পিরোজপুর: পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার গাজীপুর গ্রামের কৃষক হুমায়ুন টমেটো চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। তিন মাসে তিনি উপার্জন করেছেন আড়াই লাখ টাকা। আর এ টমেটো চাষে তিনি ব্যবহার করেছেন জৈব সার। পোকা মাকড় দমনে বিষ প্রয়োগ না করে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন। দীর্ঘ দশ বছর ধরে কৃষি কাজ করে তার স্বচ্ছলতা না এলেও চলতি মৌসুমে শীতকালীন টমেটো চাষ করে তার আর্থিক দৈন্যতা ঘুচেছে।
হুমায়ুন কবীর জানিয়েছেন, ভান্ডারিয়ার গাজীপুর গ্রামের এক কৃষক পরিবারের সন্তান তিনি। ২০০২ সালে এসএসসি পাশ করে অভাব অনটনের সংসারে উপার্জনের জন্য কৃষি কাজ শুরু করতে হয় তাকে। আমন ও আউশ ধান চাষের পাশাপাশি স্বল্প পরিসরে বাড়ির আশপাশে বিভিন্ন ধরণের শীত ও গ্রীষ্মকালীর শাক সবজীর চাষাবাদ করে সংসার চললেও অর্থ জমানো তার পক্ষে সম্ভব হয়নি। বরং ধার-দেনা করে তাকে চলতে হয়েছে। কিন্তু এবার টমেটো চাষ করে আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছেন ভান্ডারিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলামের সহযোগিতায়। কারণ তার পরামর্শে এ বছর শীত মৌসুমে টমেটোর চাষ শুরু করেন হুমায়ুন।
মাত্র দু’একর জমিতে সর্বমোট ৪৮ হাজার টাকা খরচ হয় টমেটো চাষে। এখন পর্যন্ত প্রায় আড়াই লক্ষ টাকার টমেটো বিক্রি হয়েছে। আরও ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকার টমেটো ক্ষেতে রয়েছে তার। মৌসুমের শুরুতে প্রতিটন ৩০ হাজার টাকা করে বিক্রি হলেও পর্যায়ক্রমে দাম কমে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার টাকায়।
ভান্ডারিয়া বাজারের কাঁচা মালের পাইকারী ব্যবসায়ী মোঃ হায়দার আলী জানান, হুমায়ুন টমেটো চাষে কীটনাশক ব্যবহার করেননি এবং আমরাও এই টমেটো পাকাতে কোন রাসায়নিক প্রয়োগ করিনি বিধায় খুচরা বিক্রেতাদের কাছে তথা ক্রেতা সাধারণের কাছে এই টমেটোর যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। হুমায়ুনের সাফল্য দেখে অনেক বেকার যুবক বিভিন্ন ধরণের চাষাবাদে ঝুঁকছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম জানান, কৃষি বিভাগের পরামর্শ নিয়ে টমেটো চাষ করে হুমায়ুন আজ স্বাবলম্বী। আমাদের পরামর্শ নিয়ে সঠিকভাবে ধান, গম, শাক-সবজী, ফল-ফলাদীর চাষাবাদ করলে লাভবান হওয়া সম্ভব। কারণ বিজ্ঞানভিত্তিক চাষাবাদে আমরা পরামর্শ দিয়ে থাকি।
No comments:
Post a Comment