Tuesday, February 22, 2022

বিশ্ববাজারে বাংলাদেশি পণ্য ছড়িয়ে দিচ্ছেন UK প্রবাসী ইকবাল

বিশ্ববাজারে বাংলাদেশি পণ্য ছড়িয়ে দিচ্ছেন UK প্রবাসী ইকবাল

Iqbal Ahmed OBE is a Bangladesh-born British entrepreneur Iqbal Ahmed এ সিমার্ক গ্রুপ প্রতিষ্ঠাতা সিলেট ইকবাল আহমেদ

বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় চেইন শপ ওয়ালমার্ট থেকে শুরু করে ছোট বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানেও মিলছে চিংড়িসহ নানা ধরনের হিমায়িত মাছ। এর মধ্যে বাংলাদেশের মাছও রয়েছে, যা সরবরাহ করছে যুক্তরাজ্যের সিমার্ক পিএলসি। এ সিমার্ক গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা সিলেটের ইকবাল আহমেদ। তাঁর হাত ধরে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের হিমায়িত মাছ যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপসহ বিশ্ববাজারে পৌঁছে যাচ্ছে। বদৌলতে বড় হচ্ছে সিমার্কের ব্যবসা।

১৯৭৬ সালে ম্যানচেস্টারে বাবার ব্যবসায়ে যোগ দেওয়ার মাধ্যমে ব্যবসায়ের জগতে প্রবেশ করেন ইকবাল আহমেদ। ওই বছরেই নিজের দুই ভাই কামাল আহমেদ ও বেলাল আহমেদকে সঙ্গে নিয়ে তিনি গড়ে তোলেন ইকবাল ব্রাদার্স অ্যান্ড কোম্পানি (ইবকো)। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই কোম্পানিটি বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের হিমায়িত মাছ, চিংড়িসহ নানা খাদ্যসামগ্রীর আমদানি–রপ্তানি ব্যবসা শুরু করে। তারা বাংলাদেশ থেকে মিঠা ও লোনা পানির বিভিন্ন ধরনের হিমায়িত মাছ, বাগদা চিংড়ি ও গলদা চিংড়ি নিয়ে যুক্তরাজ্য ও অন্যান্য দেশে বিক্রি করে। তারা এখন মাছসহ খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও গুদামজাতকরণে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী।

১৯৯১ সালে ইকবাল আহমেদ গড়ে তোলেন সিমার্ক পিএলসি। একই বছরে তিনি চিংড়ি প্রক্রিয়াকরণ কারখানা ও হিমাগার গড়ে তোলেন। এরপর বিভিন্ন দেশে প্রক্রিয়াজাত ও হিমায়িত খাদ্যপণ্য রপ্তানি শুরু করেন। তাঁর হাতে গড়া টাইগার, সি গোল্ড, লিলি, মি প্রণ, ইবকো প্রভৃতি প্রতিষ্ঠান এখন হিমায়িত মাছ ও অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করে। সব মিলিয়ে সিমার্ক গ্রুপের বার্ষিক টার্নওভার তথা মোট লেনদেনের পরিমাণ প্রায় ৪০ কোটি পাউন্ড, যা বাংলাদেশের প্রায় ৪ হাজার ৬৮০ কোটি টাকার সমান। তবে করোনাভাইরাস ও ব্রেক্সিটের প্রভাবে ব্যবসা কিছুটা কমেছে।

বেশ আগেই যুক্তরাজ্যের শীর্ষ ধনী তালিকায় নাম উঠেছে ইকবাল আহমেদের। রপ্তানিতে অবদান রাখার জন্য তিনি একাধিক স্বীকৃতিও পেয়েছেন। ১৯৯৮ সালে কুইন্স অ্যাওয়ার্ড পান। এ ছাড়া ২০০১–২০০৩ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের সামুদ্রিক মাছ রপ্তানিতে শীর্ষস্থান অর্জনের সুবাদেও রপ্তানি পদক পায় সিমার্ক।

অন্য অনেকের মতো ইকবাল আহমেদের ব্যবসায়ী হয়ে ওঠাও সহজ ছিল না। তিনি বলেন, ‘ব্যবসা সময়ে সময়ে কঠিন হয়ে উঠেছে, কিন্তু কখনো হাল ছাড়িনি। ওল্ডহ্যাম ও ম্যানচেস্টারের দোকানে দোকানে আর রেস্তোরাঁয় পণ্য বিক্রি করেছি। এখানে–ওখানে দরজায় দরজায় গিয়েছি। সফলতা অর্জনের পাশাপাশি বহু জায়গায় প্রত্যাখ্যাতও হতে হয়েছে।’

ইকবাল আহমেদের ব্যবসা ছড়িয়ে রয়েছে আরও নানা খাতে ও নানা দেশে। বাংলাদেশের চট্টগ্রামে তাঁর রয়েছে তিনটি কারখানা। এ ছাড়া দাতব্য কাজেও রয়েছে তাঁর বিশেষ আগ্রহ। সিলেটের নিজ গ্রামে গড়ে তুলেছেন স্কুল ও কলেজ। রোহিঙ্গা শিবিরে ত্রাণ কর্মসূচি চালাচ্ছে ইকবাল আহমেদের ফাউন্ডেশন। তিনি এনআরবি ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাকালীন চেয়ারম্যান ছিলেন, এখন পরিচালক।

বাংলাদেশের চিংড়ির রপ্তানি সম্ভাবনা সম্পর্কে জানতে চাইলে ইকবাল আহমেদ বলেন, ‘গত ১০ বছরে কোনো প্রবৃদ্ধি হয়নি। তবে মূল্যবৃদ্ধি পাওয়ায় গত বছরে আয় বেড়েছে, চিংড়ি রপ্তানি কিন্তু বাড়েনি। প্রায় ২০ বছর ধরে ভেনামি চিংড়ি উৎপাদন হচ্ছে। চীন, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, ভারত এ চিংড়ি উৎপাদন করছে, রপ্তানিতেও নেতৃত্ব দিচ্ছে তারা। পুরোপুরি বাণিজ্যিকভাবে ভেনামি চিংড়ির চাষ শুরু হলে রপ্তানি বছরে এক বিলিয়ন বা এক শ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে। বাংলাদেশের অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য সুবিধা জিএসপি থাকায় সহজেই আমরা বাজার ধরতে পারব। অনেক দেশের এ সুবিধা নেই, এতে তারা পিছিয়ে পড়বে।’

চিংড়ির বাজার সম্পর্কে ইকবাল আহমেদ বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে মাঝারি আকারের চিংড়ির চাহিদা বেশি। আগে চিংড়ি বড় সুপার মার্কেট ও হাইপার মার্কেটে বিক্রি হতো। এখন চিংড়ি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য হয়ে গেছে। ১৬-২০টি চিংড়ির ওজন ৪৫০ গ্রাম (১ পাউন্ড) হলে সেটাকে আন্তর্জাতিক মানের আকার বলে ধরা হয়। বাংলাদেশে চিংড়ি চাষে এখনো বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া অনুসরণ শুরু হয়নি। যেসব দেশ বিশ্ববাজারে নেতৃত্ব দিচ্ছে, তারা সবাই তা শুরু করেছে।’

ইকবাল আহমেদ আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে বড় আকারের চিংড়ি উৎপাদন হয়। অনেকে মনে করেন, বড় চিংড়ি মানেই বেশি দাম, আসলে সেই দিন আর নেই। এ জন্য এমন আকারের চিংড়ি উৎপাদন করতে হবে, যেটির চাহিদা আছে আন্তর্জাতিক বাজারে। কিন্তু আমাদের দেশে এটা হচ্ছে না। আমরা শুধু বাগদা চিংড়ি উৎপাদন করছি, যেটা প্রতি হেক্টরে ৩০০-৪০০ কেজি উৎপাদন হয়। এ কারণে আমরা অন্যান্য দেশের সঙ্গে রপ্তানি প্রতিযোগিতায় পারছি না।’

১৯৬৫ সালে যখন ইকবাল আহমেদের বয়স ৯ বছর, তখন তাঁর বাবা কাজের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমান যুক্তরাজ্যে। ফলে কম বয়সেই তাঁকে দেশে থাকা পুরো পরিবারের হাল ধরতে হয়। ১৯৭১ সালের অক্টোবরে মা ও ভাইবোনদের নিয়ে ইকবাল আহমেদও যুক্তরাজ্যে পাড়ি দেন। তখন ইকবালের বয়স ছিল ১৫ বছর। ওই সময় তাঁরাই ছিলেন ম্যানচেস্টারের ওল্ডহ্যামে একমাত্র বাংলাদেশি পরিবার।

আসছে জাতীয় কি-বোর্ড, বাংলা বানানের সফটওয়্যার ও ট্রান্সলেটর

আসছে জাতীয় কি-বোর্ড, বাংলা বানানের সফটওয়্যার ও ট্রান্সলেটর

আসছে জাতীয় কি-বোর্ড, বাংলা বানানের সফটওয়্যার ও ট্রান্সলেটর

প্রযুক্তিতে বাংলার ব্যবহার অনেক আগে শুরু হলেও তা ছিল বিচ্ছিন্ন আকারে। ব্যক্তি উদ্যোগে কিছু কাজ হলেও সরকারি উদ্যোগে বড় কিছু হয়নি বললেই চলে। দীর্ঘদিন ধরেই একটি জাতীয় কি-বোর্ড, বাংলা বানান পরীক্ষার সফটওয়্যার, বাংলা ওসিআর, বাংলা মেশিন ট্রান্সলেটরের অনুপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।

সরকার এই সমস্যা দূর করতে উদ্যোগ নিয়েছিল কয়েক বছর আগেই। এবার তা আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। সরকারিভাবে তৈরি হচ্ছে জাতীয় কি-বোর্ড, বাংলা বানানের সফটওয়্যার, ওসিআর ও মেশিন ট্রান্সলেটর।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের (আইসিটি) গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলা ভাষা সমৃদ্ধকরণ প্রকল্পে তৈরি হচ্ছে বাংলা ভাষা সফটওয়্যার প্যাকেজ। এরমধ্যেই থাকছে ওসিআর, স্পিচ টু টেক্সট অ্যান্ড টেক্সট টু স্পিচ সফটওয়্যার, জাতীয় কি-বোর্ড, বাংলা স্টাইল গাইড, বাংলা ফন্ট ইন্টারঅপারেবিলিটি ইঞ্জিন, বাংলা স্পেল অ্যান্ড গ্রামার চেকার, বাংলা মেশিন ট্রান্সলেটর ইত্যাদি।

জানা যায়, এসব সফটওয়্যার উন্মুক্ত থাকবে। সরকারি বা বেসরকারি কাজে বাংলা বানানের যে দুরবস্থা সেটাও দূর হবে এতে। উন্মুক্ত এই মাধ্যম ব্যবহার করে সবাই একই বানান রীতি অনুসরণ করতে পারবেন। উপযুক্ত শব্দ যাচাই করে নেওয়ার ফলে আরও অনেক ভুলও দূর করা সম্ভব হবে।

এ বিষয়ে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, আইসিটিতে বাংলাকে সমৃদ্ধ করতে আইসিটি বিভাগের গবেষণা ও উন্নয়নের বাংলা ভাষা সমৃদ্ধকরণ প্রকল্পের মাধ্যমে অপটিক্যাল ক্যারেকটার রিকগনাইজার (ওসিআর), টেক্সট টু স্পিচসহ ১৫টি টুল তৈরি করা হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আইসিটি বিভাগের অধীন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে। এই প্রকল্পের বরাদ্দ ১৫৯ কোটি টাকা। প্রকল্পের জন্য প্রশাসনিক আদেশ হয়েছে ২০১৭ সালে। প্রকল্প পরিচালক ওই বছরেরই এপ্রিলে নিয়োগ দেওয়া হলেও কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালের আগস্টে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র আরও জানায়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়কে (বুয়েট) এই প্রকল্পের কারিগরি পরামর্শক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সফটওয়্যার যাচাই-বাছাই ও পরামর্শ দেওয়ার দায়িত্বে থাকবে এই কমিটি। তারাই প্রকল্পর টিওআর (টার্মস অব রেফারেন্স) লেখার কাজ করেছেন। এছাড়া এই কাজের জন্য একটি ইসি কমিটিও রয়েছে। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ভাষাবিদসহ বিভিন্ন পর্যায়ের গুণীজনরা এতে জড়িত রয়েছেন। সফটওয়্যার নির্মাণ শেষ হলে ইসি তা পর্যালোচনা করে দেখবে।

জানা যায়, এই প্রকল্পের তিনটি টুল তৈরির কাজ পেয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান রিভ সিস্টেমস। প্রতিষ্ঠানটি স্ক্রিন রিডার, বাংলা স্পেল অ্যান্ড গ্রামার চেকার ও ওসিআর তৈরি করছে।

প্রতিষ্ঠানটির প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা রায়হান হোসেন জানান, তিনটির মধ্যে দুটির কাজ প্রায় শেষ। আরেকটা চলতি বছরের শেষ নাগাদ শেষ হবে। বাংলা স্পেল অ্যান্ড গ্রামার চেকার তৈরির কাজ প্রায় শেষ। শুধু ওয়েব এক্সটেনশনের কাজ বাকি। জুনের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে বলে তিনি আশাবাদী।

স্ক্রিন রিডারের বিষয়ে তিনি বলেন, করোনার কারণে কাজটি অনেক পরে শুরু হয়েছে। এখন এগিয়ে চলেছে। ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ সম্পন্ন হবে বলে তিনি জানান। ওসিআর-এর বিষয়ে রায়হান হোসেন বলেন, এটার কাজ জুনের মধ্যে শেষ হবে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এগুলো সংবেদনশীল কাজ। অনেক ডাটা সংগ্রহ করতে হচ্ছে। সেগুলোর নির্ভুলতা যাচাই করা, যন্ত্রের উপযুক্ত করা, বোধগম্য করা- অনেক কিছু জড়িত। বারবার পরীক্ষা করতে হচ্ছে।

প্রথম ‘জয় বাংলা’ স্লোগানটি যারা উচ্চারণ করেন

প্রথম ‘জয় বাংলা’ স্লোগানটি যারা উচ্চারণ করেন

প্রথম ‘জয় বাংলা’ স্লোগানটি যারা উচ্চারণ করেন

বাংলাদেশে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সরকারের এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। বলা হয়েছে- সকল সাংবিধানিক পদ, সরকারি অফিসের কর্মকর্তাদের বক্তব্যে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিতে হবে।

এ ছাড়া সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অ্যাসেম্বলি, সভা-সমাবেশ, সেমিনারে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান ব্যবহার করতে হবে। ২০২০ সনের ১০ই মার্চ হাইকোর্টের তরফে এক রায়ে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানকে বাংলাদেশের জাতীয় স্লোগান করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেয়া হয়। এরই আলোকে রোববার মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান হিসেবে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

উল্লেখ করা যায় যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন ও সশস্ত্র যুদ্ধে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান এক অনন্য ভূমিকা পালন করে। এই স্লোগান মুক্তিযুদ্ধে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করেছিল।

‘জয় বাংলা’ স্লোগান ছিল মুক্তিযুদ্ধকালীন বাঙালির প্রেরণার উৎস। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়- কখন, কীভাবে এই স্লোগানের উৎপত্তি হয়েছিল।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের নিউক্লিয়াস ও বিএলএফ’র প্রতিষ্ঠাতা সশস্ত্র যুদ্ধের প্রধান সংগঠক সিরাজুল আলম খান তার ‘স্বাধীনতা-সশস্ত্র সংগ্রাম এবং আগামীর বাংলাদেশ’ বইয়ে এর বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন।

তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৯৬৯ সনের ১৫ই সেপ্টেম্বর প্রথম এই স্লোগান ওঠে। সেদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের একটি সভা ছিল। মধুর ক্যান্টিনের সে সভায় ১৭ই মার্চ শিক্ষা দিবস যৌথভাবে পালনের জন্য কর্মসূচি প্রণয়ন নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা চলছিল। সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ আহূত সেই সভায় আলোচনার একপর্যায়ে তৎকালীন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের (জিন্নাহ হল যা বর্তমানে সূর্যসেন হল) প্রথম বর্ষের ছাত্র ও ছাত্রলীগ নেতা পরবর্তীকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আফতাব উদ্দিন আহমেদ ও দর্শন বিভাগের ছাত্র ও ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক চিশতি শাহ হেলালুর রহমান (৭১-এ শহীদ) প্রথম ‘জয় বাংলা’ স্লোগানটি উচ্চারণ করেন।

সভা চলাকালীন সময়েই অনেকটা আকস্মিকভাবে সবাইকে চমকে দিয়ে চিৎকার করে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেন এই দু’জন। সঙ্গে সঙ্গে সাত-আটজন কর্মী প্রতিধ্বনি করেন ‘জয় বাংলা’।

এ ছাড়া স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ তখন হাতে লেখা তিন পাতার একটি পত্রিকা প্রকাশ করে- যার নাম ছিল ‘জয় বাংলা’। ১৯৭০-এর ১৮ই জানুয়ারি পল্টনে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জনসভায় সিরাজুল আলম খান সর্বপ্রথম ‘জয় বাংলা’ স্লোগানটি উচ্চারণ করেন।

সিরাজুল আলম খান লিখেছেন, বঙ্গবন্ধুও এই স্লোগানটি পছন্দ করেছিলেন। ’৭০-এর ৭ই জুন ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে বিশাল এক জনসভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার ভাষণে প্রথম যুক্ত করেন এই স্লোগানটি।

তিনি আরও লিখেছেন, ‘জয় বাংলা’ স্লোগানের উৎপত্তি এবং জাতীয় স্লোগানে পরিণত হওয়ার এক ইতিহাস রয়েছে। নিউক্লিয়াস’র পক্ষ থেকে বিভিন্ন স্লোগান নির্ধারণের জন্য তিনটি সেলকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। এরমধ্যে একটি সেল ‘জিয়ে সিন্ধ বা জিও সিন্ধ’-এর মতো করে ‘জয় বাংলা’ শব্দটি কাজে লাগানো যায় কি-না সিরাজুল আলম খানের কাছে তা উপস্থাপন করে।

এই সেলটির মূল দায়িত্বে ছিলেন তৎকালীন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র আফতাব উদ্দিন আহমেদ। সুবিধা মতো সময়ে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানটি নিউক্লিয়াস’র বিবেচনায় আসে। নিউক্লিয়াস’র সদস্যদের প্রত্যেকের ভেটো দেয়ার সুযোগ ছিল। এই ভেটো প্রয়োগের কারণে প্রায় ৮-১০ দিন সময় লাগে ‘জয় বাংলা’কে অনুমোদন প্রদানের ক্ষেত্রে। পাশাপাশি বলে দেয়া হয়েছিল, স্লোগানটিকে সতর্কতার সঙ্গে ব্যবহার করার জন্য। যেন আর দশটা স্লোগানের মতো ‘জয় বাংলা’কে যত্রতত্র ব্যবহার না করা হয়।

‘তুমি কে? আমি কে? বাঙালি বাঙালি’, ‘তোমার আমার ঠিকানা, পদ্মা-মেঘনা-যমুনা’, ‘পিন্ডি না ঢাকা? ঢাকা-ঢাকা’। ‘ছয় দফা- ছয় দফা, না হলে এক-দফা’। ‘এগারো দফা-এগারো দফা, না হলে এক দফা’। ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো’।

এগুলো নিউক্লিয়াস সেলের মাধ্যমে স্লোগান হিসেবে গ্রহণ করা হয়, যা পরবর্তীতে জনপ্রিয়তা অর্জন করে। ‘জয় বাংলা’ স্লোগানের বিষয়ে ছাত্রলীগের দু’একজন এবং আওয়ামী লীগের সবাই (বঙ্গবন্ধু ছাড়া) ঘোর আপত্তি করতো। আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটিতেও এই স্লোগান নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়। কেউ কেউ জয় বাংলাকে নিয়ে ভারতঘেঁষা রাজনীতি করা হচ্ছে- এই যুক্তি তুলে ধরেন।

শুধু কমিটিতেই নয়, তাজউদ্দীন আহমদ ছাড়া আওয়ামী লীগের সকলেই ‘জয় বাংলা’র বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। এমনকি তারা এই স্লোগানের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর কাছে অভিযোগও করেন। এ ব্যাপারে বঙ্গবন্ধুর সরাসরি উত্তর ছিল- এ নিয়ে তোমাদের মাথা ঘামাবার কোনো দরকার নেই।

৪ঠা জানুয়ারি ১৯৭০। সেদিন ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্‌যাপনে সৈয়দ নজরুল ইসলাম ছিলেন প্রধান অতিথি। অনুষ্ঠানের শুরুতে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেয়া শুরু হলে দু’একজন আপত্তি করেন এবং এই স্লোগানটি বন্ধ করার জন্য সৈয়দ নজরুল ইসলামকে অনুরোধ জানান। ১৮ই জানুয়ারি ১৯৭০-এর পল্টনের জনসভার বক্তৃতার মঞ্চটি ছিল বিশেষভাবে নির্মিত।

মঞ্চের শামিয়ানায় আটকানো হার্ডবোর্ডের উপর লাগানো কাঠের খণ্ডে উজ্জ্বল লাল রঙয়ের দুটি শব্দ। এরমধ্যে ‘জয় বাংলা’ জ্বল জ্বল করছিল। দূর থেকেই তা দেখা যাচ্ছিল। এই সভায় সভাপতিত্ব করছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাজউদ্দীন আহমদের বক্তব্যের পর বঙ্গবন্ধু মঞ্চে বসা অবস্থায় বললেন- ‘সিরাজ স্লোগান দে’। সিরাজুল আলম খান এই মুহূর্তটির জন্য অপেক্ষা করছিলেন।

দ্রুত মাইকের সামনে গিয়ে আবেগমিশ্রিত কণ্ঠে বললেন- আসুন, সাত কোটি মানুষের পক্ষ হয়ে আমরা সকলকে জানিয়ে দেই, যার কণ্ঠে যতো জোর আছে আমরা একই সঙ্গে বলে উঠি ‘জয় বাংলা’। আজ থেকে ‘জয় বাংলা’কে আমাদের ভবিষ্যৎ আন্দোলনের স্লোগান হিসেবে ব্যবহার করা হবে। তখন লাখো কণ্ঠে আওয়াজ উঠলো- ‘জয় বাংলা’। এখানেই শেষ নয়।

১৯৭১ সনের ৭ই মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়েই তার অবিস্মরণীয় বক্তৃতা শেষ করেছিলেন। সিরাজুল আলম খান তার বইতে লিখেছেন- ‘জয় বাংলা’ কোনো দল বা ব্যক্তির স্লোগান নয়। এই স্লোগান ছিল বাঙালির আত্মপরিচয়ের স্লোগান। এটা নিছক কোনো স্লোগান নয়। এর পেছনে রয়েছে দীর্ঘ ইতিহাস। যে স্লোগান বাঙালি জাতিকে করেছিল ঐক্যবদ্ধ।

Sunday, February 20, 2022

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি জুতার রপ্তানি বেড়েছে ৭৩.২২ ভাগ

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি জুতার রপ্তানি বেড়েছে ৭৩.২২ ভাগ

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি জুতার রপ্তানি বেড়েছে ৭৩.২২ ভাগ

গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি জুতার রপ্তানি বেড়েছে ৭৩.২২ শতাংশ। এতে রপ্তানিকারকদের আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭৪.৫৮ মিলিয়ন ডলারে।

গত বছরের মোট আয়ের মধ্যে ২৪৯ মিলিয়ন ডলার এসেছে চামড়াজাত জুতা রপ্তানি করে, আর বাকিটা এসেছে অচামড়াজাত জুতা থেকে।

ওটেক্সা’র (অফিস অফ টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেল) তথ্য বলছে, ২০২০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জুতা রপ্তানি করে ১৫৮.৫১ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে বাংলাদেশ।

২০১৫ সাল থেকে বাংলাদেশের জুতা রপ্তানি ১০৪ মিলিয়ন ডলার থেকে ১৬১.৫০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭৪.৫৮ মিলিয়ন ডলারে ।

মার্কিন-চীন বাণিজ্য উত্তেজনা এবং একটি একক দেশের ওপর নির্ভরতা হ্রাস, এর অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে। যুক্তিসঙ্গত দাম এবং সফলভাবে তুলে ধরার মাধ্যমে বাংলাদেশের মান উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়েছে।

পিকার্ড বাংলাদেশ লিমিটেড নামের একটি রপ্তানিমুখী চামড়ার পণ্য প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, “মার্কিন সরকার তার একক দেশের আমদানি নির্ভরতা কমাচ্ছে। এছাড়া, বাণিজ্য দ্বন্দ্বের কারণে চীন থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করা পণ্যগুলো ক্রমবর্ধমান শুল্কের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”

ইসলাম বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যের ক্ষেত্রে পণ্য কেনার গন্তব্যের ওপর একটি ভূ-রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। উপরন্তু, মার্কিন খুচরা বিক্রেতারা শুল্কের পরিমাণ আরও বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন। ফলে তারা প্রচুর পরিমাণে অর্ডার বাংলাদেশে স্থানান্তরিত করেছে, যা আমাদের রপ্তানি বাড়াতে সাহায্য করেছে।

খুচরা বিক্রেতা ও ব্র্যান্ডের ক্রমবর্ধমান আগ্রহ ধরে রাখতে হবে রপ্তানিকারকদের। একই সাথে রপ্তানিকারকদের সুবিধার্থে সরকারকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।

লেদারেক্স ফুটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ নাজমুল হাসান বলেন, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার আমদানিকারকদেরকে চীনের ওপর নির্ভরতা কমাতে প্ররোচিত করছে, যাতে পণ্যের আমদানি গন্তব্য কোনো একটি দেশের ওপর নির্ভরশীলতা কম হয়।”

বাংলাদেশের লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস-প্রেসিডেন্ট নাজমুল বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য চীনের জিনজিয়াং অঞ্চল থেকে মার্কিন আমদানি নিষেধাজ্ঞা এবং শুল্ক যুদ্ধ ক্রেতা ও ব্র্যান্ডগুলোকে পণ্য ক্রয়ের গন্তব্য স্থানান্তর করতে উৎসাহিত করেছে।

এ ব্যবসায়ী নেতা বলেন, “আমরা মার্কিন বাজারের সিংহভাগ দখল করতে সক্ষম হবো, যদি আমরা পরিবেশ অনুকূলে, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারি এবং লিড টাইম কমাতে পারি।”

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন এ বিষয়ে একমত। তিনি বলেন, “দেশে বিদ্যমান কাঁচামাল বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শক্তি, আমরা সহজেই মার্কিন বাজারে নেতৃত্ব দিতে পারি।”

এ অর্থনীতিবিদ আরও বলেছেন, যদিও পরিবেশগত আর কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ এ সেক্টরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যা সুযোগগুলো কাজে লাগাতে বাধা সৃষ্টি করে৷ সরকারের উচিত পৃথক কোম্পানিগুলোকে ইফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (ইটিপি) স্থাপনের অনুমতি দেয়া। যদিও এটি একক কোম্পানির পক্ষে কঠিন, তবে তাদের ব্যবসার স্বার্থে এটি করা উচিত।

বাংলাদেশের ফুটওয়্যার পণ্যের ব্র্যান্ডিং দেশের রপ্তানি আয়ের বড় প্রবৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

মেট্রোপলিটন চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সভাপতি মো: সাইফুল ইসলাম বলেন, “আমেরিকান ক্রেতা এবং ব্র্যান্ডগুলো বাংলাদেশি পণ্য আর এসবের গুণমানের সাথে পরিচিত ছিল না, কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করায় রপ্তানিকারকদের তাদের সাথে সংযুক্ত করেছে।”

তিনি বলেন, “তারা আন্তর্জাতিক বাংলাদেশি চামড়ার পাদুকা এবং চামড়াজাত পণ্যের সোর্সিং শোয়ের আয়োজন করেছে।

দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন অধিকার গোষ্ঠীর সমালোচনার মুখে বায়ু ও পানি দূষণ রোধে রাজধানীর হাজারীবাগ থেকে ঢাকার সাভার উপজেলায় ট্যানারি স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।

২০১৭ সালের এপ্রিলে হাজারীবাগে কাঁচা চামড়া সরবরাহ বন্ধ করে দেয় সরকার এবং প্রায় ২০০টি ট্যানারিকে সাভার চামড়া শিল্প নগরীতে স্থানান্তর করতে বাধ্য করে।

অনেক ট্যানার সাভারে স্থানান্তরে ব্যর্থ হওয়ায় চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রপ্তানিতে উন্নতি হয়েছে।

চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানির বর্তমান অবস্থা

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি মেয়াদে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য থেকে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ২৯.৬৬ শতাংশ বেড়ে ৬৮২.৭৪ মিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা ছিল ৫২৭ মিলিয়ন ডলার।

চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি ৩৭.৪১ শতাংশ বেড়ে ১৮৩ মিলিয়ন এবং চামড়ার জুতা ২৫.৭৯ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪১৪.৫২ মিলিয়ন ডলারে।

ওয়ালটনের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহী দক্ষিণ সুদান

ওয়ালটনের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহী দক্ষিণ সুদান

ওয়ালটনের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহী দক্ষিণ সুদান

কারখানা পরিদর্শনে দুই মন্ত্রীসহ ৭ সদস্যের প্রতিনিধি

বাংলাদেশী ইলেকট্রনিক্স জায়ান্ট ওয়ালটনের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহ দেখিয়েছেন বাংলাদেশে সফররত দক্ষিণ সুদানের দুই মন্ত্রীসহ ৭ সদস্যের প্রতিনিধিদল।

বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২২) গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি’র কারখানা পরিদর্শনে এসে দক্ষিণ সুদানের প্রতিনিধিদল এই আগ্রহের কথা জানায়। সাত সদস্যের ওই প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন দেশটির পররাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক উপমন্ত্রী দেং দাউ দেং মালেক।

এ সময় তাঁর সফরসঙ্গী ছিলেন দ. সুদানের প্রতিরক্ষা উপমন্ত্রী জেনারেল চোল থন বালোক, ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র মহাপরিচালক লিও ওকাহি লোলে, জয়েন্ট বর্ডার ভেরিফিকেশন অ্যান্ড মনিটরিং মেকানিজমের মেজর জেনারেল মাউ মানাসে মালেক, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা মায়োম আলিয়ার, পররাষ্ট্র উপমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারি ডিং ডেং এবং প্রতিরক্ষা উপমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারি মনিলাক মনিজক রিয়াক।

অতিথিদের সঙ্গে আরো উপস্থিত ছিলেন ইথিওপিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশী রাষ্ট্রদূত মো. নজরুল ইসলাম, আফ্রিকায় নিযুক্ত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহা-পরিচালক মো. তরিকুল ইসলাম ও অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি রারেয়া বেগম, বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আব্দুল আলিম তরফদার ও মো. শামীম কামাল, লে. ক. মো. শাহরিয়ার মোর্শেদ প্রমূখ।

প্রতিনিধিদলের প্রধান দেং দাউ দেং মালেক বলেন, বিশ্ব বাজারে ওয়ালটন খুব সুপরিচিত। তাই ওয়ালটনের সঙ্গে ব্যবসায়িক ও বাণিজ্য সম্ভাবনার ক্ষেত্রগুলো খুঁজে বের করার লক্ষ্যে কারখানা পরিদর্শনের এই উদ্যোগ। পূর্ব-মধ্য আফ্রিকার দেশগুলোতে যেমন- ইথিওপিয়া, উগান্ডা, কঙ্গো, সুদান ও মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রের বাজারে প্রবেশদ্বার হিসেবে কাজ করবে দক্ষিণ সুদান। সেজন্য ওয়ালটনের মত বিশ্বের কয়েকটি বড় বড় প্রতিষ্ঠানকে দক্ষিণ সুদানের সঙ্গে ব্যবসায়িক ও বাণিজ্য সম্পর্ক স্থাপনের আহবান জানাচ্ছি। এক্ষেত্রে তাদেরকে প্রয়োজনীয় সব সহযোগিতা প্রদান করা হবে।

ইথিওপিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশী রাষ্ট্রদূত মো. নজরুল ইসলাম বলেন, দক্ষিণ সুদানের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদারকরণে কাজ করছে বাংলাদেশ। সেজন্য বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় বাণিজ্যিক ক্ষেত্রগুলো খুঁজে বেরা করতে দ. সুদানের প্রতিনিধিদলকে সহযোগিতা করা হচ্ছে। এরই প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের ফ্ল্যাগশিপ ইন্ডাস্ট্রি ওয়ালটন কারখানায় এই পরিদর্শন।

বৃহস্পতিবার বিকালে অতিথিরা কারখানা প্রাঙ্গণে পৌঁছলে তাদেরকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. আলমগীর আলম সরকার, ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের ডিএমডি লিয়াকত আলী, ওয়ালটন এইচআর বিভাগের প্রধান কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) এসএম শাহাদাত আলম।

অতিথিরা প্রথমে ওয়ালটনের বিশাল কর্মযজ্ঞের উপর নির্মিত ভিডিও ডক্যুমেন্টারি উপভোগ করেন। এরপর ওয়ালটনের সুসজ্জিত প্রোডাক্ট ডিসপ্লে সেন্টার ঘুরে দেখেন। পরে অতিথিরা ওয়ালটনের অত্যাধুনিক রেফ্রিজারেটর ম্যানুফেকচারিং ও কম্প্রেসর উৎপাদন কারখানা ঘুরে দেখেন।