স্বনির্ভর কুষ্টিয়া প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে বিআরবি গ্রুপ। দেশের সমৃদ্ধি ও বেকারত্ব মোচনে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, আর এটা সম্ভব হয়েছে কুষ্টিয়াবাসীসহ দেশের সবার সার্বিক সহযোগিতায়। বিআরবির পণ্যের মান উন্নত হওয়ার কারণে বিশ্ব দরবারে অন্যতম শ্রেষ্ঠ ক্যাবল তৈরি প্রতিষ্ঠান হিসেবে চিনে। গোবি ইন্টারন্যাশনালের জরিপে সারা বিশ্বের তালিকাভুক্ত ৩ হাজার ক্যাবল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বিআরবি ৩৩তম। মানের কারণে বিআরবি ৩ বার জাতীয় রপ্তানি ট্রফি অর্জন করেছে।
===========================================================
: কুষ্টিয়ার এক সমভ্রান্ত ব্যবসায়ী পরিবারে বেড়ে ওঠা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো. মজিবর রহমান। দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রথম সারির একজন তিনি। ১৯৪৭ সালে জন্ম নেয়া বিশিষ্ট এই উদ্যোক্তা প্রায় ৪০ বছর ধরে ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত। পারিবারিক সূত্রে পাওয়া ব্যবসায় একের পর এক চ্যালেঞ্জ নিয়ে হয়েছেন সফল। ১৯৭৮ সালে কুষ্টিয়ায় প্রতিষ্ঠা করেন বিআরবি (বজলার রহমান অ্যান্ড ব্রাদার্স) কেবল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। বিশ্বের নানা প্রান্তে যেসব প্রতিষ্ঠানের পণ্য বাংলাদেশের সুনাম ও মর্যাদাকে শীর্ষে তুলে ধরেছে বিআরবি গ্রুপ তাদের মধ্যে অন্যতম। বর্তমানে তিনি প্রতিষ্ঠানটির চেয়াম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সেøাগান দেয়া হয়েছে ‘অন্যতম বিশ্বে বাংলাদেশের শীর্ষে’। দেশের বেকারত্ব মোচনে, অর্থনীতির গতি সঞ্চারে ও দেশের রপ্তানি খাতকে এগিয়ে নেয়াই ছিল তার প্রদান লক্ষ্য। মজিবর রহমানের মতে, দেশেই কোনো কিছু করা না গেলে, বাইরে গিয়েও কিছু করা যায় না। তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক, সুষ্ঠু ও নিয়মতান্ত্রিক কর্ম সম্প্রদানের পাশাপাশি অর্জিত গৌরব ও উন্নয়নের ধারাকে আরো শাণিত করে জাতীয় ও আন্তজার্তিক পর্যায়ে আমাদের অর্জন আরো সূদুর প্রসারী করতে চাই। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ে মানবজমিনের সঙ্গে এক সাক্ষাতকারে প্রতিষ্ঠান ও জীবনের নানা দিক নিয়ে আলোচনাকালে তিনি এসব কথা বলেন। প্রতিষ্ঠানের শুরু সম্পর্কে মজিবর রহমান বলেন, ১৯৮০ সালে নিজেদের মূলধন ও ব্যাংকের অর্থায়নে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু করা হয়। ১৯৯৪ সালে গোটা দেশে বিদ্যুতায়নের প্রসার ঘটলে ক্যাবল উৎপাদন বাড়নো হয়। ১৯৯৬ ও ২০০০ সালে উন্নতবিশ্বের উন্নত যন্ত্রপাতি স্থাপন করে কারখানার সম্প্রসারণ করা হয়। বর্তমানে উন্নত ও গুণগত মান সম্পন্ন পণ্য উৎপাদন করে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিশ্বের ক্যাবল বাজারের স্থান করে নিয়েছে বিআরবি গ্রুপ। এখন এই শিল্পের উৎপাদিত পণ্য ইউরোপ, আফ্রিকা ও দক্ষিণ এশিয়াসহ বিশ্বের অনেক দেশে রপ্তানি হচ্ছে। ১৯৭৮ সালে শুরু হওয়া এই গ্রুপের বর্তমানে ১২টি প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৬ হাজারের বেশি কর্মকর্তাÑকর্মচারি কর্মরত আছেন। এর মধ্যে বিআরবি ক্যাবল ইন্ডাস্ট্রিজ, কিয়াম মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ, এমআরএস ইন্ডাস্ট্রিজ, বিআরবি পলিমার, বিআরবি সিকিউরিটিজ, টিপিটি ক্যাবলস, লাভলী হাউজিং, কিয়াম সিরাতুন্নেসা মেমোরিয়াল ট্রাস্ট, বিআরবি এনার্জি, বিআরবি এয়ার, বিআরবি ট্রাভেলস, গ্যাস্ট্র লিভার হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, জাতীয় অর্থনীতিতে অবদানের পাশাপাশি দেশে শিল্পায়নে পিছিয়ে থাকা জনপদ কুষ্টিয়াকে সমৃদ্ধ জেলায় রূপান্তরেরও অন্যতম কারিগর এই বিআরবি গ্রুপ। স্থানীয় বিপুল সংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি এই প্রতিষ্ঠানের হাত ধরেই কুষ্টিয়া অঞ্চলে নতুন করে শিল্পায়নের সূচনা হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর কুষ্টিয়ার খ্যাতনামা শিল্প প্রতিষ্ঠান মোহিনী মিল বন্ধ হয়ে যায়। নাজুক হয়ে পড়ে কুষ্টিয়া টেক্সটাইল মিলের অবস্থাও। জেলার বৃহৎ কর্মস্থানের এই ক্ষেত্র দুটি ভঙগুর হয়ে পড়লে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে এই জেলা। এমন অবস্থায় নানা রকমের ঝুঁকি সত্ত্বেও নতুন করে শিল্প কারখানা দাঁড় করানোর প্রচেষ্টা শুরু করেন মজিবর রহমান। এই প্রচেষ্টা বাস্তবরূপ লাভ করে ১৯৭৮ সালের ২৩শে অক্টোবর কুষ্টিয়া শহর থেকে ৫ কিলোমিটার দক্ষিণ বিসিক শিল্প নগরীতে বৈদ্যুতিক ওয়্যারস ক্যাবল প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বিআরবি কেবল ইন্ডাষ্ট্রিজ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে। দেশে ও বিশ্ব বাজারের বৈদ্যুতিক কেবলের ক্রমবর্ধমান চাহিদার প্রেক্ষিতে ১৯৯৫ সালে কোম্পানির প্রসার ঘটিয়ে বিআরবি কেবলস ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেড ইউনিট-২ স্থাপন করেন প্রতিষ্ঠানটি। মজিবর রহমান বলেন, বিআরবি উৎপাদনের ধারাবাহিকতায় শুধু বৈদ্যুতিক ক্যাবল-ই তৈরি করছে না তাদের উৎপাদনের সঙ্গে আরও সংযোজিত হয়েছে টেলিকম টিউব লাইন ব্যালেষ্টসহ ৯৯ হাইভোল্টেজ ক্যাবল, যা এদেশের মধ্যে শুধু বিআরবি-ই তৈরি করছে। অত্যাধুনিক ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে বাজারজাতকরণের মাধ্যমে বিআরবি কেবল তার সাফল্যের আরও এক ধাপ এগিয়ে আইএসও ৯০০২ঃ ২০০০ সনদপ্রাপ্ত হয়ে উন্নয়নের ধারা অব্যহত রেখেছে। শিল্প উৎপাদনে-রপ্তানি খাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় তিনি সিআইপি নির্বাচিত হয়েছেন বেশ কয়েক বার। যেভাবে সম্প্র্রসারণ হয় গ্রুপটির: উৎপাদনের ধারাবাহিকতা রক্ষায় গ্রাহক চাহিদা মেটানোসহ কর্মসংস্থানের জন্য ২০০৯ সালে নতুন প্লান্ট স্থাপন করে উৎপাদন করছেন বৈদ্যুতিক ফ্যান। যার নাম লাভলী ফ্যান, যা বাজারে বেশ সুনাম অর্জন করেছে। টেকসই ও মজবুত হওয়ায় লাভলী ফ্যান অল্প সময়ে মানুষ গ্রহণ করেছে। বর্তমানে এ ফ্যান বাংলাদেশের এক নম্বর ব্র্যান্ড হিসেবে খ্যাতি পেয়েছে বলে জানান চেয়াম্যান। ২০১১ সালে বিআরবি গ্রুপে যুক্ত হয় আর একটি নতুন অধ্যায়। বিআরবি কেবল ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেড মেরিন কেবল উৎপাদন করে ব্যবসায় নজির স্থাপন করায় কোম্পানি ব্যাপক সুনাম অর্জন করে। আন্তর্জাতিক মানের অত্যাধুনিক ও আকর্ষণীয় মেটালিক পণ্য সামগ্রী রান্না ঘরে পৌঁছে দেয়ার জন্য মজিবর রহমান ১৯৯০ সালে কিয়াম মেটাল ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেড নামে কুষ্টিয়া বিসিক শিল্প নগরীতে আরও একটি শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। কুষ্টিয়ায় ১৯৯২ সালে বিআরবি গ্রুপের অন্তর্ভূক্ত এমআরএস ইন্ডাষ্ট্রিজ নামে আরও একটি প্রকৌশল, ঢালাই, প্লাইউড ও মেলামাইন বোর্ড কারখানা প্রতিষ্ঠিত করেন গ্রুপটি। কৃষি প্রধান দেশর কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে উন্নত সেচ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বিআরবির স্বপ্নদ্রষ্টা আরেকটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়ে ১৯৯৭ সালে বিসিক শিল্প নগরী কুষ্টিয়াতে প্রতিষ্ঠা করেন বিআরবি পলিমার লিমিটেড। ২০১১ সালে বিসিক শিল্প নগরীর মূল হাইওয়েতে এমআরএস ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেড ফিলিং স্টেশন স্থাপন করেন। নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চয়তায় বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে বিসিক শিল্প নগরীর বিআরবি চত্বরে ২০০৯ সালে স্থাপন করেন বিআরবি এনার্জি লিমিটেড। এই বিদ্যুৎ সরবরাহের ফলে বিআরবি গ্রুপের সব প্রতিষ্ঠানের পণ্য উৎপাদনে গতিশীলতা ফিরে এসেছে। অন্যদিকে ভোক্তাদের চাহিদা মেটানোর জন্য কুষ্টিয়া শহরের প্রাণকেন্দ্রে নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা সড়কে ২০০০ সালে ১০ তলা বহুতল ভবন বাণিজ্যিক কমপ্লেক্স ‘লাভলী টাওয়ার’ স্থাপন করেন। আকাশ পথের মাধ্যমে সারাদেশে দ্রুত যোগাযোগ নিশ্চিত করতে বিআরবি গ্রুপে যুক্ত হয় বিআরবি এয়ার লিমিটেড। বর্তমানে বেল ৪০৭ জিএক্স নামের একটি হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হচ্ছে। শাহজালাল বিমান বন্দরে আনুষ্ঠানিকভাবে বিআরবি এয়ারের যাত্রা শুরু হয়। গ্রুপের কর্ণধার মো. মজিবুর রহমান কুষ্টিয়ায় কিয়াম সিরাতুননেছা মেমোরিয়াল ট্রাস্ট গঠন করে দরিদ্র ছাত্রদের বিনামূল্যে ধর্মীয় ও আধুনিক শিা গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করেছেন। পবিত্র হজ্বব্রত পালনের জন্য তিনি বেশ কয়েকবার হজ্জ ও ওমরাহ হজ্জ পালন করেছেন। নিজ খরচে কুষ্টিয়ার বিভিন্ন এলাকাতে একাধিক মসজিদ, মাদ্রসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করে দিয়েছেন। মজিবর রহমান বলেন, স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়তে ও স্বনির্ভর কুষ্টিয়া প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে বিআরবি গ্রুপ। দেশের সমৃদ্ধি ও বেকারত্ব মোচনে আমাদেও প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, আর এটা সম্ভব হয়েছে কুষ্টিয়াবাসীসহ দেশের সবার সার্বিক সহযোগিতায়। বিআরবি’র পণ্যের মান উন্নত হওয়ার কারণে বিশ্ব দরবারে অন্যতম শ্রেষ্ঠ ক্যাবল তৈরি প্রতিষ্ঠান হিসেবে চিনে। গোবি ইন্টারন্যাশনালের জরিপে সারাবিশ্বের তালিকাভুক্ত ৩ হাজার ক্যাবল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বিআরবি ৩৩তম। মানের কারণে বিআরবি ৩ বার জাতীয় রপ্তানি ট্রফি অর্জন করেছে। এক নজরে কুষ্টিয়া জেলা: গ্যাস ছাড়া শিল্পায়ন সম্ভব নয়, উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে প্রায়ই শোনা যায় অভিযোগটি। কিন্তু দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলা কুষ্টিয়া এক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত। গ্যাস সংযোগ ছাড়াই সেখানে গড়ে উঠছে বড় শিল্প-কারখানা। বিকল্প জ্বালানির ওপর ভর করে এক দশকের মধ্যেই শিল্পনির্ভর জেলা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে কুষ্টিয়া। এর ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে জেলার অর্থনীতিতে। বিশ্বব্যাংক ও বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রকাশিত দারিদ্র্য ম্যাপেও দেশের সবচেয়ে কম দারিদ্র্য প্রবণ জেলার স্বীকৃতি পেয়েছে কুষ্টিয়া। কুষ্টিয়ার বিসিক শিল্প নগরীতে ৮১টি শিল্প প্লটের মধ্যে সবই চালু আছে। এ শিল্প নগরীতে বিনিয়োগ হয়েছে ৮৯৫ কোটি ২২ লাখ টাকা। এসব শিল্প প্লটে স্থাপিত কারখানায় বার্ষিক টার্নওভার ১ হাজার ৭২১ কোটি টাকা। এখান থেকে বার্ষিক রপ্তানি ৬৮ কোটি টাকা। এতে কর্মসংস্থান হয়েছে ৭ হাজার ১৭৮ জন।
: কুষ্টিয়ার এক সমভ্রান্ত ব্যবসায়ী পরিবারে বেড়ে ওঠা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো. মজিবর রহমান। দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রথম সারির একজন তিনি। ১৯৪৭ সালে জন্ম নেয়া বিশিষ্ট এই উদ্যোক্তা প্রায় ৪০ বছর ধরে ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত। পারিবারিক সূত্রে পাওয়া ব্যবসায় একের পর এক চ্যালেঞ্জ নিয়ে হয়েছেন সফল। ১৯৭৮ সালে কুষ্টিয়ায় প্রতিষ্ঠা করেন বিআরবি (বজলার রহমান অ্যান্ড ব্রাদার্স) কেবল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। বিশ্বের নানা প্রান্তে যেসব প্রতিষ্ঠানের পণ্য বাংলাদেশের সুনাম ও মর্যাদাকে শীর্ষে তুলে ধরেছে বিআরবি গ্রুপ তাদের মধ্যে অন্যতম। বর্তমানে তিনি প্রতিষ্ঠানটির চেয়াম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সেøাগান দেয়া হয়েছে ‘অন্যতম বিশ্বে বাংলাদেশের শীর্ষে’। দেশের বেকারত্ব মোচনে, অর্থনীতির গতি সঞ্চারে ও দেশের রপ্তানি খাতকে এগিয়ে নেয়াই ছিল তার প্রদান লক্ষ্য। মজিবর রহমানের মতে, দেশেই কোনো কিছু করা না গেলে, বাইরে গিয়েও কিছু করা যায় না। তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক, সুষ্ঠু ও নিয়মতান্ত্রিক কর্ম সম্প্রদানের পাশাপাশি অর্জিত গৌরব ও উন্নয়নের ধারাকে আরো শাণিত করে জাতীয় ও আন্তজার্তিক পর্যায়ে আমাদের অর্জন আরো সূদুর প্রসারী করতে চাই। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ে মানবজমিনের সঙ্গে এক সাক্ষাতকারে প্রতিষ্ঠান ও জীবনের নানা দিক নিয়ে আলোচনাকালে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতিষ্ঠানের শুরু সম্পর্কে মজিবর রহমান বলেন, ১৯৮০ সালে নিজেদের মূলধন ও ব্যাংকের অর্থায়নে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু করা হয়। ১৯৯৪ সালে গোটা দেশে বিদ্যুতায়নের প্রসার ঘটলে ক্যাবল উৎপাদন বাড়নো হয়। ১৯৯৬ ও ২০০০ সালে উন্নতবিশ্বের উন্নত যন্ত্রপাতি স্থাপন করে কারখানার সম্প্রসারণ করা হয়। বর্তমানে উন্নত ও গুণগত মান সম্পন্ন পণ্য উৎপাদন করে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিশ্বের ক্যাবল বাজারের স্থান করে নিয়েছে বিআরবি গ্রুপ। এখন এই শিল্পের উৎপাদিত পণ্য ইউরোপ, আফ্রিকা ও দক্ষিণ এশিয়াসহ বিশ্বের অনেক দেশে রপ্তানি হচ্ছে।
১৯৭৮ সালে শুরু হওয়া এই গ্রুপের বর্তমানে ১২টি প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৬ হাজারের বেশি কর্মকর্তাÑকর্মচারি কর্মরত আছেন। এর মধ্যে বিআরবি ক্যাবল ইন্ডাস্ট্রিজ, কিয়াম মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ, এমআরএস ইন্ডাস্ট্রিজ, বিআরবি পলিমার, বিআরবি সিকিউরিটিজ, টিপিটি ক্যাবলস, লাভলী হাউজিং, কিয়াম সিরাতুন্নেসা মেমোরিয়াল ট্রাস্ট, বিআরবি এনার্জি, বিআরবি এয়ার, বিআরবি ট্রাভেলস, গ্যাস্ট্র লিভার হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট লিমিটেড।
প্রতিষ্ঠানটি জানায়, জাতীয় অর্থনীতিতে অবদানের পাশাপাশি দেশে শিল্পায়নে পিছিয়ে থাকা জনপদ কুষ্টিয়াকে সমৃদ্ধ জেলায় রূপান্তরেরও অন্যতম কারিগর এই বিআরবি গ্রুপ। স্থানীয় বিপুল সংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি এই প্রতিষ্ঠানের হাত ধরেই কুষ্টিয়া অঞ্চলে নতুন করে শিল্পায়নের সূচনা হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর কুষ্টিয়ার খ্যাতনামা শিল্প প্রতিষ্ঠান মোহিনী মিল বন্ধ হয়ে যায়। নাজুক হয়ে পড়ে কুষ্টিয়া টেক্সটাইল মিলের অবস্থাও। জেলার বৃহৎ কর্মস্থানের এই ক্ষেত্র দুটি ভঙগুর হয়ে পড়লে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে এই জেলা। এমন অবস্থায় নানা রকমের ঝুঁকি সত্ত্বেও নতুন করে শিল্প কারখানা দাঁড় করানোর প্রচেষ্টা শুরু করেন মজিবর রহমান। এই প্রচেষ্টা বাস্তবরূপ লাভ করে ১৯৭৮ সালের ২৩শে অক্টোবর কুষ্টিয়া শহর থেকে ৫ কিলোমিটার দক্ষিণ বিসিক শিল্প নগরীতে বৈদ্যুতিক ওয়্যারস ক্যাবল প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বিআরবি কেবল ইন্ডাষ্ট্রিজ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে। দেশে ও বিশ্ব বাজারের বৈদ্যুতিক কেবলের ক্রমবর্ধমান চাহিদার প্রেক্ষিতে ১৯৯৫ সালে কোম্পানির প্রসার ঘটিয়ে বিআরবি কেবলস ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেড ইউনিট-২ স্থাপন করেন প্রতিষ্ঠানটি।
মজিবর রহমান বলেন, বিআরবি উৎপাদনের ধারাবাহিকতায় শুধু বৈদ্যুতিক ক্যাবল-ই তৈরি করছে না তাদের উৎপাদনের সঙ্গে আরও সংযোজিত হয়েছে টেলিকম টিউব লাইন ব্যালেষ্টসহ ৯৯ হাইভোল্টেজ ক্যাবল, যা এদেশের মধ্যে শুধু বিআরবি-ই তৈরি করছে। অত্যাধুনিক ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে বাজারজাতকরণের মাধ্যমে বিআরবি কেবল তার সাফল্যের আরও এক ধাপ এগিয়ে আইএসও ৯০০২ঃ ২০০০ সনদপ্রাপ্ত হয়ে উন্নয়নের ধারা অব্যহত রেখেছে। শিল্প উৎপাদনে-রপ্তানি খাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় তিনি সিআইপি নির্বাচিত হয়েছেন বেশ কয়েক বার।
যেভাবে সম্প্র্রসারণ হয় গ্রুপটির: উৎপাদনের ধারাবাহিকতা রক্ষায় গ্রাহক চাহিদা মেটানোসহ কর্মসংস্থানের জন্য ২০০৯ সালে নতুন প্লান্ট স্থাপন করে উৎপাদন করছেন বৈদ্যুতিক ফ্যান। যার নাম লাভলী ফ্যান, যা বাজারে বেশ সুনাম অর্জন করেছে। টেকসই ও মজবুত হওয়ায় লাভলী ফ্যান অল্প সময়ে মানুষ গ্রহণ করেছে। বর্তমানে এ ফ্যান বাংলাদেশের এক নম্বর ব্র্যান্ড হিসেবে খ্যাতি পেয়েছে বলে জানান চেয়াম্যান।
২০১১ সালে বিআরবি গ্রুপে যুক্ত হয় আর একটি নতুন অধ্যায়। বিআরবি কেবল ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেড মেরিন কেবল উৎপাদন করে ব্যবসায় নজির স্থাপন করায় কোম্পানি ব্যাপক সুনাম অর্জন করে।
আন্তর্জাতিক মানের অত্যাধুনিক ও আকর্ষণীয় মেটালিক পণ্য সামগ্রী রান্না ঘরে পৌঁছে দেয়ার জন্য মজিবর রহমান ১৯৯০ সালে কিয়াম মেটাল ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেড নামে কুষ্টিয়া বিসিক শিল্প নগরীতে আরও একটি শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন।
কুষ্টিয়ায় ১৯৯২ সালে বিআরবি গ্রুপের অন্তর্ভূক্ত এমআরএস ইন্ডাষ্ট্রিজ নামে আরও একটি প্রকৌশল, ঢালাই, প্লাইউড ও মেলামাইন বোর্ড কারখানা প্রতিষ্ঠিত করেন গ্রুপটি।
কৃষি প্রধান দেশর কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে উন্নত সেচ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বিআরবির স্বপ্নদ্রষ্টা আরেকটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়ে ১৯৯৭ সালে বিসিক শিল্প নগরী কুষ্টিয়াতে প্রতিষ্ঠা করেন বিআরবি পলিমার লিমিটেড।
২০১১ সালে বিসিক শিল্প নগরীর মূল হাইওয়েতে এমআরএস ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেড ফিলিং স্টেশন স্থাপন করেন।
নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চয়তায় বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে বিসিক শিল্প নগরীর বিআরবি চত্বরে ২০০৯ সালে স্থাপন করেন বিআরবি এনার্জি লিমিটেড। এই বিদ্যুৎ সরবরাহের ফলে বিআরবি গ্রুপের সব প্রতিষ্ঠানের পণ্য উৎপাদনে গতিশীলতা ফিরে এসেছে।
অন্যদিকে ভোক্তাদের চাহিদা মেটানোর জন্য কুষ্টিয়া শহরের প্রাণকেন্দ্রে নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা সড়কে ২০০০ সালে ১০ তলা বহুতল ভবন বাণিজ্যিক কমপ্লেক্স ‘লাভলী টাওয়ার’ স্থাপন করেন।
আকাশ পথের মাধ্যমে সারাদেশে দ্রুত যোগাযোগ নিশ্চিত করতে বিআরবি গ্রুপে যুক্ত হয় বিআরবি এয়ার লিমিটেড। বর্তমানে বেল ৪০৭ জিএক্স নামের একটি হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হচ্ছে। শাহজালাল বিমান বন্দরে আনুষ্ঠানিকভাবে বিআরবি এয়ারের যাত্রা শুরু হয়।
গ্রুপের কর্ণধার মো. মজিবুর রহমান কুষ্টিয়ায় কিয়াম সিরাতুননেছা মেমোরিয়াল ট্রাস্ট গঠন করে দরিদ্র ছাত্রদের বিনামূল্যে ধর্মীয় ও আধুনিক শিা গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করেছেন। পবিত্র হজ্বব্রত পালনের জন্য তিনি বেশ কয়েকবার হজ্জ ও ওমরাহ হজ্জ পালন করেছেন। নিজ খরচে কুষ্টিয়ার বিভিন্ন এলাকাতে একাধিক মসজিদ, মাদ্রসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করে দিয়েছেন।
মজিবর রহমান বলেন, স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়তে ও স্বনির্ভর কুষ্টিয়া প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে বিআরবি গ্রুপ। দেশের সমৃদ্ধি ও বেকারত্ব মোচনে আমাদেও প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, আর এটা সম্ভব হয়েছে কুষ্টিয়াবাসীসহ দেশের সবার সার্বিক সহযোগিতায়। বিআরবি’র পণ্যের মান উন্নত হওয়ার কারণে বিশ্ব দরবারে অন্যতম শ্রেষ্ঠ ক্যাবল তৈরি প্রতিষ্ঠান হিসেবে চিনে। গোবি ইন্টারন্যাশনালের জরিপে সারাবিশ্বের তালিকাভুক্ত ৩ হাজার ক্যাবল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বিআরবি ৩৩তম। মানের কারণে বিআরবি ৩ বার জাতীয় রপ্তানি ট্রফি অর্জন করেছে।
এক নজরে কুষ্টিয়া জেলা: গ্যাস ছাড়া শিল্পায়ন সম্ভব নয়, উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে প্রায়ই শোনা যায় অভিযোগটি। কিন্তু দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলা কুষ্টিয়া এক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত। গ্যাস সংযোগ ছাড়াই সেখানে গড়ে উঠছে বড় শিল্প-কারখানা। বিকল্প জ্বালানির ওপর ভর করে এক দশকের মধ্যেই শিল্পনির্ভর জেলা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে কুষ্টিয়া। এর ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে জেলার অর্থনীতিতে। বিশ্বব্যাংক ও বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রকাশিত দারিদ্র্য ম্যাপেও দেশের সবচেয়ে কম দারিদ্র্য প্রবণ জেলার স্বীকৃতি পেয়েছে কুষ্টিয়া। কুষ্টিয়ার বিসিক শিল্প নগরীতে ৮১টি শিল্প প্লটের মধ্যে সবই চালু আছে। এ শিল্প নগরীতে বিনিয়োগ হয়েছে ৮৯৫ কোটি ২২ লাখ টাকা। এসব শিল্প প্লটে স্থাপিত কারখানায় বার্ষিক টার্নওভার ১ হাজার ৭২১ কোটি টাকা। এখান থেকে বার্ষিক রপ্তানি ৬৮ কোটি টাকা। এতে কর্মসংস্থান হয়েছে ৭ হাজার ১৭৮ জন।
ইজই ৩০.০৩.১৬ ......: কুষ্টিয়ার এক সমভ্রান্ত ব্যবসায়ী পরিবারে বেড়ে ওঠা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো. মজিবর রহমান। দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রথম সারির একজন তিনি। ১৯৪৭ সালে জন্ম নেয়া বিশিষ্ট এই উদ্যোক্তা প্রায় ৪০ বছর ধরে ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত। পারিবারিক সূত্রে পাওয়া ব্যবসায় একের পর এক চ্যালেঞ্জ নিয়ে হয়েছেন সফল। ১৯৭৮ সালে কুষ্টিয়ায় প্রতিষ্ঠা করেন বিআরবি (বজলার রহমান অ্যান্ড ব্রাদার্স) কেবল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। বিশ্বের নানা প্রান্তে যেসব প্রতিষ্ঠানের পণ্য বাংলাদেশের সুনাম ও মর্যাদাকে শীর্ষে তুলে ধরেছে বিআরবি গ্রুপ তাদের মধ্যে অন্যতম। বর্তমানে তিনি প্রতিষ্ঠানটির চেয়াম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সেøাগান দেয়া হয়েছে ‘অন্যতম বিশ্বে বাংলাদেশের শীর্ষে’। দেশের বেকারত্ব মোচনে, অর্থনীতির গতি সঞ্চারে ও দেশের রপ্তানি খাতকে এগিয়ে নেয়াই ছিল তার প্রদান লক্ষ্য। মজিবর রহমানের মতে, দেশেই কোনো কিছু করা না গেলে, বাইরে গিয়েও কিছু করা যায় না। তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক, সুষ্ঠু ও নিয়মতান্ত্রিক কর্ম সম্প্রদানের পাশাপাশি অর্জিত গৌরব ও উন্নয়নের ধারাকে আরো শাণিত করে জাতীয় ও আন্তজার্তিক পর্যায়ে আমাদের অর্জন আরো সূদুর প্রসারী করতে চাই। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ে মানবজমিনের সঙ্গে এক সাক্ষাতকারে প্রতিষ্ঠান ও জীবনের নানা দিক নিয়ে আলোচনাকালে তিনি এসব কথা বলেন। প্রতিষ্ঠানের শুরু সম্পর্কে মজিবর রহমান বলেন, ১৯৮০ সালে নিজেদের মূলধন ও ব্যাংকের অর্থায়নে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু করা হয়। ১৯৯৪ সালে গোটা দেশে বিদ্যুতায়নের প্রসার ঘটলে ক্যাবল উৎপাদন বাড়নো হয়। ১৯৯৬ ও ২০০০ সালে উন্নতবিশ্বের উন্নত যন্ত্রপাতি স্থাপন করে কারখানার সম্প্রসারণ করা হয়। বর্তমানে উন্নত ও গুণগত মান সম্পন্ন পণ্য উৎপাদন করে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিশ্বের ক্যাবল বাজারের স্থান করে নিয়েছে বিআরবি গ্রুপ। এখন এই শিল্পের উৎপাদিত পণ্য ইউরোপ, আফ্রিকা ও দক্ষিণ এশিয়াসহ বিশ্বের অনেক দেশে রপ্তানি হচ্ছে। ১৯৭৮ সালে শুরু হওয়া এই গ্রুপের বর্তমানে ১২টি প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৬ হাজারের বেশি কর্মকর্তাÑকর্মচারি কর্মরত আছেন। এর মধ্যে বিআরবি ক্যাবল ইন্ডাস্ট্রিজ, কিয়াম মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ, এমআরএস ইন্ডাস্ট্রিজ, বিআরবি পলিমার, বিআরবি সিকিউরিটিজ, টিপিটি ক্যাবলস, লাভলী হাউজিং, কিয়াম সিরাতুন্নেসা মেমোরিয়াল ট্রাস্ট, বিআরবি এনার্জি, বিআরবি এয়ার, বিআরবি ট্রাভেলস, গ্যাস্ট্র লিভার হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, জাতীয় অর্থনীতিতে অবদানের পাশাপাশি দেশে শিল্পায়নে পিছিয়ে থাকা জনপদ কুষ্টিয়াকে সমৃদ্ধ জেলায় রূপান্তরেরও অন্যতম কারিগর এই বিআরবি গ্রুপ। স্থানীয় বিপুল সংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি এই প্রতিষ্ঠানের হাত ধরেই কুষ্টিয়া অঞ্চলে নতুন করে শিল্পায়নের সূচনা হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর কুষ্টিয়ার খ্যাতনামা শিল্প প্রতিষ্ঠান মোহিনী মিল বন্ধ হয়ে যায়। নাজুক হয়ে পড়ে কুষ্টিয়া টেক্সটাইল মিলের অবস্থাও। জেলার বৃহৎ কর্মস্থানের এই ক্ষেত্র দুটি ভঙগুর হয়ে পড়লে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে এই জেলা। এমন অবস্থায় নানা রকমের ঝুঁকি সত্ত্বেও নতুন করে শিল্প কারখানা দাঁড় করানোর প্রচেষ্টা শুরু করেন মজিবর রহমান। এই প্রচেষ্টা বাস্তবরূপ লাভ করে ১৯৭৮ সালের ২৩শে অক্টোবর কুষ্টিয়া শহর থেকে ৫ কিলোমিটার দক্ষিণ বিসিক শিল্প নগরীতে বৈদ্যুতিক ওয়্যারস ক্যাবল প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বিআরবি কেবল ইন্ডাষ্ট্রিজ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে। দেশে ও বিশ্ব বাজারের বৈদ্যুতিক কেবলের ক্রমবর্ধমান চাহিদার প্রেক্ষিতে ১৯৯৫ সালে কোম্পানির প্রসার ঘটিয়ে বিআরবি কেবলস ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেড ইউনিট-২ স্থাপন করেন প্রতিষ্ঠানটি। মজিবর রহমান বলেন, বিআরবি উৎপাদনের ধারাবাহিকতায় শুধু বৈদ্যুতিক ক্যাবল-ই তৈরি করছে না তাদের উৎপাদনের সঙ্গে আরও সংযোজিত হয়েছে টেলিকম টিউব লাইন ব্যালেষ্টসহ ৯৯ হাইভোল্টেজ ক্যাবল, যা এদেশের মধ্যে শুধু বিআরবি-ই তৈরি করছে। অত্যাধুনিক ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে বাজারজাতকরণের মাধ্যমে বিআরবি কেবল তার সাফল্যের আরও এক ধাপ এগিয়ে আইএসও ৯০০২ঃ ২০০০ সনদপ্রাপ্ত হয়ে উন্নয়নের ধারা অব্যহত রেখেছে। শিল্প উৎপাদনে-রপ্তানি খাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় তিনি সিআইপি নির্বাচিত হয়েছেন বেশ কয়েক বার। যেভাবে সম্প্র্রসারণ হয় গ্রুপটির: উৎপাদনের ধারাবাহিকতা রক্ষায় গ্রাহক চাহিদা মেটানোসহ কর্মসংস্থানের জন্য ২০০৯ সালে নতুন প্লান্ট স্থাপন করে উৎপাদন করছেন বৈদ্যুতিক ফ্যান। যার নাম লাভলী ফ্যান, যা বাজারে বেশ সুনাম অর্জন করেছে। টেকসই ও মজবুত হওয়ায় লাভলী ফ্যান অল্প সময়ে মানুষ গ্রহণ করেছে। বর্তমানে এ ফ্যান বাংলাদেশের এক নম্বর ব্র্যান্ড হিসেবে খ্যাতি পেয়েছে বলে জানান চেয়াম্যান। ২০১১ সালে বিআরবি গ্রুপে যুক্ত হয় আর একটি নতুন অধ্যায়। বিআরবি কেবল ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেড মেরিন কেবল উৎপাদন করে ব্যবসায় নজির স্থাপন করায় কোম্পানি ব্যাপক সুনাম অর্জন করে। আন্তর্জাতিক মানের অত্যাধুনিক ও আকর্ষণীয় মেটালিক পণ্য সামগ্রী রান্না ঘরে পৌঁছে দেয়ার জন্য মজিবর রহমান ১৯৯০ সালে কিয়াম মেটাল ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেড নামে কুষ্টিয়া বিসিক শিল্প নগরীতে আরও একটি শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। কুষ্টিয়ায় ১৯৯২ সালে বিআরবি গ্রুপের অন্তর্ভূক্ত এমআরএস ইন্ডাষ্ট্রিজ নামে আরও একটি প্রকৌশল, ঢালাই, প্লাইউড ও মেলামাইন বোর্ড কারখানা প্রতিষ্ঠিত করেন গ্রুপটি। কৃষি প্রধান দেশর কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে উন্নত সেচ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বিআরবির স্বপ্নদ্রষ্টা আরেকটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়ে ১৯৯৭ সালে বিসিক শিল্প নগরী কুষ্টিয়াতে প্রতিষ্ঠা করেন বিআরবি পলিমার লিমিটেড। ২০১১ সালে বিসিক শিল্প নগরীর মূল হাইওয়েতে এমআরএস ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেড ফিলিং স্টেশন স্থাপন করেন। নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চয়তায় বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে বিসিক শিল্প নগরীর বিআরবি চত্বরে ২০০৯ সালে স্থাপন করেন বিআরবি এনার্জি লিমিটেড। এই বিদ্যুৎ সরবরাহের ফলে বিআরবি গ্রুপের সব প্রতিষ্ঠানের পণ্য উৎপাদনে গতিশীলতা ফিরে এসেছে। অন্যদিকে ভোক্তাদের চাহিদা মেটানোর জন্য কুষ্টিয়া শহরের প্রাণকেন্দ্রে নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা সড়কে ২০০০ সালে ১০ তলা বহুতল ভবন বাণিজ্যিক কমপ্লেক্স ‘লাভলী টাওয়ার’ স্থাপন করেন। আকাশ পথের মাধ্যমে সারাদেশে দ্রুত যোগাযোগ নিশ্চিত করতে বিআরবি গ্রুপে যুক্ত হয় বিআরবি এয়ার লিমিটেড। বর্তমানে বেল ৪০৭ জিএক্স নামের একটি হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হচ্ছে। শাহজালাল বিমান বন্দরে আনুষ্ঠানিকভাবে বিআরবি এয়ারের যাত্রা শুরু হয়। গ্রুপের কর্ণধার মো. মজিবুর রহমান কুষ্টিয়ায় কিয়াম সিরাতুননেছা মেমোরিয়াল ট্রাস্ট গঠন করে দরিদ্র ছাত্রদের বিনামূল্যে ধর্মীয় ও আধুনিক শিা গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করেছেন। পবিত্র হজ্বব্রত পালনের জন্য তিনি বেশ কয়েকবার হজ্জ ও ওমরাহ হজ্জ পালন করেছেন। নিজ খরচে কুষ্টিয়ার বিভিন্ন এলাকাতে একাধিক মসজিদ, মাদ্রসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করে দিয়েছেন। মজিবর রহমান বলেন, স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়তে ও স্বনির্ভর কুষ্টিয়া প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে বিআরবি গ্রুপ। দেশের সমৃদ্ধি ও বেকারত্ব মোচনে আমাদেও প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, আর এটা সম্ভব হয়েছে কুষ্টিয়াবাসীসহ দেশের সবার সার্বিক সহযোগিতায়। বিআরবি’র পণ্যের মান উন্নত হওয়ার কারণে বিশ্ব দরবারে অন্যতম শ্রেষ্ঠ ক্যাবল তৈরি প্রতিষ্ঠান হিসেবে চিনে। গোবি ইন্টারন্যাশনালের জরিপে সারাবিশ্বের তালিকাভুক্ত ৩ হাজার ক্যাবল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বিআরবি ৩৩তম। মানের কারণে বিআরবি ৩ বার জাতীয় রপ্তানি ট্রফি অর্জন করেছে। এক নজরে কুষ্টিয়া জেলা: গ্যাস ছাড়া শিল্পায়ন সম্ভব নয়, উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে প্রায়ই শোনা যায় অভিযোগটি। কিন্তু দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলা কুষ্টিয়া এক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত। গ্যাস সংযোগ ছাড়াই সেখানে গড়ে উঠছে বড় শিল্প-কারখানা। বিকল্প জ্বালানির ওপর ভর করে এক দশকের মধ্যেই শিল্পনির্ভর জেলা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে কুষ্টিয়া। এর ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে জেলার অর্থনীতিতে। বিশ্বব্যাংক ও বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রকাশিত দারিদ্র্য ম্যাপেও দেশের সবচেয়ে কম দারিদ্র্য প্রবণ জেলার স্বীকৃতি পেয়েছে কুষ্টিয়া। কুষ্টিয়ার বিসিক শিল্প নগরীতে ৮১টি শিল্প প্লটের মধ্যে সবই চালু আছে। এ শিল্প নগরীতে বিনিয়োগ হয়েছে ৮৯৫ কোটি ২২ লাখ টাকা। এসব শিল্প প্লটে স্থাপিত কারখানায় বার্ষিক টার্নওভার ১ হাজার ৭২১ কোটি টাকা। এখান থেকে বার্ষিক রপ্তানি ৬৮ কোটি টাকা। এতে কর্মসংস্থান হয়েছে ৭ হাজার ১৭৮ জন।