Monday, June 23, 2014

রাঙ্গামাটিতে রেশম চাষে মহিলাদের অভাবনীয় সাফল্য

রাঙ্গামাটি: রাঙ্গামাটির পার্বত্য জেলার কাউখালী উপজেলায় রেশম চাষে অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছে উপজেলার মহিলা রেশম চাষীরা। উপজেলার প্রায় ঘরে ঘরে বিশেষ করে মহিলারা রেশম চাষের প্রতি আগ্রহী হয়েছেন। কাপ্তাইয়ের আঞ্চলিক রেশম গবেষণা কেন্দ্রে সার্বিক সহযোগিতা ও পরামর্শ নিয়ে স্থানীয় মহিলারা এই রেশম চাষে সফলতা পেয়েছেন। দৈনন্দিন পারিবারিক কাজ-কর্ম করার পাশাপাশি মহিলারা বাড়ির আঙ্গীনায় কেউ কেউ বাড়ির ঘরের মধ্যে রেশম চাষ করছেন । আর এতে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছে আঞ্চলিক রেশম গবেষণা কেন্দ্র। 

স্থানীয় বেতছড়ির বাসিন্দা ফেরদৌসী বেগম জানান, তিনি গত প্রায় ২০ বছর আগে প্রথম রেশম চাষ শুরু করেন। এতে তিনি সাফল্য পান। পরে তিনি তার মেয়ে ফরিদা পারভিনকেও রেশম চাষে উদ্বুদ্ধ করেন। ফরিদা গত ৮ বছর ধরে এলাকায় রেশম চাষ করছেন। ফরিদা তার ছোট বোন শাহানা আক্তারসহ এলাকায় শতাধিক নারীকে রেশম চাষে উদ্বুদ্ধ করেন। বর্তমানে কাউখালীতে চার শতাধিক নারী রেশম চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন বলে রেশম চাষী শিরিনা বেগম, রোকসানা বেগম, বৈশাখী চাকমা, হাসিনা বেগম, লায়লা বেগম, গোলাপী বেগম, কুলসুমা বেগম, সুখী চাকমাসহ অনেক নারী জানান। এদের একজন জানান, তিনি তার এক ছেলে ও এক মেয়ের লেখাপড়ার খরচ যোগাচ্ছেন রেশম চাষ করে। শিরিনা বেগম জানান, তার কাছে বর্তমানে ৫০ হাজার টাকা জমা আছে। যা তিনি রেশম চাষ থেকে আয় করেছেন। এ রকম প্রায় প্রতিটি নারী তাদের সফলতার কথা জানান। 

ফরিদা পারভীন বলেন, ‘আঞ্চলিক রেশম গবেষণা কেন্দ্রের সিনিয়র রিসার্স অফিসার ও প্রকল্প পরিচালক কামনাশীষ দাশ আমাদের রেশম চাষে উদ্বুদ্ধ করেন। রেশম গবেষণা কেন্দ্র থেকে আমাদের বিনামূল্যে রেশম পোকা সরবরাহ করা হয়। রেশম চাষে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। নিয়মিত পরামর্শ ও দেখভাল করা হয়। যে কোন প্রয়োজনে খবর জানানোর সাথে সাথে আমাদের সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসেন। আমরা কিভাবে অল্প চাষে এবং স্বল্প পরিসরে অধিক মুনাফা পেতে পারি সে ব্যাপারে পরামর্শ দেন’। উল্লেখ্য, চাষীদের প্রশিক্ষণও দেয়া হয়। বেড়ছড়িতে গত ২৪ মে থেকে ১২ জুন পর্যন্ত ‘বয়স্ক পুল পালন’ বিষয়ক রেশম চাষীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। অনেক নারী প্রশিক্ষণ নিয়ে এখন রেশম চাষ করছেন। কাউখালীতে আদর্শ রেশম পল্লী গড়ে তোলা হয়েছে। 

রেশম চাষীরা বলেন, কাউখালী উপকেন্দ্রে যদি সরকারিভাবে ‘চাকী পলু পালন কেন্দ্র’ গড়ে তোলা যায় তা হলে এলাকায় আরো বেশি সংখ্যক নারী রেশম চাষে এগিয়ে আসবে। পাশাপাশি চাষীরা আরো বেশি লাভবান হবে। 

আঞ্চলিক রেশম গবেষণা কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক কামনাশীষ দাশ বলেন, কাউখালীতে অনেক মহিলা রেশম চাষে আগ্রহী হয়েছেন। তারা এলাকায় চাকী পলু পালন কেন্দ্র গড়ে তোলার দাবী জানিয়েছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন মহলে অবহিত করা হয়েছে। 

No comments:

Post a Comment