Monday, June 23, 2014

তেল তৈরি করতে না পেরে ঝালকাঠির পাম চাষীরা হতাশ

ঝালকাঠি: ঝালকাঠি জেলায় পাম চাষ সম্প্রসারণ দু’বছর ধরে থমকে গেছে। জেলায় ২০০৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ২০০ একর জমিতে পামের আবাদ হয়েছে। পামের ফল পেঁকে ঝড়ে যাচ্ছে। কিন্তু কৃষকরা এই ফল প্রক্রিয়াজাত করে এর তেল বের করতে পারছে না। তেল বের করতে না পারায় পাম ফল এখন ইঁদুরের খাদ্যে পরিণত হয়েছে।

এ নিয়ে অনেক পাম চাষীর মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। আবার কিছু কিছু চাষী উদ্যম না হারিয়ে পাম থেকে তেল বের করার জন্য নানামুখী চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। একটি বাড়ির বসত ভিটায় ৪টি পাম গাছ থাকলে ৬ সদস্যের একটি পরিবারের বছরের ভোজ্য তেলের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব বলে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

কৃষি বিভাগ বলেছে অচিরেই কৃষি গবেষণায় পাম ফলের প্রক্রিয়াজাত করণের মেশিন তৈরি করে কৃষক পর্যায় সরবরাহ করলে পাম চাষ যে গতিতে সম্প্রসারিত হচ্ছিল তার ধারাবাহিকতা বজায় রাখা সম্ভব হবে। পাম চাষ সম্প্রসারণ হলে দেশে কোলস্ট্রেরলমুক্ত ভোজ্য তেলের চাহিদা পূরণ হবে। সরকারের বৈদেশিক মূদ্রা সাশ্রয় হবে।

ঝালকাঠি জেলার সদর উপজেলার বাদলকাঠি, ধারাখানা, বেতলোচ, গাবখান, রামচন্দ্রপুরসহ রাজাপুর উপজেলার শুক্তাগড় ইউনিয়ন জুড়ে জেলার ৪টি উপজেলায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পামের চাষ হয়েছে। বিগত ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে সেনা বাহিনীর পরামর্শে পাম চাষ সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেয় কৃষি বিভাগ। ওই বছরই জেলার রাজাপুর উপজেলার শুক্তাগড় ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ তার এক একর জমিতে পাম চাষের মাধ্যমে রাজাপুর উপজেলায় পামের যাত্রা শুরু করে হয় । প্রক্রিয়াজাত করতে না পাড়ায় তিনি পামের আবাদ বাড়াননি।

সদর উপজেলার বাদলকাঠি গ্রামের ইউনুচ আলী খান এক বিঘা জমিতে পামের চাষ করেছেন, দু’বছর ধরে পাম ফল প্রক্রিয়া জাত করতে না পেরে তার মধ্যে হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। তিনি জানান, এই ফল দিয়ে কিভাবে তেল বের করা যায় তার সঠিক নির্দেশনা দিচ্ছে না কৃষি বিভাগ।

ঝালকাঠি সদর উপজেলার বেতলোচ গ্রামের মোস্তফা কামাল জানান, তিনি এক একর জমিতে পামের চাষ করেছেন। পাম গাছেও দু’বছর ধরে ফলন আসা শুরু করেছে। তিনি বিভিন্নভাবে ছোট আকারের প্রেসার মেশিন দিয়ে পামের পাকা ফল থেকে তেল বেড় করা শুরু করেছেন। ইতোমধ্যে তার পরিবারের রান্নার কাজে এ তেল ব্যবহার করেছেন।

স্থানীয় কৃষি বিভাগের সাথে দক্ষিণ বাংলা কৃষি উন্নয়ন সংস্থা নামে একটি প্রতিষ্ঠান পাম চাষ সম্প্রসারণে কাজ করছে। এই সংস্থার নির্বাহী পরিচালক গোলাম কিবরিয়া পান্নু জানান, পামের তেল কোলস্টেরলমুক্ত এবং মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য উপযোগী।

ঝালকাঠি সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা চিন্ময় রায় জানান, কৃষি বিভাগের বিজ্ঞানীদের পাম চাষ প্রক্রিয়াজাতকরণের লক্ষ্যে কৃষক পর্যায় ব্যবহার করার মতো মেশিন তৈরি করে সরবরাহ করা হলে পাম চাষা সম্প্রসারিত হবে।

No comments:

Post a Comment