Wednesday, June 10, 2020

পেপার কাপের কাঁচামাল আমদানির শুল্ক কমানোর দাবি পেপার কাপ ম্যানফেকচারার এসোসিয়েশনের

পেপারকাপ শিল্পের অন্যতম উদ্যোক্তা ও কেপিসি ইন্ড্রাষ্ট্রিজের চেয়ারম্যান
কাজী সাজেদুরর রহমান
স্টাফ রিপোর্টার: ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে কাগজের কাপ-প্লেট পণ্যের কাঁচামাল আমদানির শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ ও ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে পেপার কাপ ম্যানফেকচারার এসোসিয়েশন বাংলাদেশ। বাজেটের আগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের কাছে দেয়া এক চিঠিতে এ দাবি জানান সংগঠনের সভাপতি কাজী সাজিদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম উজ্জল। 
চিঠিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী রপ্তানির বাজার বড় করার জন্য নতুন নতুন পণ্যের অবাধ বাজার সৃষ্টি করার ওপর জোর দিয়েছেন। বর্তমান বিশ্বে পেপার কাপ পণ্যের বাজার প্রায় ২৮০ বিলিয়ম ডলারের। যা আমাদের দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেয়। কাগজের কাপের বিশ্বব্যাপী একটি বড় বাজার রয়েছে।
তাই এই শিল্পকে সম্প্রসারণের মাধ্যমে একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা সম্ভব। এজন্য কাপ-প্লেট পণ্যের কাঁচামাল আমদানির শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ ও ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার করা আবশ্যক। একই সঙ্গে দেশীয় শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার স্বার্থে আমদানিকৃত পেপার কাপ প্লেটের দাম বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড প্রতি কেজি পেপার কাপ-প্লেটের আমদানি মূল্য ১.৫ ডলার নির্ধারণ করেছে। আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে মিল রেখে প্রতিকেজির দাম ৩.৫ ডলার এবং সাপ্লিমেন্টারি ডিউটি ১৫ শতাংশ করার দাবি জানানো হয়েছে।
কেপিসি ইন্ড্রাষ্ট্রিজের ৯ম বষ'পূতি উপলক্ষ্যে সাজিদুর রহমান বলেন, যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে আমাদের জীবন মানের উন্নতি হয়েছে। মাটির পাত্র থেকে আমরা আধুনিকতার টানে কাচ আর সিরামিকের ব্যবহার যেমন জীবন মানের উন্নতি করেছে আবার সহজলভ্য হিসেবে প্লাষ্টিক পণ্যের বিস্তার লাভ করেছে। তবে স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও পরিবেশ বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেতে বর্তমানে সবচেয়ে উপযোগী পণ্য হল পেপার কাপ। আমরা কেপিসি ইন্ডাষ্ট্রিজ গর্ববোধ করি যে, বাংলাদেশে পেপার কাপের বিস্তারলাভে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে পেরেছি। আমাদের এই দীর্ঘ চলার পথের বন্ধু, শুভাকাঙ্ক্ষী ও কেপিসির সকল গ্ৰাহকদেরকে জানাই ৯ম বষ'পূতি' উপলক্ষে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
বাংলাদেশে কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক দিতে হয় ৪০ শতাংশ। অতিরিক্ত শুল্কের কারণে পেপার কাপ শিল্পটি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে বলে জানিয়েছেন এ খাতের উদ্যোক্তরা।

পেপারকা পশিল্পে অন্যতম উদ্যোক্তা ও কেপিসি ইন্ড্রাষ্ট্রিজের চেয়ারম্যান কাজী সাজেদুরর রহমান বলেন, সম্ভাবনাময় একটি শিল্প ধ্বংসের দার প্রান্তে। সরকার সুযোগ সুবিধা দিলে এই খাত থেকে প্রচুর পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব। তিনি বলেন, প্রতিকেজি পেপার কাপের কাঁচামাল আমদানিতে খরচ হয় ১৩০ থেকে ১৬০ টাকা। অথচ প্রতিকেজি তৈরি করা পেপার কাপ আমদানি করতে খরচ হয় ১২৭ টাকা। এদিকে কম দামে আমদানি করার সুযোগ নিয়ে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী নিম্নমানের কাপ আমদানি করছে বলে জানা গেছে। এতে সরকার বিপুল পরিমাণে রাজস্ব হারাচ্ছে।

তিনি বলেন, বিদেশ থেকে অনেক ক্রেতা বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের কাছে পরিবেশ সম্মত পেপার কাপ আমদানির আগ্রহ প্রকাশ করছে। কিন্তু দাম বেশি হওয়ায় তারা নিতে পারছে না। বিদেশে রপ্তানির আদেশ পেলে এখানে বিপুল পরিমাণে কর্মসংস্থান হবে। এজন্য আগামী বাজেটে পেপার কাপ শিল্পের কাচামাল আমদানিতে শুল্ক তুলে দেয়ার দাবি জানান তিনি। 
কেপিসি ইন্ড্রাষ্ট্রিজের পেপার কাপ

কাগজের তৈরি কাপ বিশ্বব্যাপী পরিবেশ বান্ধর এবং স্বাস্থ্যসম্মত পণ্য হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে, যা চা, কফি, কোমল পানীয়, আইসক্রিম ইত্যাদি পরিবেশনের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হচ্ছে। এসব পণ্যের কাঁচামাল ভার্জিন উডপাল। মন্ড থেকে কেমিক্যাল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উৎপাদন করা হয়। যা একটি পণ্যকে সম্পূর্ণ রুপে ফুড গ্রেড রাখার পদ্ধতি এবং পণ্যটি ব্যবহারের পরে মাটিতে পুতে ফেললে অতি দ্রুত মাটির সঙ্গে মিশে জৈব সারে পরিণত হয়।

পণ্যটি সরাসরি খাদ্যের সংস্পর্শে আসে এবং খাদ্যের পাত্র হিসেবে বিভিন্নভাবে ব্যবহৃত হয়। তাই পণ্যটি পুনরায় ব্যবহার করা এমন কাগজ দিয়ে উৎপাদন করা সম্ভব নয়। নতুন এই সম্ভাবনাময় পণ্যের বাজারকে সমৃদ্ধ করার মাধমে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখার সুযোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। 

No comments:

Post a Comment