Sunday, January 5, 2014

কুষ্টিয়ায় বেতের তৈরি আসবাবপত্রের কদর বেড়েছে


কুষ্টিয়া, ২২ ডিসেম্বর: কুষ্টিয়ায় বেতের তৈরি আসবাবপত্রের কদর বেড়েছে। প্রয়োজনীয় অর্থ ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে বেতের নানা পণ্যের উৎপাদনে বড় ধরনের প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে। কুষ্টিয়া শহরের কোর্টপাড়ার কেনি রোডস্থ সিডি ফার্নিচারে গিয়ে এমনটিই জানা গেছে। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, এখানে বেত দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে সোফাসেট, খাট, মোড়া, দোলনা, ড্রেসিং টেবিল, ইজি চেয়ার, রকিং চেয়ারসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র। এ প্রতিষ্ঠানের প্রধান মুছা। তিনি তার দুই সহযোগী মিলন ও ইছাককে নিয়ে কাজ করেন। দীর্ঘ ১২ বছর ধরে তিনি রাজশাহী থেকে বেতশিল্পের ওপর প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন। কুষ্টিয়ায় এখন নিজেই গড়ে তুলেছেন বেতশিল্পের একটি প্রতিষ্ঠান। সম্পূর্ণ বেত দিয়ে তৈরি এ আসবাবপত্রের দিন দিন কদর বৃদ্ধি পাচ্ছে বলেও তিনি জানান।

মূলত বেতগুলো আসে মিয়ানমার থেকে। বেতশিল্পী মুছা ঢাকা থেকে এ বেত সংগ্রহ করে থাকেন। তিনি জানান, সম্পূর্ণ হাতের কারুকাজ দ্বারা বেত দিয়ে আসবাবপত্র তৈরি করে থাকেন। চিকন, মাঝারি ও মোটা বিভিন্ন সাইজের বেত দিয়ে এগুলো তৈরি করা হয়। তবে বারবার আগুনের তাপ দিয়ে বেতগুলো বাঁকা করতে হয়। বেত দিয়ে তৈরি করতে ব্যবহার করা হয় বেতেরই চটালি। রেডিমেড এবং অর্ডার নিয়ে এসব আসবাবপত্র তৈরি করা হয়।

তৈরিকৃত আসবাবপত্র বিভিন্ন দামে বিক্রি করে থাকেন। সোফাসেট আট হাজার ৫০০ থেকে ১৮ হাজার টাকা, খাট চার হাজার থেকে ছয় হাজার টাকা, মোড়া ১০০ থেকে ৪০০ টাকা, দোলনা ১৮০০ থেকে দুই হাজার টাকা, ড্রেসিং টেবিল ছয় হাজার থেকে সাত হাজার টাকা এবং চেয়ার দুই হাজার টাকা করে বিক্রি করে থাকেন বলে জানান।

কর্মদক্ষতা ও হাতের নিপুণ কারুকাজে বেতের তৈরি আসবাবপত্র যেকোনো মানুষের নজর কাড়ে। তবে এর স্থায়িত্বকাল নিয়ে সাধারণের নানা প্রশ্ন রয়েছে।

উৎপাদক মুছা জানান, একটি কাঠের তৈরি আসবাবপত্রের চেয়ে এর স্থায়িত্ব বেশি হবে। তিনি রফতানি মানের আসবাবপত্রও তৈরি করতে পারেন। একই বেতের তৈরি সামগ্রী হলেও এর মধ্যে অনেক কারুকাজ আছে, রয়েছে নানা ধরনের স্থায়িত্ব কৌশল।

মুছা বলেন, একই আসবাবপত্রের স্থায়িত্ববকাল ১০ বছর আবার ওই আসবাবপত্রের স্থায়িত্বকাল ২০ বছর করা যায়। তবে দামের পার্থক্য এবং আর্থিক অসংগতির কারণে ওই মানের সামগ্রী তৈরি করা সম্ভব হয় না। তবে সরকারিভাবে আর্থিক সহযোগিতা পেলে বড় ধরনের কারখানা গড়ে তোলা সম্ভব বলে আশা প্রকাশ করেন। যার ফলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রফতানি করা সম্ভব হবে বলে আশা করেন। 

No comments:

Post a Comment