Monday, October 14, 2019

শতভাগ পরিবেশ রক্ষা করেই সুন্দরবন এলাকায় উন্নয়ন হচ্ছে: সালমান এফ রহমান

অর্থনৈতিক রিপোর্টার: সুন্দরবন এলাকায় যত উন্নয়নমূলক কাজ হচ্ছে শতভাগ পরিবেশ রক্ষা করেই করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। গতকাল সোনারগাঁও হোটেলে 'পাওয়ার প্যাক ইকোনমিক জোন প্রাইভেট লিমিটেড' এর বিনিয়োগ উন্নয়ন শীর্ষক অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন তিনি। বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, বেজার নির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ আইয়ুব বক্তব্য রাখেন। পাওয়ারপ্যাক ইকনোমিক জোনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রনো হক শিকদার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
সুন্দরবনের কাছে এই অর্থনৈতিক অঞ্চল নিয়ে বিভিন্ন মহলের উদ্বেগ প্রসঙ্গে সালমান এফ রহমান বলেন, আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জলবায়ু ও পরিবেশ নিয়ে অত্যন্ত সচেতন এবং সতর্ক। সুন্দরবনের পাশে পরিবেশের ক্ষতির আশঙ্কা থাকলে এই ধরনের প্রকল্প হাতে নেয়া হত না। সুন্দরবনের ক্ষতি করে কিছু করা হবে না। আপনারা নিশ্চিত থাকতে পারেন। তিনি বলেন, বিশ্বে ইকোনমিক জোনের অনেক মডেল রয়েছে। আমাদের এখানে করা হয়েছে কান্ট্রি স্পেসিফিক ইকোনমিক জোন। অভিনব আইডিয়া। চীনা ইকোনমিক জোন, জাপানিজ ইকোনমিক জোন, ভারতীয় ইকোনমিক জোন দেখে কোরিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ অনেক দেশ বিনিয়োগ করতে আসছে। সালমান এফ রহমান বলেন, প্রথমে যখন ১০০ ইকোনমিক জোনের কথা বলা হয়েছিল তখন অনেকে বিশ্বাস করতে চায়নি। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে ১০০ যথেষ্ট নয়। আরো জোনের প্রয়োজন পড়বে। 
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কিন্তু বিসিক দিয়ে কাজটি শুরু করেছিলেন। সেইটার একটি বৃহৎ ভার্সন ইকোনমিক জোন। বিসিকে ছোট ছোট শিল্প থাকে এখানে বড় বড়গুলো থাকবে। সরকারের মধ্যম ও উন্নত রাষ্ট্রের লক্ষ্যমাত্রা এবং ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নে সহায়ক ভূমিকা রাখছে এসব শিল্প জোন। তিনি বলেন, এতদিন কী হতো? কোথাও রাস্তা নির্মাণ হলে তার পাশে গিয়ে আমরা জমি কিনতাম। এরপর ভরাট করে শিল্প স্থাপন করে গ্যাস বিদ্যুতের জন্য কান্নাকাটি শুরু করে দিতাম। ইকোনমিক জোনগুলো সেই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দেবে বলে মন্তব্য করেন সালমান এফ রহমান। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যখন ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসে তখন ইকোনমিক জোন নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। এবার ক্ষমতায় এসে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ বলেন, মোংলার ইকোনমিক জোনটি সুন্দরবনের কাছে। আমরা যেমন শিল্প চাই, তেমনি সুন্দরবন ও সুন্দরবনের জীব-বৈচিত্র্য রক্ষা করতে চাই। যারা এখানে বিনিয়োগ করতে চান তাদের অনুরোধ করব হলুদ কিংবা লাল ক্যাটাগরির কোনো শিল্প স্থাপনের প্রস্তাব দেবেন না।

বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন, অন্যান্য দেশ অনেক আগে শুরু করেছে। আমরা বেসিক্যালি ২০১৫ সালে কাজ শুরু করেছি, লক্ষ্য ১০০ ইকোনমিক জোন। প্রথমে মিরসরাইতে ৫৫০ একর জমি দিয়ে যাত্রা শুরু করি। এখন সেখানে ৩০ হাজার একর জমি কনফার্ম হয়েছে। মহেশখালীতে ২৫ হাজার একর জমি নিশ্চিত করা হয়েছে। বেজা ইতিমধ্যে ৬০ হাজার একর জমির ব্যাংক তৈরি করেছে। এখন শুধুই এগিয়ে চলার সময়। এক সময় এটাকে অনেকে বিশ্বাস করতে চায়নি। এখন এটা বাস্তবতা বলে মন্তব্য করেন বেজা চেয়ারম্যান।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বেজার সঙ্গে পিপিপির আওতায় সিকদার গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান পাওয়ার প্যাক ইকোনমিক জোন প্রাইভেট লিমিটেড অঞ্চলটির উন্নয়ন করছে। মোংলা বন্দরের অদূরে ২০৫ একর জমি নিয়ে গঠিত এই জোনে সড়ক যোগাযোগ, পানি সরবরাহ, বৈদ্যুতিক উপকেন্দ্র প্রশাসনিক ভবনের কাজ শেষ হয়েছে। ৪৪ শতাংশ প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। অবশিষ্ট প্লট পুরোপুরি প্রস্তত রয়েছে। এখানে ২৫ হাজার লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন পাওয়ার প্যাক ইকোনমিক জোনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রন হক সিকদার। অনুষ্ঠনে ৫টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ভূমি বরাদ্দ চুক্তি হয়, যার ৪টিই এনার্জিপ্যাকের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। এর বাইরে রয়েছে আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড ইউনিলিভারের অন্যতম পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান নাগা লিমিটেড। এছাড়া ন্যাশনাল ব্যাংক ও শিকদার ইন্স্যুরেন্সকে শাখা খোলার জন্য ছোট আকারের প্লট বরাদ্দ দেয়া হয় এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে।

যৌথ অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে মোংলা অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণ ও রক্ষাণাবেক্ষণের জন্য দেশীয় প্রতিষ্ঠান শিকদার গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান পাওয়ারপ্যাক ইকনোমিক জোনকে নিয়োগ করে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ বেজা। প্রথম ধাপে ৫ কোম্পানির কাছে ভূমি বরাদ্দ উপলক্ষে বিনিয়োগ উন্নয়ন বা ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন শীর্ষক কর্মসূচি পালন করে বেজা ও পাওয়ারপ্যাক। 

Sunday, October 13, 2019

আইএফআইসি-সমকাল শিল্প পুরস্কার পেল তরুণ উদ্যোক্তা কাজী সাজেদুর রহমান

অর্থনৈতিক রিপোর্টার: দেশের অগ্রগতির প্রবহমান ধারাকে প্রণোদনা যোগাতে ৫ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করেছে আইএফআইসি ব্যাংক ও সমকাল। এর মধ্যে উদীয়মান তরুণ উদ্যোক্তা ও সেরা এসএমই উদ্যোগ পুরস্কার পেয়েছে কেপিসি ইন্ডাস্ট্রিজ কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী সাজেদুর রহমান। শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের কার্নিভাল হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কারের চেক, সনদ ও ক্রেস্ট তুলে দেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। 


এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন আইএফআইসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ এ সারওয়ার। সভাপতিত্ব করেন সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি। পুরস্কার ঘোষণা করেন জুরি বোর্ডের সদস্য বিআইডিএসের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো নাজনীন আহমেদ।

প্রথমবারের মত ৫টি ক্যাটাগরিতে আইএফআইসি ব্যাংক-সমকাল শিল্প ও বাণিজ্য পুরস্কার-২০১৮ প্রদান করা হয়েছে। ৫ খাতে দেয়া পুরস্কারগুলো হচ্ছে- আজীবন সম্মাননা, বর্ষসেরা বৃহৎ শিল্প উদ্যোগ, বর্ষসেরা নারী উদ্যোক্তা, উদীয়মান তরুণ উদ্যোক্তা ও সেরা এসএমই উদ্যোগ। বৃহৎ শিল্প উদ্যোগ পুরস্কার পেয়েছে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ। কোম্পানির পক্ষে পুরস্কার গ্রহণ করেন ওয়ালটন গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক (বিপণন) হুমায়ুন কবির। নারী উদ্যোক্তা পুরস্কার পেয়েছেন সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার রামধানা গ্রামের মেসার্স আফিয়া খানম ফিশারিজের স্বত্বাধিকারী রুবা খানম। তরুণ উদ্যোক্তার পুরস্কার পেয়েছেন ফরচুন সুজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান। সেরা এসএমই উদ্যোগ পুরস্কার পেয়েছে কেপিসি ইন্ডাস্ট্রিজ। কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী সাজেদুর রহমান পুরস্কার গ্রহণ করেন।


অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সমকালের এ উদ্যোগ খুবই ইতিবাচক। এ পুরস্কার ব্যবসায়ীদের উৎসাহিত করবে। 

প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, আইএফআইসি ব্যাংক সমকাল সময়োপযোগী উদ্যোগ নিয়েছে। ব্যবসায়ীদের অবদানে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। তাদের সম্মাননা দেয়ায় আয়োজকদের ধন্যবাদ দেন তিনি। এ সময় চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য ব্যবসায়ীদের প্রস্তুতি নেয়ার আহবান জানান তিনি। 

আইএফআইসি ব্যাংকের এমডি শাহ এ সারওয়ার বলেন, আইএফআইসি ব্যাংক এখন ৭ লাখ গ্রাহককে সেবা দিচ্ছে। আগামী দুই-তিন বছরের মধ্যে এককোটি গ্রাহকের কাছে সেবা পৌঁছে দিতে টাই।                          

ওয়ালটন গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক হুমায়ুন কবির বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের সেরা ৫টি ব্র্যান্ডের অন্যতম হতে চায় ওয়ালটন। এ পুরস্কার তাদের উৎসাহিত করবে। 

কেপিসি ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী সাজেদুর রহমান বলেন, দেশের এসএমই উদ্যোক্তারা অনেক পরিশ্রম করে। এসএমই উদ্যোক্তাদের বিকশিত হওয়ার পথে নানা বাধা দূর করার আহ্বান জানান তিনি।

Saturday, October 12, 2019

রাজনীতি এখন ব্যবসায় পরিণত: রুমিন ফারহানা

ব্যাংকিং খাত নিয়ে উল্টোপাল্টা চলছে: সুজন (ভিডিও)

সুজনের সেমিনার, ব্যাংকিং খাত নিয়ে উল্টোপাল্টা পদক্ষেপ বন্ধ করতে হবে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার: ব্যাংকিং খাত নিয়ে উল্টোপাল্টা পদক্ষেপ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। সংগঠনটির মতে, এই খাত সংস্কার না হলে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ খারপের দিকে চলে যাবে। শুধু অর্থমন্ত্রীর টোটকা দাওয়াই দিয়ে খেলাপিঋণের ক্যানসার সারানো যাবে না। খেলাপিঋণ সমস্যা সমাধানের জন্য অবিলম্বে একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ব্যাংকিং সংস্কার কমিশন গঠন করতে হবে। গতকাল জতীয় প্রেস ক্লাবে সুজন আয়োজিত ‘ব্যাংকিং খাত নিয়ে উল্টোপাল্টা পদক্ষেপ বন্ধ করুন: ব্যাংকিং সংস্কার কমিশন গঠন করুন’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এই আহ্বান জানানো হয়। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক মইনুল ইসলাম। 
সুজন-এর সভাপতি এম হাফিজ উদ্দিন খানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের সঞ্চালনায় আলোচনা অংশ নেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর ইব্রাহীম খালেদ, লেখক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু নাসের বখতিয়ার, অধ্যাপক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইনাম আহমেদ চৌধুরী, সংরক্ষিত আসনের বিএনপি সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। 
প্রবন্ধে বলা হয়, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল চ্যালেঞ্জ দিয়েছেন, তিনি আর খেলাপিঋণ এক টাকাও বাড়তে দেবেন না। অতএব, একজন চার্টার্ড একাউন্টেন্টের চাল প্রয়োগ করে তিনি মন্দঋণ রাইট-অফ করার পদ্ধতি সহজ করে দিয়েছেন, যাতে ক্লাসিফাইড লোনের এই শিথিল পদ্ধতি প্রয়োগ করে বিভিন্ন ব্যাংক ‘মন্দঋণ রাইট-অফ করা’ বাড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়। রাইট-অফ করা মন্দঋণ বাড়ার মানেই হলো এর ফলে ক্লাসিফাইড লোন ওই পরিমাণ কম দেখানো যাবে। তিনি মন্দঋণ আদায়ের জন্যে খেলাপি ঋণগ্রহীতাকে দুই শতাংশ ঋণ প্রাথমিক কিস্তিতে পরিশোধ করে যে দশ বছরের সময় দেয়ার ব্যবস্থা করলেন, সে সুবিধা নিয়মনিষ্ঠ ঋণ ফেরতদাতারা পান না।
কিন্তু এ-ধরনের পরিবর্তন খেলাপিঋণ সমস্যাটিকে আড়াল করার পন্থা হলেও মন্দঋণ আদায় করার কোনো নিষ্ঠাবান প্রয়াসের মাধ্যমে জোরদার করার লক্ষণ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। উল্টো একজন ‘ব্যবসায়ী অর্থমন্ত্রী’ তার ঋণখেলাপি ব্যবসায়ী বন্ধুদের প্রতি মাত্রাতিরিক্ত দরদ দেখিয়ে উল্টোপাল্টা পদক্ষেপ নিয়ে চলেছেন।
প্রবন্ধে আরো বলা হয়, গত ২০১৪-১৯ মেয়াদের সরকারের সময়েও খেলাপিঋণের অবস্থা সংকটজনক থাকা সত্ত্বেও কোন রহস্যজনক কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যাংকিং সংস্কার কমিশন গঠনের ইস্যুটাকে বারবার এড়িয়ে গেছেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর ক্ষমতাগ্রহণের ৯ মাস অতিক্রান্ত হলেও এখনো তিনি কমিশন গঠনের ঘোষণা দেননি, কিন্তু কেন? এদ্দিনে তার বোঝা উচিত যে অর্থমন্ত্রীর টোটকা দাওয়াই দিয়ে খেলাপিঋণের ক্যানসার সারানো যাবে না। দেশে বেশিরভাগ ব্যাংকের অবস্থা ভালো নয়। যার মূল কারণ খেলাপি ঋণ। এমন অবস্থায় প্রয়োজনীয় বিশ্লেষণের ভিত্তিতে সুপারিশ করার জন্যে অবিলম্বে একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ব্যাংকিং সংস্কার কমিশন গঠন করার দাবি জানানো হয়। 
দেশে ব্যাংকঋণ নিয়ে একটা ‘পাতানো খেলা’ চলছে দাবি করে প্রবন্ধে অধ্যাপক মইনুল ইসলাম বলেন, সমস্যার প্রকৃত রূপটি সরকার, ব্যাংকার এবং ঋণখেলাপি সবারই জানা আছে। সমস্যার সমাধানের উপায় সম্পর্কেও এই তিন পক্ষের সবার স্পষ্ট ধারণা আছে। কিন্তু জেনে শুনেই সরকার সমাধানের পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করছে না। ফলে, এখনো দেশের ব্যাংকিং খাতের প্রধান সমস্যা রয়ে গেছে রাঘববোয়াল ঋণখেলাপিদের কাছে আটকে থাকা বিপুল খেলাপিঋণ। এই ঋণখেলাপিদের প্রায় সবাই ‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’, মানে যারা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন যে, তারা তাদের ঋণ ফেরত দেবেন না। কারণ তাদের রাজনৈতিক প্রতিপত্তি এবং আর্থিক প্রতাপ দিয়ে তারা শুধু ব্যাংকিং খাত নয় দেশের সংসদকেও দখল করে ফেলেছেন।
এক পরিসখ্যান তুলে ধরে জানানো হয়, গত ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের মাধ্যমে সংসদের নির্বাচিত সদস্যদের ৬১.৭ শতাংশই ব্যবসায়ী। তাদের সিংহভাগই ব্যাংকের মালিক/পরিচালক। সংসদের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সদস্য পকৃতপক্ষে ঋণখেলাপি হলেও বিভিন্ন পন্থা অনুসরণ করে তারা তাদের খেলাপিঋণ আড়াল করে সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছেন, বলে অভিযোগ করা হয়।

মূল প্রবন্ধে মইনুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে দেশের খেলাপি ঋণ ১ লাখ কোটি টাকার কিছু বেশি। আসলে দেশের খেলাপি ঋণ ৩ লাখ কোটি টাকা। ব্যাংক খাতের ৩০ শতাংশই খেলাপি। এই সমস্যা সমাধানে শক্তিশালী কমিশন গঠন করতে হবে। শীর্ষ খেলাপি প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করতে হবে। খেলাপি ঋণ ট্রাইব্যুনাল করে প্রতিটি ব্যাংকের শীর্ষ ঋণ ১০ খেলাপিকে বিচার করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বাতিল জরুরি। দেশে এত ব্যাংকের প্রয়োজন নেই। তাই ব্যাংকগুলো একীভুত করতে হবে।
মইনুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রামের একজন ব্যবসায়ী নাকি এখন ৭টি ব্যাংকের ওপর মালিকানা প্রতিষ্ঠা করে ফেলেছেন। ব্যাংকের মালিকানায় একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার সুযোগ অন্য কোনো দেশে চালু আছে কি না, আমার জানা নেই।
অধ্যাপক মইনুল বলেন, ব্যাংক পরিচালকদের নিজেদের মধ্যে ঋণ নেয়া বন্ধ করতে হবে। ব্যাংক পরিচালকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসকে বেআইনি ঘোষণা করতে হবে। যাতে তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্ষমতাকে অন্যায়ভাবে প্রভাবিত করতে না পারে।
এই অর্থনীতিবিদ খেলাপি ঋণ কমাতে কয়কটি পরামর্শ দিয়েছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- খেলাপি ঋণ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে প্রত্যেক ব্যাংকের শীর্ষ ১০ জন খেলাপিকে দ্রুত শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা। ব্যাংকিং খাতের জন্য আলাদা ন্যায়পাল নিয়োগ, মন্দ ঋণ আদায়ের জন্য ‘ডেট রিকভারি বা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি’ গঠন, অর্থঋণ আদালতে কোনো ঋণ খেলাপির বিরুদ্ধে চূড়ান্ত রায় হলে জামানত বা বন্ধকী সম্পত্তি নিলাম করার জন্য মামলা করার যে নিয়ম রয়েছে, তা বাতিল করা, প্রতিটি ব্যাংকের শীর্ষ দশ ঋণ খেলাপি প্রতিষ্ঠানের নাম এক বছরের বেশি তালিকাভুক্ত হলে ওই প্রতিষ্ঠানের মূল ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করার পাশাপাশি তার পাসপোর্ট জব্দ করা ইত্যাদি।

আলোচনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, বিএনপি, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি কেউ কাউকে পছন্দ করে না। কিন্তু ঋণ খেলাপি সৃষ্টিতে সবাই একমত। এখন জিডিপি প্রবৃদ্ধি নিয়ে গর্ববোধ করা হয়। বঙ্গবন্ধুর আমলেও ৮ শতাংশের কাছাকাছি জিডিপি ছিল। তিনি কখনো এসব নিয়ে গর্ববোধ করতেন না। আয় বৈষম্য কমিয়ে আনতে বলতেন। আর বর্তমানে জিডিপি প্রবৃদ্ধিকে উন্নয়নের পারিমাপক হিসেবে ধরা হচ্ছে। চোর ডাকাতের দেশে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। চরম বৈষম্যে পৌঁছেছে বাংলাদেশ। তিনি বলেন, ৯৫ জনকে শোষণ করে ৫ জনের প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। তিনি ‘সমাজ পরিবর্তনের ডাক’ দিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান। তা না হলে এই সমস্যা থেকে বেড় হওয়া যাবে না।

সুজন সভাপতি এম হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘যুবলীগ নেতা সম্রাট আঞ্জুমানের কাছে ২ কোটি টাকা চাঁদা চেয়েছিল, একবছর কাজ আটকে ছিল। পরে প্রধানমন্ত্রীর কানে এ খবর পৌঁছানোর পর এ সমস্যার সমাধান হয়েছে। তাই রাজনীতিকে কলুষমুক্ত করতে হবে। রাজনীতি যদি শুদ্ধ না হয় তাহলে কিছুই ভালো হবে না। জিডিপিতে উন্নয়ন দেখছি, কিন্তু আমি তো আমাদের অবস্থানের কোনো উন্নয়ন দেখি না। ব্যাংকিং খাত এখন দুর্বৃত্তদের কবলে। 

কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, যার যা ইচ্ছা, তাই করছে। ব্যক্তিগতভাবে রাষ্ট্রকে ব্যবহার করছে। কিন্তু কিছুই বলার ক্ষমতা আমাদের নেই। বাংলাদেশ এখন সারাবিশ্বের মধ্যে এক নম্বর ঋণখেলাপির দেশে পরিণত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ভালো হয়, যদি আমরা ব্যাংকে টাকা না রাখি। মানুষ বোকার মতো ব্যাংকে টাকা রাখছে। আর ঋণখেলাপিদের সুবিধা করে দিচ্ছে। তিনি বলেন, ক্যাসিনোর সম্রাট একজন, ব্যাংকের সম্রাট আরেকজন। এই সম্রাটকে ধরতে পারলে সবকিছু ঠিক হবে।

বিএনপির সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, ব্যাংকের ওপর থেকে যখন মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস নষ্ট হয়, তখন দেশের অর্থনীতি ধসে পড়ে। এই সরকার ঋণখেলাপিবান্ধব সরকার। তিনি বলেন, রাজনীতি করা এখন একটি বড় ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। তার প্রমাণ ক্যাসিনো সম্রাট যুবলীগ নেতা ঈসমাইল হোসেন সম্রাট। তিনি বলেন, এই সম্রাট আওয়ামী লীগের একটি অঙ্গ সংগঠনের একজন নেতা হয়ে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। সে কিন্তু এমপি বা মন্ত্রী কেউ নন। শুধু রাজনীতি করে নায়ক হয়েছেন। গত কয়েক বছরে যত বড় বড় আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটেছে তার সবগুলো এই সরকারের সময়ে হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। 

অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার বলেন, রাজনৈতিক কর্মী যখন ব্যাংক চালাতে আসবে, তখন অবশ্যই ব্যাংকের নিয়ম পালন করা সম্ভব নয়। সরকার রাজনৈতিক নেতাদের ব্যাংক পর্ষদে নিযুক্ত করে সবচেয়ে বড় ভুল করেছে বলে তিনি মনে করেন।

Monday, October 7, 2019

8m came out of poverty in 6yrs: WB

Online Report: Around eight million people in Bangladesh have come out of poverty between 2010 and 2016, according to the latest poverty assessment report of World Bank.
In the rural areas, 90 per cent of the poverty reduction took place whereas situation in the urban areas remained the same as before in the given timeline, the WB report said.  
Bangladesh has progressed significantly in reducing poverty and improving living conditions, mostly driven by labour income, the WB said in its report on Bangladesh Poverty Assessment which was released this morning.
The report shows an increase in economic growth but the rate of poverty reduction declined since 2010, said a WB press release. 
The World Bank programme was held at a hotel in Dhaka on Monday, October 7, 2019. Photo: Courtesy
At a programme in Amari Dhaka hotel in Gulshan of the capital, the World Bank released the report.
Finance Minister AHM Mustafa Kamal, who attended the programme as the chief guest, said in his speech that more one crore people will get jobs by 2030 taking down the current poverty rate to 3 per cent.
The government has undertaken need and technology based initiatives to curb inequality, the finance minister added. 
"The progress that Bangladesh has made in reducing poverty in the last decade is remarkable," said Mercy Tembon, World Bank country director for Bangladesh and Bhutan.
"But, with one out of four people still living in poverty, the country needs to do more, especially in addressing the new frontiers of poverty. For example, tackling urban poverty is critical since at current trends more than half of the poor Bangladesh is projected to live in the urban areas by 2030," quoting her the press release reads.
This poverty reduction is uneven across the country, the WB said in its report.
"Since 2010, the historical gap in poverty between eastern and western divisions re-emerged in the west, poverty increased in Rangpur division, stagnated in Rajshahi and Khulna, while in the east, poverty declined moderately in Chattogram, and rapidly in Barishal, Dhaka and Sylhet."

বিল গেটসের সেকেন্ডে আয় ৩৮০ ডলার

মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস এখন বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ ধনী ব্যক্তি। ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তাঁর নিট সম্পদমূল্য ছিল ১০৫ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার। মাইক্রোসফট থেকে সরে এসেছেন বিল গেটস। তিনি এখন বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনকেই বেশি সময় দিচ্ছেন। আসুন জেনে নেই বিল গেটস নিয়ে দারুণ পাঁচ তথ্য।

১. সেকেন্ডে আয় ৩৮০ ডলার

বিজনেস ইনসাইডার বিল গেটসের আয় নিয়ে মজার কিছু তথ্য বের করেছে। যেমন: প্রতি সেকেন্ডে তাঁর আয় ৩৮০ ডলার, এই হিসাবে প্রতি মিনিটে আয় ২২ হাজার ৮৩১ ডলার। তাঁর নিট সম্পদের মূল্য ক্রোয়েশিয়া, কম্বোডিয়া ও বাহামার মোট দেশজ উৎপাদনের সমান।

একজন গড় আমেরিকান, যাঁর ব্যাচেলর ডিগ্রি আছে, সারা জীবনে গড়ে আয় করেন ২২ লাখ ডলার। আর বিল গেটস এই অর্থ মাত্র দেড় ঘণ্টায় আয় করেন। এখন তিনি যদি প্রতিদিন ১০ লাখ ডলার খরচ করবেন বলে ঠিক করেন, তাহলে লাগবে ২৮৫ বছর।

২. দান প্রায় ৩৬ বিলিয়ন ডলার

জনপ্রিয় ম্যাগাজিন ফোর্বস-এর দেওয়া তথ্য হচ্ছে, বিল গেটস এখন পর্যন্ত তাঁর নিট সম্পদের ২৭ শতাংশ জনহিতে দান করেছেন। টাকার অঙ্কে তা ৩৫ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার। তিনি মূলত মাইক্রোসফটের শেয়ার বিক্রি করে তা দান করেছেন। তবে নিজের সম্পদ ও অন্যান্য পারিবারিক ফাউন্ডেশন মিলিয়ে তাঁর দানের পরিমাণ আরও বেশি—সাড়ে ৪৫ বিলিয়ন ডলার।

৩. এবার আয় ১৭ বিলিয়ন ডলার

বিল গেটস ২০১৯ সালে এখন পর্যন্ত সম্পদ বাড়িয়েছেন ১৭ বিলিয়ন ডলার। তিনি তাঁর সম্পদের ৬০ শতাংশ বিনিয়োগ করেছেন নানা ধরনের মূলধনি শেয়ারে। আর বিনিয়োগের ক্ষেত্রে তাঁকে আগ্রাসীই মনে করা হয়। কেননা, এক আমেরিকান গড়ে নিজ সম্পদের ৩২ শতাংশ বিনিয়োগ করে থাকেন।

৪. বাড়ির নাম জানাডু ২.০

সেরা চলচ্চিত্র মানেই অরসেন ওয়েলসের সিটিজেন কেইন। সিনেমার মূল চরিত্র চার্লস ফসটারের কাল্পনিক বাড়ির নাম ছিল ‘জানাডু’। বিল গেটস তাঁর বাড়ির নামও রেখেছেন ‘জানাডু ২.০’। ওয়াশিংটনের মেডিনায় অবস্থিত বাড়িটির মূল্য ১২ কোটি ৭০ লাখ ডলার। এর আয়তন ৬৬ হাজার বর্গফুট।

৫. পরেন ১০ ডলারের ঘড়ি, কিন্তু...

বিল গেটসের হাতঘড়িটির দাম মাত্র ১০ ডলার। নিজেই নিজের প্লেট পরিষ্কার করেন। কিন্তু তাঁর নিজের লাইব্রেরিতে আছে এক মহামূল্যবান সম্পদ। লেওনার্দো দা ভিঞ্চির নোটবুক। এর নাম কোডেক্স লেইচেস্টার। এর মূল্য ৩ কোটি ৮ লাখ ডলার।

বিশ্বব্যাংকের মতে দারিদ্র্য কমেছে অসমভাবে, অর্থমন্ত্রী বললেন ঠিক নয় ।।