Tuesday, February 22, 2022

প্রথম ‘জয় বাংলা’ স্লোগানটি যারা উচ্চারণ করেন

প্রথম ‘জয় বাংলা’ স্লোগানটি যারা উচ্চারণ করেন

প্রথম ‘জয় বাংলা’ স্লোগানটি যারা উচ্চারণ করেন

বাংলাদেশে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সরকারের এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। বলা হয়েছে- সকল সাংবিধানিক পদ, সরকারি অফিসের কর্মকর্তাদের বক্তব্যে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিতে হবে।

এ ছাড়া সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অ্যাসেম্বলি, সভা-সমাবেশ, সেমিনারে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান ব্যবহার করতে হবে। ২০২০ সনের ১০ই মার্চ হাইকোর্টের তরফে এক রায়ে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানকে বাংলাদেশের জাতীয় স্লোগান করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেয়া হয়। এরই আলোকে রোববার মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান হিসেবে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

উল্লেখ করা যায় যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন ও সশস্ত্র যুদ্ধে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান এক অনন্য ভূমিকা পালন করে। এই স্লোগান মুক্তিযুদ্ধে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করেছিল।

‘জয় বাংলা’ স্লোগান ছিল মুক্তিযুদ্ধকালীন বাঙালির প্রেরণার উৎস। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়- কখন, কীভাবে এই স্লোগানের উৎপত্তি হয়েছিল।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের নিউক্লিয়াস ও বিএলএফ’র প্রতিষ্ঠাতা সশস্ত্র যুদ্ধের প্রধান সংগঠক সিরাজুল আলম খান তার ‘স্বাধীনতা-সশস্ত্র সংগ্রাম এবং আগামীর বাংলাদেশ’ বইয়ে এর বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন।

তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৯৬৯ সনের ১৫ই সেপ্টেম্বর প্রথম এই স্লোগান ওঠে। সেদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের একটি সভা ছিল। মধুর ক্যান্টিনের সে সভায় ১৭ই মার্চ শিক্ষা দিবস যৌথভাবে পালনের জন্য কর্মসূচি প্রণয়ন নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা চলছিল। সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ আহূত সেই সভায় আলোচনার একপর্যায়ে তৎকালীন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের (জিন্নাহ হল যা বর্তমানে সূর্যসেন হল) প্রথম বর্ষের ছাত্র ও ছাত্রলীগ নেতা পরবর্তীকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আফতাব উদ্দিন আহমেদ ও দর্শন বিভাগের ছাত্র ও ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক চিশতি শাহ হেলালুর রহমান (৭১-এ শহীদ) প্রথম ‘জয় বাংলা’ স্লোগানটি উচ্চারণ করেন।

সভা চলাকালীন সময়েই অনেকটা আকস্মিকভাবে সবাইকে চমকে দিয়ে চিৎকার করে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেন এই দু’জন। সঙ্গে সঙ্গে সাত-আটজন কর্মী প্রতিধ্বনি করেন ‘জয় বাংলা’।

এ ছাড়া স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ তখন হাতে লেখা তিন পাতার একটি পত্রিকা প্রকাশ করে- যার নাম ছিল ‘জয় বাংলা’। ১৯৭০-এর ১৮ই জানুয়ারি পল্টনে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জনসভায় সিরাজুল আলম খান সর্বপ্রথম ‘জয় বাংলা’ স্লোগানটি উচ্চারণ করেন।

সিরাজুল আলম খান লিখেছেন, বঙ্গবন্ধুও এই স্লোগানটি পছন্দ করেছিলেন। ’৭০-এর ৭ই জুন ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে বিশাল এক জনসভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার ভাষণে প্রথম যুক্ত করেন এই স্লোগানটি।

তিনি আরও লিখেছেন, ‘জয় বাংলা’ স্লোগানের উৎপত্তি এবং জাতীয় স্লোগানে পরিণত হওয়ার এক ইতিহাস রয়েছে। নিউক্লিয়াস’র পক্ষ থেকে বিভিন্ন স্লোগান নির্ধারণের জন্য তিনটি সেলকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। এরমধ্যে একটি সেল ‘জিয়ে সিন্ধ বা জিও সিন্ধ’-এর মতো করে ‘জয় বাংলা’ শব্দটি কাজে লাগানো যায় কি-না সিরাজুল আলম খানের কাছে তা উপস্থাপন করে।

এই সেলটির মূল দায়িত্বে ছিলেন তৎকালীন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র আফতাব উদ্দিন আহমেদ। সুবিধা মতো সময়ে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানটি নিউক্লিয়াস’র বিবেচনায় আসে। নিউক্লিয়াস’র সদস্যদের প্রত্যেকের ভেটো দেয়ার সুযোগ ছিল। এই ভেটো প্রয়োগের কারণে প্রায় ৮-১০ দিন সময় লাগে ‘জয় বাংলা’কে অনুমোদন প্রদানের ক্ষেত্রে। পাশাপাশি বলে দেয়া হয়েছিল, স্লোগানটিকে সতর্কতার সঙ্গে ব্যবহার করার জন্য। যেন আর দশটা স্লোগানের মতো ‘জয় বাংলা’কে যত্রতত্র ব্যবহার না করা হয়।

‘তুমি কে? আমি কে? বাঙালি বাঙালি’, ‘তোমার আমার ঠিকানা, পদ্মা-মেঘনা-যমুনা’, ‘পিন্ডি না ঢাকা? ঢাকা-ঢাকা’। ‘ছয় দফা- ছয় দফা, না হলে এক-দফা’। ‘এগারো দফা-এগারো দফা, না হলে এক দফা’। ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো’।

এগুলো নিউক্লিয়াস সেলের মাধ্যমে স্লোগান হিসেবে গ্রহণ করা হয়, যা পরবর্তীতে জনপ্রিয়তা অর্জন করে। ‘জয় বাংলা’ স্লোগানের বিষয়ে ছাত্রলীগের দু’একজন এবং আওয়ামী লীগের সবাই (বঙ্গবন্ধু ছাড়া) ঘোর আপত্তি করতো। আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটিতেও এই স্লোগান নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়। কেউ কেউ জয় বাংলাকে নিয়ে ভারতঘেঁষা রাজনীতি করা হচ্ছে- এই যুক্তি তুলে ধরেন।

শুধু কমিটিতেই নয়, তাজউদ্দীন আহমদ ছাড়া আওয়ামী লীগের সকলেই ‘জয় বাংলা’র বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। এমনকি তারা এই স্লোগানের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর কাছে অভিযোগও করেন। এ ব্যাপারে বঙ্গবন্ধুর সরাসরি উত্তর ছিল- এ নিয়ে তোমাদের মাথা ঘামাবার কোনো দরকার নেই।

৪ঠা জানুয়ারি ১৯৭০। সেদিন ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্‌যাপনে সৈয়দ নজরুল ইসলাম ছিলেন প্রধান অতিথি। অনুষ্ঠানের শুরুতে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেয়া শুরু হলে দু’একজন আপত্তি করেন এবং এই স্লোগানটি বন্ধ করার জন্য সৈয়দ নজরুল ইসলামকে অনুরোধ জানান। ১৮ই জানুয়ারি ১৯৭০-এর পল্টনের জনসভার বক্তৃতার মঞ্চটি ছিল বিশেষভাবে নির্মিত।

মঞ্চের শামিয়ানায় আটকানো হার্ডবোর্ডের উপর লাগানো কাঠের খণ্ডে উজ্জ্বল লাল রঙয়ের দুটি শব্দ। এরমধ্যে ‘জয় বাংলা’ জ্বল জ্বল করছিল। দূর থেকেই তা দেখা যাচ্ছিল। এই সভায় সভাপতিত্ব করছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাজউদ্দীন আহমদের বক্তব্যের পর বঙ্গবন্ধু মঞ্চে বসা অবস্থায় বললেন- ‘সিরাজ স্লোগান দে’। সিরাজুল আলম খান এই মুহূর্তটির জন্য অপেক্ষা করছিলেন।

দ্রুত মাইকের সামনে গিয়ে আবেগমিশ্রিত কণ্ঠে বললেন- আসুন, সাত কোটি মানুষের পক্ষ হয়ে আমরা সকলকে জানিয়ে দেই, যার কণ্ঠে যতো জোর আছে আমরা একই সঙ্গে বলে উঠি ‘জয় বাংলা’। আজ থেকে ‘জয় বাংলা’কে আমাদের ভবিষ্যৎ আন্দোলনের স্লোগান হিসেবে ব্যবহার করা হবে। তখন লাখো কণ্ঠে আওয়াজ উঠলো- ‘জয় বাংলা’। এখানেই শেষ নয়।

১৯৭১ সনের ৭ই মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়েই তার অবিস্মরণীয় বক্তৃতা শেষ করেছিলেন। সিরাজুল আলম খান তার বইতে লিখেছেন- ‘জয় বাংলা’ কোনো দল বা ব্যক্তির স্লোগান নয়। এই স্লোগান ছিল বাঙালির আত্মপরিচয়ের স্লোগান। এটা নিছক কোনো স্লোগান নয়। এর পেছনে রয়েছে দীর্ঘ ইতিহাস। যে স্লোগান বাঙালি জাতিকে করেছিল ঐক্যবদ্ধ।

Sunday, February 20, 2022

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি জুতার রপ্তানি বেড়েছে ৭৩.২২ ভাগ

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি জুতার রপ্তানি বেড়েছে ৭৩.২২ ভাগ

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি জুতার রপ্তানি বেড়েছে ৭৩.২২ ভাগ

গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি জুতার রপ্তানি বেড়েছে ৭৩.২২ শতাংশ। এতে রপ্তানিকারকদের আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭৪.৫৮ মিলিয়ন ডলারে।

গত বছরের মোট আয়ের মধ্যে ২৪৯ মিলিয়ন ডলার এসেছে চামড়াজাত জুতা রপ্তানি করে, আর বাকিটা এসেছে অচামড়াজাত জুতা থেকে।

ওটেক্সা’র (অফিস অফ টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেল) তথ্য বলছে, ২০২০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জুতা রপ্তানি করে ১৫৮.৫১ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে বাংলাদেশ।

২০১৫ সাল থেকে বাংলাদেশের জুতা রপ্তানি ১০৪ মিলিয়ন ডলার থেকে ১৬১.৫০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭৪.৫৮ মিলিয়ন ডলারে ।

মার্কিন-চীন বাণিজ্য উত্তেজনা এবং একটি একক দেশের ওপর নির্ভরতা হ্রাস, এর অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে। যুক্তিসঙ্গত দাম এবং সফলভাবে তুলে ধরার মাধ্যমে বাংলাদেশের মান উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়েছে।

পিকার্ড বাংলাদেশ লিমিটেড নামের একটি রপ্তানিমুখী চামড়ার পণ্য প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, “মার্কিন সরকার তার একক দেশের আমদানি নির্ভরতা কমাচ্ছে। এছাড়া, বাণিজ্য দ্বন্দ্বের কারণে চীন থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করা পণ্যগুলো ক্রমবর্ধমান শুল্কের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”

ইসলাম বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যের ক্ষেত্রে পণ্য কেনার গন্তব্যের ওপর একটি ভূ-রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। উপরন্তু, মার্কিন খুচরা বিক্রেতারা শুল্কের পরিমাণ আরও বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন। ফলে তারা প্রচুর পরিমাণে অর্ডার বাংলাদেশে স্থানান্তরিত করেছে, যা আমাদের রপ্তানি বাড়াতে সাহায্য করেছে।

খুচরা বিক্রেতা ও ব্র্যান্ডের ক্রমবর্ধমান আগ্রহ ধরে রাখতে হবে রপ্তানিকারকদের। একই সাথে রপ্তানিকারকদের সুবিধার্থে সরকারকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।

লেদারেক্স ফুটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ নাজমুল হাসান বলেন, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার আমদানিকারকদেরকে চীনের ওপর নির্ভরতা কমাতে প্ররোচিত করছে, যাতে পণ্যের আমদানি গন্তব্য কোনো একটি দেশের ওপর নির্ভরশীলতা কম হয়।”

বাংলাদেশের লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস-প্রেসিডেন্ট নাজমুল বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য চীনের জিনজিয়াং অঞ্চল থেকে মার্কিন আমদানি নিষেধাজ্ঞা এবং শুল্ক যুদ্ধ ক্রেতা ও ব্র্যান্ডগুলোকে পণ্য ক্রয়ের গন্তব্য স্থানান্তর করতে উৎসাহিত করেছে।

এ ব্যবসায়ী নেতা বলেন, “আমরা মার্কিন বাজারের সিংহভাগ দখল করতে সক্ষম হবো, যদি আমরা পরিবেশ অনুকূলে, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারি এবং লিড টাইম কমাতে পারি।”

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন এ বিষয়ে একমত। তিনি বলেন, “দেশে বিদ্যমান কাঁচামাল বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শক্তি, আমরা সহজেই মার্কিন বাজারে নেতৃত্ব দিতে পারি।”

এ অর্থনীতিবিদ আরও বলেছেন, যদিও পরিবেশগত আর কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ এ সেক্টরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যা সুযোগগুলো কাজে লাগাতে বাধা সৃষ্টি করে৷ সরকারের উচিত পৃথক কোম্পানিগুলোকে ইফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (ইটিপি) স্থাপনের অনুমতি দেয়া। যদিও এটি একক কোম্পানির পক্ষে কঠিন, তবে তাদের ব্যবসার স্বার্থে এটি করা উচিত।

বাংলাদেশের ফুটওয়্যার পণ্যের ব্র্যান্ডিং দেশের রপ্তানি আয়ের বড় প্রবৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

মেট্রোপলিটন চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সভাপতি মো: সাইফুল ইসলাম বলেন, “আমেরিকান ক্রেতা এবং ব্র্যান্ডগুলো বাংলাদেশি পণ্য আর এসবের গুণমানের সাথে পরিচিত ছিল না, কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করায় রপ্তানিকারকদের তাদের সাথে সংযুক্ত করেছে।”

তিনি বলেন, “তারা আন্তর্জাতিক বাংলাদেশি চামড়ার পাদুকা এবং চামড়াজাত পণ্যের সোর্সিং শোয়ের আয়োজন করেছে।

দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন অধিকার গোষ্ঠীর সমালোচনার মুখে বায়ু ও পানি দূষণ রোধে রাজধানীর হাজারীবাগ থেকে ঢাকার সাভার উপজেলায় ট্যানারি স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।

২০১৭ সালের এপ্রিলে হাজারীবাগে কাঁচা চামড়া সরবরাহ বন্ধ করে দেয় সরকার এবং প্রায় ২০০টি ট্যানারিকে সাভার চামড়া শিল্প নগরীতে স্থানান্তর করতে বাধ্য করে।

অনেক ট্যানার সাভারে স্থানান্তরে ব্যর্থ হওয়ায় চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রপ্তানিতে উন্নতি হয়েছে।

চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানির বর্তমান অবস্থা

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি মেয়াদে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য থেকে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ২৯.৬৬ শতাংশ বেড়ে ৬৮২.৭৪ মিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা ছিল ৫২৭ মিলিয়ন ডলার।

চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি ৩৭.৪১ শতাংশ বেড়ে ১৮৩ মিলিয়ন এবং চামড়ার জুতা ২৫.৭৯ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪১৪.৫২ মিলিয়ন ডলারে।

ওয়ালটনের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহী দক্ষিণ সুদান

ওয়ালটনের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহী দক্ষিণ সুদান

ওয়ালটনের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহী দক্ষিণ সুদান

কারখানা পরিদর্শনে দুই মন্ত্রীসহ ৭ সদস্যের প্রতিনিধি

বাংলাদেশী ইলেকট্রনিক্স জায়ান্ট ওয়ালটনের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহ দেখিয়েছেন বাংলাদেশে সফররত দক্ষিণ সুদানের দুই মন্ত্রীসহ ৭ সদস্যের প্রতিনিধিদল।

বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২২) গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি’র কারখানা পরিদর্শনে এসে দক্ষিণ সুদানের প্রতিনিধিদল এই আগ্রহের কথা জানায়। সাত সদস্যের ওই প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন দেশটির পররাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক উপমন্ত্রী দেং দাউ দেং মালেক।

এ সময় তাঁর সফরসঙ্গী ছিলেন দ. সুদানের প্রতিরক্ষা উপমন্ত্রী জেনারেল চোল থন বালোক, ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র মহাপরিচালক লিও ওকাহি লোলে, জয়েন্ট বর্ডার ভেরিফিকেশন অ্যান্ড মনিটরিং মেকানিজমের মেজর জেনারেল মাউ মানাসে মালেক, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা মায়োম আলিয়ার, পররাষ্ট্র উপমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারি ডিং ডেং এবং প্রতিরক্ষা উপমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারি মনিলাক মনিজক রিয়াক।

অতিথিদের সঙ্গে আরো উপস্থিত ছিলেন ইথিওপিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশী রাষ্ট্রদূত মো. নজরুল ইসলাম, আফ্রিকায় নিযুক্ত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহা-পরিচালক মো. তরিকুল ইসলাম ও অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি রারেয়া বেগম, বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আব্দুল আলিম তরফদার ও মো. শামীম কামাল, লে. ক. মো. শাহরিয়ার মোর্শেদ প্রমূখ।

প্রতিনিধিদলের প্রধান দেং দাউ দেং মালেক বলেন, বিশ্ব বাজারে ওয়ালটন খুব সুপরিচিত। তাই ওয়ালটনের সঙ্গে ব্যবসায়িক ও বাণিজ্য সম্ভাবনার ক্ষেত্রগুলো খুঁজে বের করার লক্ষ্যে কারখানা পরিদর্শনের এই উদ্যোগ। পূর্ব-মধ্য আফ্রিকার দেশগুলোতে যেমন- ইথিওপিয়া, উগান্ডা, কঙ্গো, সুদান ও মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রের বাজারে প্রবেশদ্বার হিসেবে কাজ করবে দক্ষিণ সুদান। সেজন্য ওয়ালটনের মত বিশ্বের কয়েকটি বড় বড় প্রতিষ্ঠানকে দক্ষিণ সুদানের সঙ্গে ব্যবসায়িক ও বাণিজ্য সম্পর্ক স্থাপনের আহবান জানাচ্ছি। এক্ষেত্রে তাদেরকে প্রয়োজনীয় সব সহযোগিতা প্রদান করা হবে।

ইথিওপিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশী রাষ্ট্রদূত মো. নজরুল ইসলাম বলেন, দক্ষিণ সুদানের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদারকরণে কাজ করছে বাংলাদেশ। সেজন্য বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় বাণিজ্যিক ক্ষেত্রগুলো খুঁজে বেরা করতে দ. সুদানের প্রতিনিধিদলকে সহযোগিতা করা হচ্ছে। এরই প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের ফ্ল্যাগশিপ ইন্ডাস্ট্রি ওয়ালটন কারখানায় এই পরিদর্শন।

বৃহস্পতিবার বিকালে অতিথিরা কারখানা প্রাঙ্গণে পৌঁছলে তাদেরকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. আলমগীর আলম সরকার, ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের ডিএমডি লিয়াকত আলী, ওয়ালটন এইচআর বিভাগের প্রধান কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) এসএম শাহাদাত আলম।

অতিথিরা প্রথমে ওয়ালটনের বিশাল কর্মযজ্ঞের উপর নির্মিত ভিডিও ডক্যুমেন্টারি উপভোগ করেন। এরপর ওয়ালটনের সুসজ্জিত প্রোডাক্ট ডিসপ্লে সেন্টার ঘুরে দেখেন। পরে অতিথিরা ওয়ালটনের অত্যাধুনিক রেফ্রিজারেটর ম্যানুফেকচারিং ও কম্প্রেসর উৎপাদন কারখানা ঘুরে দেখেন।

বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরে কারখানা স্থাপনের পরিকল্পনা ওয়ালটনের

বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরে কারখানা স্থাপনের পরিকল্পনা ওয়ালটনের

বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরে কারখানা স্থাপনের পরিকল্পনা ওয়ালটনের

ইলেকট্রনিকস পণ্যের উৎপাদন বাড়াতে চায় দেশীয় ব্র্যান্ড ওয়ালটন। এবার তারা চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে অবস্থিত দেশের বৃহত্তম অর্থনৈতিক অঞ্চল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরে কারখানা স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছে, যাতে দেশের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বিদেশেও টেলিভিশন (টিভি) ও ফ্রিজ রপ্তানি করা যায়।

জানা গেছে, ‘আমাদের পণ্য’ স্লোগানে বাজারে আসা ওয়ালটন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরে ৩০০ একর জমি চেয়েছে। কিন্তু সেখানে জমির অপ্রতুলতার কারণে তাদের নামে ১০০ একর জমি বরাদ্দ করেছে বেজার নির্বাহী বোর্ড। এখন সবাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আনুষ্ঠানিক অনুমোদনের অপেক্ষায়। সেখান থেকে সবুজ সংকেত পেলেই শুরু হবে ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড নামের নতুন কারখানা নির্মাণের কাজ।

ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) গোলাম মুর্শেদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরে কারখানা নির্মাণের জন্য আমরা বেজার কাছে জমি চেয়েছি। জমি পেলে আমরা সেখানে বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিকস পণ্য উৎপাদন করব।’

ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ২০০৬ সালে নিবন্ধিত হয়। এটি ওয়ালটন গ্রুপের প্রধান কোম্পানি। কোম্পানিটির সব কারখানা গড়ে তোলা হয়েছে গাজীপুরের কালিয়াকৈরের ওয়ালটন হেডকোয়ার্টার্সে, যা ঢাকা থেকে ৬৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। সেখানে জমির পরিমাণ ৭৬৪ একর। বর্তমানে ওয়ালটনের ১৫টির বেশি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তাদের উৎপাদিত উল্লেখযোগ্য পণ্যগুলো হলো মুঠোফোন, ফ্রিজ, টিভি, এসি, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, লিফট, এলইডি বাতি। এ ছাড়া কোম্পানিটি গৃহস্থালিতে ব্যবহার্য বিভিন্ন সরঞ্জামসহ ইলেকট্রিক ও রাসায়নিক পণ্যসামগ্রী তৈরি করে। বর্তমানে দেশে টিভির বাজারে প্রায় ৪৫ শতাংশ ও এসির ক্ষেত্রেও ২৫ শতাংশের বেশি হিস্যা তাদের বলে দাবি ওয়ালটনের।

বেজা থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরের প্রাথমিকভাবে ওয়ালটন ৬৫ কোটি ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে, যা বাংলাদেশের সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকার মতো (প্রতি ডলার ৮৬ টাকা ধরে)। এই কারখানায় মোট ১৫ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে। কারখানায় কী কী পণ্য উৎপাদন হবে, তার একটি ধারণাও দিয়েছে ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ। তারা জানিয়েছে, সেখানে টিভি, ফ্রিজ, এসি, কম্প্রেসর, তার, অটোমোবাইল ও বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিকস পণ্য উৎপাদন করবে। মোট উৎপাদিত পণ্যের ৬০ শতাংশ দেশের বাজারে বিক্রি করবে। আর বাকি ৪০ শতাংশ পণ্য বিদেশে রপ্তানি করা হবে।

লিন্ডে বাংলাদেশও জমি পাচ্ছে

বহুজাতিক কোম্পানি লিন্ডে বাংলাদেশও বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে। দেশের সর্ববৃহৎ অক্সিজেন উৎপাদনকারী কোম্পানিটি বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরে এয়ার সেপারেশন ইউনিট (এএসইউ) নির্মাণ করবে। প্রস্তাবিত এই প্ল্যান্টে কারখানা, মেডিকেলে ব্যবহারের তরল অক্সিজেন ও নাইট্রাস অক্সাইড উৎপাদিত হবে।

বেজার তথ্য বলছে, লিন্ডে বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরে পাঁচ একর জমি চেয়েছে। তাদের সে পরিমাণ জমিই অনুমোদন দিয়েছে বেজার নির্বাহী বোর্ড। প্রাথমিকভাবে সেখানে ১৫৩ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে লিন্ডে। পরে বিনিয়োগের পরিমাণ আরও বাড়বে।

লিন্ডে বাংলাদেশ হলো লিন্ডে পিএলসি গ্রুপের একটি কোম্পানি, যা জার্মানি ও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি বহুজাতিক কোম্পানি। ২০১৮ সাল থেকে অবশ্য কোম্পানিটির সদর দপ্তর আয়ারল্যান্ডের রাজধানী ডাবলিনে। বাংলাদেশে এ কোম্পানিটি ব্যবসা করছে ১৯৫৩ সাল থেকে। এর আগে ২০১৫ সালে রাজধানীর অদূরে রূপগঞ্জে এয়ার সেপারেশন ইউনিট স্থাপন করেছিল তারা।

বাইসাইকেল তৈরি করবে পিনাকল

বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরে বাইসাইকেলও তৈরি হবে। এটি করবে পিনাকল বাইসাইকেল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান। তারা সেখানে আট একর জমি পেতে যাচ্ছে। প্রাথমিকভাবে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরে সোয়া কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে পিনাকল বাইসাইকেল। পরে বিনিয়োগের পরিমাণ আরও বাড়বে। বেজার নির্বাহী বোর্ডের সভায় এরই মধ্যে তাদের প্রস্তাবটি অনুমোদন করা হয়েছে।

পিনাকল বাইসাইকেল ইন্ডাস্ট্রিজ সম্রাট কোল্ড স্টোরেজের একটি অঙ্গপ্রতিষ্ঠান। কোম্পানিটি বেজাকে জানিয়েছে, তারা শতভাগ রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠান। সে অনুযায়ী বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরে তৈরি করা বাইসাইকেল দেশের বাইরে রপ্তানি করা হবে।

হোটেল ও পর্যটন সেবায় এএমইজেড

এদিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরে হোটেল ও পর্যটন সেবা দেবে এএমইজেড ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান। তারা সেখানে পাঁচ একর জমি পাচ্ছে, আর বিনিয়োগ করবে দেড় কোটি ডলার বা ১২৭ কোটি টাকা। পরে তা আরও বাড়বে।

বেজার কর্মকর্তারা বলছেন, ৩০ হাজার একর জায়গাজুড়ে গড়ে উঠছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর। চলতি বছরের মধ্যে সেখানে আটটি বড় প্রতিষ্ঠান উৎপাদন শুরু করবে।

ক্রোয়েশিয়া মার্কেটে ব্যাপক সাড়া ওয়ালটন টিভির

ক্রোয়েশিয়া মার্কেটে ব্যাপক সাড়া ওয়ালটন টিভির

ক্রোয়েশিয়া মার্কেটে ব্যাপক সাড়া ওয়ালটন টিভির

এবছর ৩ মিলিয়ন ডলারের টিভি রপ্তানির প্রত্যাশা

ইউরোপের দেশ ক্রোয়েশিয়ার বাজারে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে বাংলাদেশী ইলেকট্রনিক্স জায়ান্ট ওয়ালটন ব্র্যান্ডের এলইডি টেলিভিশন। দেশটিতে ওয়ালটন টিভির বাজার সম্প্রসারণ হচ্ছে অতি দ্রুত। ওয়ালটন টিভির সর্বাধুনিক প্রযুক্তি, ফিচার এবং উচ্চ গুণগত মান ক্রোয়েশিয়ার বাজারে অল্প সময়ে ক্রেতাদের আস্থা অর্জন করছে। এছাড়া ওয়ালটন টিভির সময়োপযোগী বিপণন কৌশল এই অসাধারণ সাফল্য অর্জনের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে।

সূত্রমতে, ক্রোয়েশিয়ায় ওইএম (ওরিজিনাল ইক্যুইপমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার) পদ্ধতির আওতায় ২০২০ সালে টিভি রপ্তানি শুরু করে ওয়ালটন। তবে ২০২১ সাল থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে নিজস্ব ব্র্যান্ড নামেই টিভি রপ্তানি করছে ওয়ালটন। ক্রোয়েশিয়ায় ওয়ালটন টিভি বিক্রয় ও বিপণন কার্যক্রম পরিচালনায় কাজ করছে দেশটির খ্যাতনামা ইলেকট্রনিক্স বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান ‘স্মার্টফোন আই ট্যাবলেট সার্ভিস ডিওও’।

ক্রোয়েশিয়াসহ বলকান ও মধ্য ইউরোপে দায়িত্বপ্রাপ্ত ওয়ালটন ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ইউনিটের প্রধান মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ক্রোয়েশিয়ার বাজারে ওয়ালটন টিভির গ্রাহকচাহিদা বাড়ছে দ্রুত। ইতোমধ্যে দেশটিতে ওয়ালটন টিভি রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় আড়াই মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২২ সালে ৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের টিভি রপ্তানির প্রত্যাশা ওয়ালটনের। সেজন্য ক্রোয়েশিয়ার বাজারে পরিচালিত হচ্ছে যুগোপযোগি ও আধুনিক বিপণন কৌশল। সেই উদ্দেশ্যে ইন্টারসপার, কউফল্যান্ডের মতো দেশটির বড় বড় সুপার শপে ওয়ালটন টিভি প্রদর্শন ও বিক্রয়ের পাশাপাশি ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে। পাশাপাশি স্থানীয় টিভি চ্যানেল এবং অন্যান্য গণমাধ্যমেও প্রচারিত হচ্ছে ওয়ালটন টিভির বিজ্ঞাপন।

ওয়ালটন টিভির চিফ বিজনেস অফিসার প্রকৌশলী মোস্তফা নাহিদ হোসেন জানান, ২০২০-২১ অর্থবছরে টিভি রপ্তানিতে ২৬৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে ওয়ালটনের। ওয়ালটন টিভির বড় রপ্তানি বাজার এখন ইউরোপ। বর্তমানে জার্মাানি, গ্রিস, আয়ারল্যান্ড, পোল্যান্ড, স্পেন, ইতালি, রোমানিয়া, নেদারল্যান্ডসহ ইউরোপের ১৪টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে ওয়ালটন টিভি। এবছর ইউরোপ, আমেরিকা ও এশিয়ার বেশ কিছু নতুন দেশে টিভি রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণে কাজ চলছে। ওয়ালটনের লক্ষ্য- বিশ্বব্যাপী ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ট্যাগযুক্ত টেলিভিশন ছড়িয়ে দিয়ে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরো উজ্জ্বল করা।

জানা গেছে, দেশের শীর্ষ টিভি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান এখন ওয়ালটন। বিশ্বের ৩৫টিরও বেশি দেশে রপ্তানি হচ্ছে ওয়ালটনের তৈরি টিভি। বিশ্বের সেরা ৫টি টেলিভিশন প্রস্তুতকারি প্রতিষ্ঠানের তালিকায় পৌঁছানোর মিশন নিয়ে কাজ করছে বাংলাদেশের এই সুপারব্র্যান্ড ও ইলেকট্রনিক্স জায়ান্ট।