Sunday, January 5, 2014

বাঁশের ঝাকায় পাল্টে গেছে বড়িয়াল গ্রামের চিত্র

মানিকগঞ্জ : বাঁশের ঝাকা তৈরি করে ভাগ্য বদল করেছে মানিকগঞ্জের সদর উপজেলার বেতিলা-মিতরা ইউনিয়নের বড়বড়িয়াল গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের শতাধিক পরিবার।
পরিবারগুলো বাঁশের ঝাকা বানিয়ে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। 


দারিদ্রতা ছিল পরিবারগুলোর নিত্যসঙ্গী। অভাব-অনটন থাকায় পরিবারগুলো খুবই কষ্টে দিন কাটাতো। বাঁশের ঝাকা শিল্প এদের ভাগ্য বদলের সঙ্গে সঙ্গে পাল্টে দিয়েছে গ্রামের চিত্র। একসময় যাদের অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটতো এখন তারা ঝাকা বানিয়ে অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল। দিন বদলের সঙ্গে সঙ্গে সন্তানদেরও স্কুলে পাঠিয়ে শিক্ষার পাশাপাশি কর্মজীবী হিসেবে গড়ে তুলছে তারা। 



সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পরিবারগুলোর সবাই বাঁশের ঝাকা তৈরিতে ব্যস্ত। তবে এ কাজে পুরুষের সঙ্গে সমানতালে নারীরাও কাজ করে যাচ্ছে। বাড়ির বউ-ঝিরা বসে না থেকে ঘর গৃহস্থলীর কাজ শেষে  যোগ দেয় পুরুষদের সঙ্গে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গ্রামটিতে উৎসবের আমেজে চলে ওই কাজ। 



বড়িয়াল গ্রামের বয়োবৃদ্ধ মনীন্দ্র (৮৫) জানান, এই গ্রামে প্রায় শত বছর ধরে ঝাকা তৈরির কাজ হয়। ১২০টি পরিবার এই ঝাকা তৈরির কাজে সরাসরি জড়িত। পৈত্রিক পেশা হিসেবেই তারা ওই কাজ করে থাকে বলে তিনি জানান। 



সনু মালা রানী (৪০) জানান, বিয়ের পর থেকেই স্বামীর সঙ্গে তিনি ঝাকা তৈরি করছেন। প্রতিদিন ঘরের কাজের পাশাপাশি দুটি ঝাকা তৈরি করা যায়। বছরের কার্তিক মাস থেকে আষাঢ় মাস পর্যন্ত কাজের চাহিদা একটু বেশি থাকে।



সুর বালা (২৩) জানান, সংসারে অন্যান্য কাজ ও লেখাপড়ার পাশাপাশি বাবা-মাকে সাহায্য করি। তাতে বাবা মায়ের অনেকটা কষ্ট দূর হয় এবং সেই সঙ্গে কিছু বাড়তি আয়ও হয়।



ফালান চন্দ্র দাশ (৫৫) জানান, একেকটি ঝাকা তৈরি করতে ৩০/৩৫ টাকা খরচ হয়। সেগুলো ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি করা যায়। একটি বাঁশ দিয়ে ৪/৫ টি ঝাকা তৈরি করা যায়। পাইকাররা বাড়ি থেকে এগুলো কিনে নিয়ে যায়।  



বেতিলা-মিতরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাসির হোসেন জানান, সরকারিভাবে আর্থিক সহযোগিতা পেলে এই এলাকায় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পসহ ঝাকা শিল্পের আরো ব্যাপক প্রসার ঘটবে।

No comments:

Post a Comment