নড়াইল: মৌচাষে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে নড়াইলের চাষীরা। প্রশিক্ষণ গ্রহণের মাধ্যমে মৌচাষ শুরু করায় তাদের লাভবান হওয়ার সুযোগ হয়েছে। তবে সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা পেলে তারা আরো বেশি লাভ করতে পারতো। সম্ভাবনাময় মৌচাষে সরকার একটু আন্তরিক হলেই কোটি টাকার মধু উৎপাদন হবে এমন ধারণা অনেকের।
নড়াইলের মাঠ জুড়ে চাষ হয়েছে সরিষা, কলাই, গুজি, ধনিয়া, কালিজিরাসহ বিভিন্ন ধরনের রবিশস্য ফসলের। এসব ফসল এখন ফুলে ফুলে ভরা। তাই বসে নেই মৌচাষীরা। ফসলের ক্ষেতের পাশে মৌমাছির বাক্স নিয়ে বসে পড়েছে। মৌমাছিরা গুন-গুন শব্দে ক্ষেত থেকে মধু সংগ্রহ করছে। আর এ মধু সংগ্রহের পর চাষীরা বাজারে বিক্রি করছে। জেলায় প্রায় তিনশ’ বেকার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে মৌচাষের মাধ্যমে।
লোহাগড়া উপজেলার শামুখখোলা গ্রামের মৌচাষি জাহিদুর রহমান জানান, বছরের ৬ মাস এ পেশাটি ভালোভাবে চললেও ফুলের অভাবে ৬ মাস অলস সময় কাটাতে হয়। আর এ সময়ে মৌমাছিকে বাঁচিয়ে রাখতে চিনি খাওয়াতে গিয়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়। নওয়াগ্রামের সালাম জানান, মধুর ন্যায্য মূল্য ও ঋণ সহযোগিতা পেলে এ জেলায় কোটি টাকার মধু বিক্রি করা সম্ভব হবে।
নলদি গ্রামের জলিল জানান, ভালো এক কেজি মধু বিক্রি হয় তিন থেকে সাড়ে তিনশ’ টাকা। প্রতি মৌসুমে একজন চাষীর দশ থেকে পনের লাখ টাকার মধু উৎপাদন করা সম্ভব।
সদর উপজেলার সিমানন্দপুর গ্রামের আছাদুজ্জামান জানান, ফসলের ক্ষেতে উৎপাদিত খাঁটি মধু পাওয়া যায় তাই এ মধুর চাহিদা রয়েছে অনেক।
ফেদি গ্রামের মনিরুল ইসলাম জানান, নির্ভেজাল মধু কিনে দেশের বাইরে এবং বিভিন্ন স্থানে কর্মরত স্বজনদের কাছে পাঠানো হয়।
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) নড়াইলের উপ-পরিচালক মো. ওমর ফারুক ঢালী মৌচাষীদের প্রশিক্ষণ এবং ঋণ কার্যক্রমসহ সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে বলেন, এ অর্থ বছরে মৌচাষীদের জন্য তিনটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচির নেয়া হয়েছে। মৌচাষ লাভজনক পেশা হওয়ায় অনেকে এ পেশায় আগ্রহী হচ্ছেন বলেও জানান বিসিকের এই কর্মকর্তা।
No comments:
Post a Comment