Thursday, April 24, 2014

তিনটি দেশে রফতানি হচ্ছে খুলনার মাটির টালী

খুলনা: বিলুপ্তপ্রায় মাটির টালী শিল্প আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। খুলনা বিভাগ থেকে তিনটি দেশে মাটির টালী রফতানি হচ্ছে। গেল বছর খুলনা বিভাগ থেকে অন্তত ৬ লাখ ৪৬ হাজার ৮৩৫ ইউরো, ১ লাখ ৫২ হাজার ৬৩৫ মার্কিন ডলার ও ৭ হাজার ২৮৩ পাউন্ড স্ট্যালিন মূল্যের মাটির টালী রফতানি করা হয়েছে। এতে একদিকে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হচ্ছে, অন্যদিকে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুয়োগ সৃষ্টি হচ্ছে। 

খুলনা রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো সূত্রে জানা যায়, বিদায়ী বছরে খুলনা বিভাগের ১০ জেলা খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, যশোর, মাগুরা, বিনাইদহ, নড়াইল, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর থেকে তিনটি দেশ ইতালি, যুক্তরাজ্য ও নেদারল্যান্ড এ অন্তত ৬ লাখ ৪৬ হাজার ৮৩৫ ইউরো, ১ লাখ ৫২ হাজার ৬৩৫ মার্কিন ডলার এবং ৭ হাজার ২৮৩ পাউন্ড স্ট্যালিন মূল্যের মাটির টালী রফতানি করা হয়েছে। 

এর মধ্যে জানুয়ারি মাসে মাটির টালী রফতানি হয়েছে ৬৪ হাজার ৬৭৩ ইউরো মূল্যের। ফেব্রুয়ারি মাসে মাটির টালী রপ্তানি হয়েছে ৩৪ হাজার ৪৫ মার্কিন ডলার। মার্চ মাসে মাটির টালী রফতানি হয়েছে ৪২ হাজার ২৬১ ইউরো ৬ হাজার ৭৩৭ মার্কিন ডলার মূল্যের। এপ্রিল মাসে মাটির টালী রফতানি হয়েছে ২ লাখ ৬ হাজার ৭৪ মার্কিন ডলার মূল্যের। মে মাসে মাটির টালী রফতানি হয়েছে ১৫ হাজার ৮২৮ মার্কিন ডলার এবং ১ হাজার ১২৩ পাউন্ড স্ট্যালিন মূল্যের। 

জুন মাসে মাটির টালী রফতানি হয়েছে ২২ হাজার ৫১৯ ইউরো ডলার মূল্যের। জুলাই মাসে মাটির টালী রফতানি হয়েছে ২৫ হাজার ১৮৫ মার্কিন ডলার এবং ৬ হাজার ৩৮ ইউরো ডলার মূল্যের। আগস্ট মাসে মাটির টালী রফতানি হয়েছে ৩৪ হাজার ৬২৫ ইউরো এবং ৬ হাজার ১৬০ স্ট্যালিন পাউন্ড মূল্যের। সেপ্টেম্বর মাসে মাটির টালী রফতানি হয়েছে ৪ লাখ ৩৯ হাজার ৭৫৯ ইউরো মূল্যের। অক্টোবর মাসে মাটির টালী রফতানি হয়েছে ২০ হাজার ৫৫৮ মার্কিন ডলার মূল্যের। নভেস্বর মাসে মাটির টালী রফতানি হয়েছে ৩৩ হাজার ৬৬৯ ইউরো মূল্যের। 

ডিসেম্বর মাসে মাটির টালী রফতানি হয়েছে ১৮ হাজার ২৯০ ইউরো ডলার। মাটির টালী উৎপাদন করে একদিকে, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হচ্ছে অন্যদিকে, ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। কিন্তু মাটির টালী উৎপাদনে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কিনা গবেষণার বিষয় বলে জানিয়েছেন পরিবেশবাদীরা। 

টালী শ্রমিক শফিকুল ইসলাম জানান, আগে মাটির টালীর তেমন একটা চাহিদা ছিলো না। গত বছর ধরে এর চাহিদা বেড়েছে। ফলে আমরা যারা টালীর কাজ করি তাদের আয়-উপার্জন এখন আগের চেয়ে বেড়েছে। টালী ব্যবসায়ী কামাল আহমেদ জানান টালী বিদেশে রফতানি হচ্ছে। আশা করি আগামীতে এর পরিমাণ আরো বাড়বে।

খুলনা পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক তরুন কান্তি শিকদার জানান, টালী পোড়ালে পরিবেশের ক্ষতি হবে। কিন্তু ক্ষতির পরিমাণ কেমন তা গবেষণা করে দেখতে হবে। এর সাথে অনেক মানুষের জীবন-জীবিকা জড়িত এবং রফতানি করে অনেক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হচ্ছে। অতএব, এদিকে লাভবান হতে গেলে অন্যদিকে একটু ক্ষতি হবে, এটিই স্বাভাবিক।

খুলনা রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো কতৃপক্ষ জানায়, মাটির টালী উৎপাদন বিলুপ্ত হতে বসেছিল। শিল্পটি আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। দেশের চাহিদা মিটিয়ে এখন বিদেশে রফতানি হচ্ছে। কলারোয়া এলাকায় এটি বেশি উৎপাদিত হচ্ছে। এর সাথে অনেক মানুষের জীবন-জীবিকা জড়িত এবং রফতানি করে বেশ কিছু বৈদেশিক মুদ্রাও অর্জিত হচ্ছে। 

No comments:

Post a Comment