Sunday, October 27, 2019

দেশে ছাগল কমেছে, বেড়েছে গরু

অর্থনৈতিক রিপোর্টার: দেশে এখন ছাগলের সংখ্যা ১ কোটি ৯২ লাখ ৮৭ হাজার ৪১৩। আর গরু আছে ২ কোটি ৮৪ লাখ ৮৭ হাজার ৪১৫টি। এসব গরু ছাগলসহ গবাদিপশু ব্যক্তি ও খামারি পর্যায়ে লালনপালন করা হয়।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) কৃষি শুমারি ২০১৯ এর প্রাথমিক ফলাফলে এই চিত্র উঠে এসেছে। ওই শুমারিতে অবশ্য ভেড়া, মহিষ, হাঁস, মুরগি, টার্কির সংখ্যাও পাওয়া গেছে। রোববার এক অনুষ্ঠানে শুমারির প্রাথমিক ফলাফল প্রকাশ করেছে বিবিএস।

অবশ্য ২০১৮ সালে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর প্রকাশিত হিসেব অনুযায়ী দেশে ছাগল ২ কোটি ৫৯ লাখ। আর গরুর সংখ্যা ২ কোটি ৩৯ লাখ। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসেব ও বিবিএসের শুমারির তথ্য অনুযায়ী দেশে ছাগলের সংখ্যা কমেছে ৬৬ লাখ। অন্যদিকে গরুর সংখ্যা বেড়েছে ৪৬ লাখ। এবারের কৃষি শুমারিতে অন্য গবাদিপশুর হিসাবও এসেছে। সারা দেশে এখন মহিষ আছে ৭ লাখ ১৮ হাজার ৪১১টি। ভেড়ার সংখ্যা ৮ লাখ ৯২ হাজার ৬২৮। এ বছরের কৃষি শুমারির তথ্য অনুসারে ২০১৯ সালে এসে দেশে মুরগি ১৮ কোটি ৯২ লাখ ৬২ হাজার ৯০১টি মুরগি, ৬ কোটি ৭৫ লাখ ২৯ হাজার ২১০টি হাস ও ১৪ লাখ ৪৫ হাজার ৪২০টি টার্কি আছে।

শুমারির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে মোট পরিবারের (খানা) সংখ্যা ৩ কোটি ৫৫ লাখ ৩৩ হাজার ১৮০টি। দেশে গরুর সংখ্যা ২ কোটি ৮৪ লাখ ৮৭ হাজার ৪১৫টি। হাঁসের সংখ্যা ৬ কোটি ৭৫ লাখ ২৯ হাজার ২১০টি এবং মুরগী রয়েছে ১৮ কোটি ৯২ লাখ ৬২ হাজার ৯১০টি।

শুমারিতে মাছ চাষ করে নির্ভরশীল হয়েছেন, ৯ লাখ ৯৫ হাজার ১৩৫টি, কৃষি মজুরি করে এমন পরিবারের সংখ্যা ৯০ লাখ ৯৫ হাজার ৯৭৭টি, নিজস্ব জমি নেই এমন পরিবার রয়েছে ৪০ লাখ ২৪ হাজার ১৮৯টি এবং অন্যের কাছ থেকে জমি নিয়েছে এমন পরিবার ৬৭ লাখ ৬৩ হাজার ৪৮৭টি। দেশে টার্কি রয়েছে ১৪ লাখ ৪৫ হাজার ৪২০টি, মহিষ ৭ লাখ ১৮ হাজার ৪১১টি, ছাগল ১ কোটি ৯২ লাখ ৮৭ হাজার ৪১৩টি এবং ভেড়া রয়েছে ৮ লাখ ৯২ হাজার ৬২৮টি।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, নিজের জমি নেই এমন পরিবার সবেচেয়ে বেশি রয়েছে ঢাকা বিভাগে। এ বিভাগে প্রতি হাজারে ৬৪৮টি পরিবারের নিজস্ব জমি নেই। রাজশাহী বিভাগে প্রতি হাজারে ২৪১টি পরিবারের নিজস্ব জমি নেই। এছাড়া রংপুর বিভাগে প্রতি হাজারে ৩১৭টি, চট্টগ্রাম বিভাগের ২৭৫টি, খুলনা বিভাগে ২৬৯টি, মংমনসিংহ বিভাগে ১৬৯টি, সিলেটে বিভাগে ২২১টি এবং বরিশাল বিভাগে প্রতি হাজারে ৯২টি পরিবারের নিজস্ব জমি নেই। তবে প্রকল্প পরিচালক জাফর আহমেদ জানান, নিজস্ব জমি নেই মানে ভূমিহীন নয়। অনেক সময় নিজের নামে জমি না থাকলেও তার বাবা বা দাদার নামে থাকতে পারে।

অনুষ্ঠানে শুমারির তথ্যের সঙ্গে দ্বিমত জানিয়ে মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ সচিব রইছুল আলম মন্ডল বলেন, এসডিজি বাস্তবায়নে বিশুদ্ধ ডাটা দরকার। বেইজ লাইন না থাকলে সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম সঠিক হয়না। শুমারিতে ডিম, দুধ, ইলিশ এবং মিঠা পানির মাছের তথ্য থাকা উচিত ছিল।

এ বিষয়ে কৃষি সচিব নাসিরুজ্জামান বলেন,বিবিএসের তথ্যের সাথে কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্যের কোনো মিল নেই। বিভাজনে হাইব্রীড ধানের কোনো হিসাব নেই। কৃষি মন্ত্রণালয় বলছে, ছাদ বাগান এখন অনেক জনপ্রিয় একে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। ভাসমান কৃষিকে যুক্ত করা হয়নি। মাসকলাই ও ছোলার ডালের তথ্য বাদ দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে পরিসংখ্যানের সাথে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বয় করা উচিত। তাহলে এত বেশি ব্যবধান আর থাকবেনা।

পরে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, এতবড় মহাযজ্ঞ বোধহয় নিখুঁত হওয়ার বিষয় নয়। সংশোধন করার বিষয় রয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে আরও নিবিড়ভাবে সবাই কাজ করবে বলে আমি কথা দিচ্ছি। বিবিএসকে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা হবে। দেশের সকল পরিকল্পনায় ভিত্তি হবে পরিসংখ্যান। বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ আগে নাক সিটকালেও এখন আমাদের তথ্য ব্যবহার করছে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, মাঠ পর্যায়ে মূল শুমারির তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম ২০১৯ সালের ৯ জুন থেকে ২০ সালের জুন পর্যন্ত সংগ্রহ করা হবে।

অনুষ্ঠানে আরো ছিলেন, মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ সম্পদ সচিব রইছউল আলম, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব সৌরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো; নাসিরুজ্জামান, বিবিএসের মহাপরিচালক মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, ও প্রকল্প পরিচালক জাফর আহমেদ খান।

No comments:

Post a Comment